।। প্রথম কলকাতা ।।
IAS: বাবা বাস ড্রাইভার দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেই মেয়ে আজ IAS অফিসার। ছোটবেলা থেকেই অভাব নিত্যসঙ্গী কিন্তু ওই জেদের কাছে কোন বাধাই বাধা না। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। পরিবার চেয়েছিল মেয়ের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে। কিন্তু এদিকে মেয়ে যে বিয়ে করতে নারাজ। বাস ড্রাইভারের মেয়ে তাতে কী! জীবনে বড় তাঁকে হতেই হবে অভাবী ঘরের মেয়ের ইচ্ছেশক্তির কাছে শেষে হার মানতে বাধ্য হয় দারিদ্র। “আমি এখন আইএএস অফিসার ” মেয়ের ফোন পেয়ে সেদিন বাসের স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে কেঁদে ফেলেছিলেন বাবা। এই মেয়ের লড়াইয়ের কাহিনী শুনলে চোখে জল আসবে আপনারও।
টানাটানির সংসারে বাসচালক বাবা ভাবতেন, কী ভাবে সারা মাসের সংসারের খরচ জোগাবেন। মেয়েকে পড়ানোর ইচ্ছে ছিল। সব বাবা মায়ের ইচ্ছে থাকে ছেলে মেয়ে বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখুক। কিন্তু সব চাওয়া কি আর পূরণ হয়? কিন্তু শুধু স্বপ্ন পাত্রী অবশ্য ছিলেন না প্রীতি হুডা কী ভাবে তাকে সত্যি করবেন তার পথ খুঁজে বের করেন নিজেই। প্রীতিদের আদি বাড়ি হরিয়ানার বাহাদুরগড়ে। বাবা কাজের সূত্রে তিনিও থাকতেন দিল্লিতে যে মেয়ের স্কুলের পাঠ চুকলেই বিয়ে হয়ে একেবারে পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছিল। সেই মেয়ের মনের জোরে পিএইচডি শেষ করেছেন
আজ তিনি আইএএস অফিসার প্রীতি হুডা।
একদিকে বাড়িতে বিয়ের চাপ। সংসারে দুবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে বাবা। কিন্তু লেখাপড়া করতে ভালো লাগত প্রীতির। সেই লড়াইয়ের দিনগুলো বলতে গেলে আজও যেন তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৭৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন বিয়ের হাত থেকে বাঁচতে বারো ক্লাসে করলেন আরও ভালো ফল। ৮৭ শতাংশ নম্বর পেল প্রীতি। এরপরেই দিল্লির লক্ষ্মীবাঈ কলেজে ভর্তি হলেন বিষয় ছিল হিন্দি। স্নাতক পরীক্ষার ফল হল খুব ভালো
এবার এগিয়ে আসছেন বাবা নুন আনতে পান্তা ফুরয় অভাবের এই সংসারে মেয়েকে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে বললেন স্নাতকোত্তর শেষ করে জেএনইউ-তে পিএইচডি-র পাশাপাশি চলত ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি। তবে প্রথমবার ইউপিএসসি পাশ করতে না পেরেও হাল ছাড়েননি। দ্বিতীয় বারে স্বপ্নপূরণ। ২০১৭ সালের ইউপিএসসি-তে প্রীতির সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ছিল ২৮৮।
যে বাবা একটা সময় মেয়ের পডা়শোনা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন, সেই বাবাই মেয়ের ফোন পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলে। ইউপিএসসির রেজাল্ট দেখে বাবাকে ফোন করেন প্রীতি। বাবা তখন বাস চালাচ্ছেন। ফোনেই মেয়ে বলে বাবা, আমি এখন আইএএস অফিসার। কিছু সময় চুপ থাকার পর, ফোনের ওপারে আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন প্রীতির বাবা।স্বপ্ন দেখলে থেমে থাকতে নেই। তাকে সত্যি করার জন্য লড়াই করতে হয়। জীবন যে একটাই। বিশ্বাস করেন প্রীতির মত মেয়েরা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম