।। প্রথম কলকাতা ।।
কাতারে শুরু হয়ে গেছে ফুটবলের মহারণ। বিশ্বকাপ জ্বরে কাবু গোটা বিশ্ব। প্রিয় দল ও প্রিয় তারকার সমর্থনে গলা ফাটাচ্ছেন সমর্থকরা। তবে এবারের বিশ্বকাপে সবথেকে বড় অঘটনটা ঘটিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। অপ্রত্যাশিতভাবে বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দিয়েছে। অভিযানের শুরুতেই লিওনেল মেসির দলের এই পারফরম্যান্স নিরাশ করেছে সমর্থকদের। আর আর্জেন্টিনার হারে আরও সতর্ক হয়ে গেছে ব্রাজিল।
বর্তমানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল তারা, বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদারও। ব্রাজিল দলকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সাম্বা ঝড় দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বিশ্ব ফুটবল। তবে সমর্থকরা তো দূর কি বাত, ব্রাজিলের অনুশীলের নাগাল পাচ্ছে না সংবাদমাধ্যমও। এর থেকে অনুমান করা যায় নিজেদের স্ট্র্যাটেজি ও প্রথম একাদশ গোপন রাখতে চাইছেন ব্রাজিল কোচ তিতে। তবে আর্জেন্টিনার হার আরও বেশি সতর্ক করে দিয়েছে সেলকাওদের। এদিন টিম হোটেলে আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখেন তিতে সহ গোটা ব্রাজিল দল। এরপরই ব্রাজিল কোচ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে সোজা চলে যান প্র্যাকটিসে।
কড়া নিরাপত্তায় নিজেদের ঝালিয়ে নিলেন নেইমার-আলভেসরা। অনুশীলনে রইল গোপনীয়তা। তবে ফুটবল বিশারদরা মনে করছেন ব্রাজিল দলের কৌশল ঠিক করার চেয়ে প্রথম একাদশ বেছে নেওয়াটা কঠিন কাজ তিতের কাছে। আক্রমণে কাকে রাখবেন ব্রাজিল কোচ ফ্রেড নাকি ভিনিসিয়াস জুনিয়র? যা নিয়ে ধন্ধে রয়েছেন ব্রাজিল সমর্থকরাও।
তবে ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিরাচরিত ধারাতেই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে দল নামাবেন তিতে। যে দলে আক্রমণেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে ভিনিসিয়াস জুনিয়র দলে আসায় নেইমারের স্থান পরিবর্তন হয়েছে। নেইমার আক্রমণে একটু নীচে নেমে খেলবেন। নেইমার ও রিচার্লিসনের পাশে খেলবেন রাফিনহা ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র। মাঝমাঠ সামলাবেন ফ্রেড ও লুকাস পাকেতা। রক্ষণ আটকাবেন থিয়াগো সিলভা ও মার্কিনিওস। তাদের দুই পাশে থাকবেন দানিলো ও আলেক্স সান্দ্রো। গোলে থাকবেন আলিসন। আর্জেন্টিনা হারের পর নেইমারকে সতর্ক করেছেন রোমারিও। কোন সমালোচনায় কান না দিয়ে নিজের খেলায় ফোকাস করার বার্তা দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রাক্তন তারকা। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের নায়ক রোমারিও বার্তা বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে নেইমারদের তা বলাই যায়।
বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ব্রাজিল। পাঁচ-পাঁচবার ট্রফি ঘরে তুলেছে তারা। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে সেলকাওরা। তার মধ্যে ১৯৯৪ ও ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় সাম্বাদের দেশ। ১৯৯৮ সালে জিদানের ফ্রান্সের কাছে হেরে রানার্স হয় ব্রাজিল। আর এখানেই শেষ হয়ে যায় সেলকাওদের স্বপ্নের দৌড়। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২০ বছর। বিশ্বকাপ জয় করতে পারেনি ব্রাজিল। নিজেদের দেশে ২০১৪ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছালেও জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে লজ্জার নজির গড়ে ব্রাজিল। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয় বিশ্বকাপ থেকে। তবে এবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চাইছেন নেইমার-ভিনিসিয়াস জুনিয়ররা। তবে কাতারের মরুভূমিতে সাম্বা ঝড় উঠবে নাকি বিগত বছরের মতো শেষ হয়ে যাবে সেলকাওদের স্বপ্ন, তা সময় বলবে।