।। প্রথম কলকাতা ।।
দফায় দফায় অবরোধ, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। তাই ঘুরপথে গেম খেলছে বিএনপি! ভোটের ময়দানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জোরকদমে লড়বে তৃণমূল-বিএনপি। নিতে শুরু করে দিয়েছে মনোনয়নপত্র। আচ্ছা, এই বিএনপি আর তৃণমূল বিএনপি কি আলাদা দুটো দল? নাকি একটাই? তলে তলে একই প্ল্যানিং চলেছে না তো? অথচ বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই ভোট মানছে না। এখনো পর্যন্ত জারি রেখেছে অবরোধ কর্মসূচি। এই বিএনপির প্রচুর নেতা কিন্তু বহুদিন আগেই যোগ দিয়েছেন তৃণমূল বিএনপিতে। তাহলে কি নির্বাচনে লড়বে সেই বিএনপি আর আওয়ামী লীগ? একটু অন্যরকম ভাবে।
বাংলাদেশে যদি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলা হয়, তাহলে একদম প্রথম সারিতে রয়েছে বিএনপির নাম। তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে নামের মিল থাকলেও দল দুটো আলাদা। কিন্তু বিএনপি’র সাবেক, বহিষ্কৃত এবং নিষ্ক্রিয় এক ঝাঁক নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন এই তৃণমূল-বিএনপিতে। যার মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত আলোচিত থেকে শুরু করে পরিচিত মুখের মধ্যে রয়েছে শমসের মবিন চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকারসহ বেশ কয়েকজন নেতা। প্রশ্নটা এখানেই, তাহলে কি ভাঙন ধরেছে বিএনপিতে? যদিও এই প্রসঙ্গে বিএনপি কখনই স্পষ্ট করে মুখ খোলেনি।
নির্বাচনের তফসিল কঠোর ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এই দল। অপরদিকে তৃণমূল-বিএনপি ভোটে দাঁড়াতে এক পায়ে খাড়া। আপনাদের মনে হতেই পারে, এই দুটি দলই যখন আলাদা, তাহলে দুটি দলকে জড়িয়ে কেন কথা বলা হচ্ছে? আসলে খটকাটা অন্য জায়গায়। একটা সময় বিএনপি’র বিকল্প হিসেবে এই তৃণমূল বিএনপিকে দাঁড় করানোর জোর তৎপরতা দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। বিএনপি কিন্তু প্রথম থেকেই বলে এসেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে তারা সেখানে অংশগ্রহণ করবে না। অথচ নির্বাচনকে হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। তাই নতুন করে কৌশল আটে ক্ষমতাসীনেরা। এমনটাই দাবি বহু সমালোচকদের। বিএনপি থেকে বেরিয়ে যাওয়া এক দল পরিচিত মুখকে সামনে রেখে নতুন জোট গঠনের চেষ্টা চলে। যেখানে অনেকে জড়িয়ে ফেলেন তৃণমূল-বিএনপির নাম। এই তো কয়েক মাস আগে, তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিল ছিল। যেখানে বিএনপি’র বর্তমানের কোনো পরিচিত মুখকে না দেখা গেলেও, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এরকম প্রায় কুড়িটি নিবন্ধহীন রাজনৈতিক দলের নেতারা শুভেচ্ছা জানিয়েছিল তৃণমূল বিএনপিকে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টানা দু’ঘণ্টা বৈঠক করেছেন তৃণমূল বিএনপি নেতারা। সেখানে কি আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে কিন্তু কেউ মুখ খোলেনি। এই দল কখনোই নির্বাচন বয়কট করেনি, বরং সবসময়ের জন্য সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়েছে। কখনোই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন অবরোধ কিংবা হরতালে সোচ্চারও হয়নি। অথচ এই তৃণমূল বিএনপি’র সঙ্গে বিএনপির আদর্শগত কিছুটা হলেও মিল রয়েছে।
ওদিকে আবার দেশটার জাতীয় পার্টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করতে শুরু করেছে। তবে নির্বাচন নিয়ে কোন ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখনও সংলাপে আশাবাদী। বিএনপি কিন্তু হাল ছাড়েনি, নতুন করে আবার ষষ্ঠ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে। ধরে নেওয়া যাই, বিএনপি এখনও তাদের মত পাল্টায়নি। আর যদিও বা মত পাল্টায়, নির্বাচনে ফিরে আসতে কোন অসুবিধা নেই। বিষয়টা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
তাই বলা যেতেই পারে, বাংলাদেশের ভোটের ময়দান এখন গরম। নির্বাচনে হতে চলেছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথম থেকে যে আশঙ্কাটা করা হচ্ছিল, হয়ত নির্বাচন একপেশে হয়ে যাবে, এখন ভোটের হাওয়া বলছে, তেমনটা হবে না। আপনার কি মনে হয়, শেষমেষ বিএনপি কি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? নাকি আরো সহজ করে দেবে আওয়ামী লীগের ভোটে জেতার রাস্তা?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম