।। প্রথম কলকাতা ।।
আবার ইতিহাস রচনার পথে ভারত। সফল ভাবে পিএসএসভি রকেটে মহাকাশে পাড়ি দিল ভারতের প্রথম সৌরযান আদিত্য এল১। গর্বের এই ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছেন এক ঝাঁক বাঙালি বিজ্ঞানী। শনিবার সকাল ১১ টা ৫০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পিএসএলভি-৫৭ রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে ভারতের এই সৌরযান। এরপর মহাকাশে পিএসএলভি রকেটের থেকে আলাদা হয় আদিত্য এল১ স্যাটেলাইটটি। এখন এটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে। তারপর সূর্যের দিকে ছুটতে শুরু করবে।এই সফল উৎক্ষেপণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন কোন কোন বাঙালি বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ?
শুক্রবারই নদিয়ার হরিণঘাটা থেকে শ্রীহরিকোটায় চলে গিয়েছিলেন আইসার কলকাতার ‘সেন্টার অব এক্সসেলেন্স ইন স্পেস সায়েন্স, ইন্ডিয়া’-র বিভাগীয় প্রধান দিব্যেন্দু নন্দী। আদিত্যর সাতটি প্রধান যন্ত্রের অন্যতম ‘সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ’ সুট – এর নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। সেই টেলিস্কোপের কিছু নকশাও তৈরি হয়েছে আইসারের গবেষণাগারেই।সূর্যের থেকে ধেয়ে আসা অতিবেগুনি রশ্মির মাধ্যমে ছবি ফুটিয়ে তোলাই তার মূল কাজ। সূর্যের গায়ে ছড়ানো সৌরকলঙ্ক পর্যবেক্ষণ করবে এই টেলিস্কোপ। এছাড়াও পৃথিবীর তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলা সৌরঝড়ের মেজাজ-মর্জির হদিসও দেবে সে।
চন্দ্রযান ৩-এর সফল অভিযানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বীরভূমের সিউড়ি ১ ব্লকের রায়পুরের বাসিন্দা সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও মল্লারপুরের বিজয় দাই। দু’জনেই যুক্ত আছেন আদিত্যের উৎক্ষেপণের সঙ্গেও। চন্দ্রযান ৩-এর মতো সৌরযানের কাজেও যুক্ত রয়েছেন কোচবিহারের পিনাকীরঞ্জন সরকার। পিনাকীরঞ্জনের টিমের কাজ সৌরযানকে তার কক্ষপথ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। তেমনই পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা কৌশিক মণ্ডল এখন রয়েছেন তিরুঅনন্তপুরমে ইসরোর কেন্দ্রে। যে রকেটে সৌরযান সূর্যের দিকে যাচ্ছে, তার পুরো যাত্রাপথ নজরে রাখছে কৌশিক ও সঙ্গীরা।
খড়্গপুর আইআইটি থেকে এম টেক করে ২০১৮ সাল থেকে ইসরোয় রয়েছেন রানিগঞ্জের সানি মিত্র। আদিত্যের ‘বিকাশ’ ইঞ্জিনের দেখভালের জন্য উদয়াস্ত যাঁরা পরিশ্রম করেছেন,তিনি সেই দলের সদস্য। দেড় বছর ধরে এ জন্য একটানা কাজ করেছেন তাঁরা। সব কিছু ঠিকঠাক চললে পৃথিবী থেকে সরাসরি সূর্যের দিকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে শূন্যস্থানে পাক খেতে শুরু করবে আদিত্য।পাক খেতে-খেতেই সে নজরদারি চালাবে সূর্যের ওপরে।চাঁদের কক্ষপথের বাইরে থাকায় গ্রহণের ছায়াও তার নজর আড়াল করতে পারবে না।
সৌরযান প্রথমে পৃথিবীর চারদিকে পাক খাবে। সেখান থেকে তাকে ‘এল ওয়ান’ কক্ষপথের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছলে আর এক বার ঠেলা দিয়ে তাকে চূড়ান্ত কক্ষপথে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এই দুটো খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। তা সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে বেশ কিছুদিন। সেই সব কাজ যাতে সফলভাবে আদিত্য করে যেতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক নজর রেখে চলবেন এই বিজ্ঞানীরা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম