।। প্রথম কলকাতা ।।
India Bangladesh: বাইডেন মোদি বৈঠকের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে বাংলাদেশ। বড় প্রশ্ন, বাংলাদেশকে দেওয়া কথা রাখবে কি ভারত? বন্ধু বাংলাদেশকে নিয়ে বড় চিন্তা ভারতের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রকে ঠিক কি বোঝাতে চাইবে ভারত? ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ইস্যু, কি কি উঠে আসবে আলোচনায়? মোদির ওয়াশিংটন সফরের উপর কতটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের নির্বাচনী গতিপ্রকৃতি? অনধিকার চর্চা নয়, প্রতিবেশীদেরকে অধিক গুরুত্ব দেয় ভারত। এবারেও দেবে প্রমাণ। মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর বাংলাদেশের জন্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে তা নিশ্চয়ই নতুন করে বুঝিয়ে দেওয়ার দরকার পড়বে না। দিল্লি ও ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, অধীর আগ্রহে এই সফরের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ।
ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দৃঢ়, গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ। তাই ঢাকা চাইছে বাংলাদেশ এর নির্বাচন ‘সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’ করে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, যা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি এই মুহূর্তে সরগরম, সেই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানিয়ে রাখি, যুক্তরাষ্ট্রের এই নয়া ফরমান নিয়ে ভারত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল পরস্পরের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছে। বাংলাদেশকে এই বিষয়ে আশ্বস্তও করা হয়েছে যে আসন্ন সফরে এই নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি অবশ্যই মত বিনিময় করবেন। যুক্তরাষ্ট্র সফর চলাকালে প্রধানমন্ত্রী মোদি সর্বোচ্চ স্তরে অবশ্যই বিষয়টি উত্থাপন করবেন। আর, কথা দিলে কথা রাখে ভারত। তাছাড়া, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রতিটি বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিবেশীদের নিয়ে আলোচনা করেন। প্রতিবেশীদের নিয়ে দুই নেতারই আগ্রহ যথেষ্ট। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইস্যু যে এবার অবশ্যই বেশি গুরুত্ব পাবে সেটা কিন্তু বলতেই হচ্ছে তাই, মোদির এই সফরের দিকে বাংলাদেশের দৃষ্টি এতো স্থির।
না, দুই স্বাধীন সার্বভৌম দেশের পারস্পরিক মতবিনিময়ে তৃতীয় দেশ হিসেবে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই। সেই নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যা কিছু হচ্ছে, তা ওই দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই মনে করে ভারত। তাই, নতুন ভিসা নীতি বা নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রসঙ্গে ভারত কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্যও করছে না। ভারত বারবার বলেছে, বাংলাদেশের মানুষ কাকে ভোট দেবে, কোন দলকে সমর্থন করবে, তা তাঁদের বিষয়। এ বিষয়ে ভারত অনধিকার চর্চা করে না, করবেও না। কিন্তু, চাইলেও সব ঘটনা থেকে চোখ ফিরিয়ে থাকা যায় না। বুঝতে হবে, আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত স্বাভাবিক কারণেই আগ্রহী।তা ছাড়া ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সুস্থিতির প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র যতটা উদ্বিগ্ন, ভারতও ততটাই এবং সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের গুরুত্ব যে অসীম তা বুঝিয়ে দিতে চায় ভারত।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সংগত কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদি যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চান আঞ্চলিক স্বার্থে শেখ হাসিনার ক্ষমতাসীন থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কতটা প্রয়োজন এবং এর অর্থ কী। তাছাড়াও বোঝাবেন, এমন কিছু করা উচিত হবে না, যাতে আঞ্চলিক অপশক্তি উৎসাহ পায়। আর, ভারতের দ্বিতীয় চিন্তা চীনকে নিয়ে। যাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও চিন্তিত। বাংলাদেশের ওপর চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব যথেষ্ট। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। তাই, যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত বোঝাবে, সেই ভারসাম্য কিংবা আঞ্চলিক সুস্থিতি নষ্ট হয় এমন কিছুর জন্য বাংলাদেশকে জোরাজুরি করাটা ঠিক হবে না। চীনের দিকে বাংলাদেশের বেশি মাত্রায় ঝুঁকে পড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত কারও পক্ষে মঙ্গলজনক নয়, সে কথাও বোঝানো হতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এটা পরিষ্কার, যুক্তরাষ্ট্র কে সমঝে চলতে হবে, যা বুঝিয়ে দিতে চায় ভারত। তাই, আপাতত ভারতেই ভরসা রাখছে বাংলাদেশ। মোদী বাইডেন বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের মন বোঝার উপরেই নির্ভর করছে বাংলাদেশের নির্বাচনী গতিপ্রকৃতি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম