।। প্রথম কলকাতা ।।
Fatema Paddy : ওপার বাংলার উচ্চ ফলনশীল ফাতেমা জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে এবার এপার বাংলায়। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলা এমনিতেই ‘শস্যগোলা’ হিসেবে পরিচিত। সেই জেলার ভাতারে ফাতেমা ধান চাষ করে অন্যান্য ধানের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন দেখতে পাচ্ছেন চাষীরা। একই সঙ্গে তাদের উৎপাদনের খরচ অনেকাংশেই কমে এসেছে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফাতেমা ধান চাষ হাসি ফুটিয়েছে কৃষকদের মুখে।
এক ধান চাষী শেখ আব্দুল হানিফ জানান, তিনি সামাজিক মাধ্যমেই জানতে পেরেছিলেন যে বাংলাদেশে ফাতেমা জাতের ধান ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এই ধানের ফলন অন্যান্য ধানের তুলনায় অনেক বেশি। পরবর্তীতে তিনিও ফাতেমা ধান চাষ করতে বেশ আগ্রহী হন। সে দেশে থাকা নিজের আত্মীয়দের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কিছু বীজ সংগ্রহ করেন শেখ আব্দুল হানিফ। এরপর তিনি সেই বীজ ছড়িয়ে দেন তাঁর প্রায় দু বিঘা জমিতে।
তাঁর দাবি, এই ধান গাছের শীষে দানার সংখ্যা থাকে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০। যেখানে অন্যান্য জাতের ধান গাছের শীষে দানার সংখ্যা থাকে খুব জোর ২০০ থেকে ২৫০ টি । যা স্বাভাবিকভাবেই বেশি ফলনকে নিশ্চিত করে । এছাড়াও ওই কৃষক জানান, ফাতেমা জাতের ধান গাছে খুব একটা রোগ কিংবা পোকার আক্রমণ হয় না। যার কারণে কীটনাশকের খরচ অনেকটাই কমে যায়। স্বল্প সেচে অল্প সময়ে এই ধান চাষ করা যায় । তাই বলে এতে স্বাদের কোন গরমিল হয় না।
বরং অন্যান্য ধানের তুলনায় এই ধানের চালের ভাত অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। তিনি নিজে ফাতেমা জাতের ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। যার কারণে পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্যান্য ধান চাষী ভাইদেরও এই ধান চাষ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি । একই সঙ্গে তিনি জানান তাঁর ফতেমা ধান চাষের কথা প্রচার হওয়ার পর বহু কৃষকই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ধান চাষ পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত হলে ধান চাষীদের ভাগ্য ফিরবে বলেই আশাবাদী তিনি।
কী ভাবে চাষ করবেন ফাতেমা ধান ?
এই ধান চাষ করার পদ্ধতি অন্যান্য ধান চাষ করার মতোই । আউশ, আমন এবং বোরো তিন ধানের মরশুমেই এই ধান চাষ করা যায়। তবে বোরো ধানের মরশুমে এর উৎপাদন সব থেকে বেশি হয়। এই ধান চাষ করতে গেলে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হল, চারার বয়স খুব বেশি করা যাবে না । বোরো ধানের মরশুমে খুব বেশি ২৫ দিন বয়সী চারা রোপন করা যাবে । আর আমন ধানের মরশুমে যারা এই চারা রোপন করবেন সে ক্ষেত্রে খুব বেশি ১৫ থেকে ১৮ দিন বয়সি চারা রাখতে হবে।
ফলন হবে কী রকম ?
ফাতেমা ধান চাষিরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, প্রতি গোছে যদি একটি করে চারা রোপন করা হয় তবে তা বেড়ে পরবর্তীতে ৮ থেকে ১২ টি হয়। এই ধান গাছগুলি প্রত্যেকটি ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি এই ধানের চাষ করা হয় তাহলে প্রত্যেকটি ছড়ায় দানা সংখ্যা সর্বোচ্চ ১ হাজার থেকে ১২০০ পর্যন্ত হতে পারে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম