।। প্রথম কলকাতা ।।
স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে জরুরি দরকারে কলকাতায় এসেছিলেন খানদাকির আজিজুল। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে এরকম বিপদে পড়বেন স্বপ্নেও ভাবেননি।
মনের ভুলে খোয়ালেন পাসপোর্ট থেকে জরুরি নথিপত্র, ব্যাগ কলকাতায় চেনা বলতে কেউ নেই, কিন্তু বলে না যার কেউ নেই তার আছে ভগবান। এই ট্যাক্সিচালক মানুষরূপে সাক্ষাৎ ঈশ্বরের দূত এই প্রবীণ দম্পতিকে রক্ষা করলেন। কীভাবে দেশে ফিরলেন তাঁরা ? জানুন সেই গল্প।
বাংলাদেশীরা পশ্চিমবঙ্গে পা রাখলে বেছে নেন কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটকে। এই এলাকাকে বলা হয় এক টুকরো বাংলাদেশ। মারকুইস স্ট্রিটে থাকলে সব কিছু নাগালের মধ্যেই থাকে। খানদাকির আজিজুল স্ত্রী সোনিয়া পারভিনও তাই ছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথেই যেন ঝড় বয়ে গেল। হাওড়া থেকে ট্রেনে করেই বাংলা দেশে ফিরবেন সব গুছিয়ে মারকুইস স্ট্রিট থেকে ট্যাক্সি নেন প্রবীণ দম্পতি। হাওড়া স্টেশনেও পৌঁছে যান তখনও তাঁদের খেয়াল নেই জরুরি ডকুমেন্টের ব্যাগটা কোথাও ফেলে গিয়েছেন। অনান্য় লাগেজের জন্য আসল জিনিসটাই ভুলে হারিয়ে ফেলেছেন। স্টেশনে পৌঁছে হঠাৎ মনে পরে পাসপোর্টটা তো নেই, সাথে আরও ব্যাগ উধাও।তখনই যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ওই প্রবীণ দম্পতির।
পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়া মানে কোনওভাবেই দেশে ফিরতে পারবেন না। দিশাহারা হয়ে পড়েন ওই দম্পতি। মারকুইস স্ট্রিটে ফিরে আসেন আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।
তবে মারকুইস স্ট্রিট ও ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটিতে তাদের জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছিল। অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি মহম্মদ শামশাদ খানের চেষ্টায় যে ট্যাক্সি করে তারা স্টেশন পৌঁছেছিলেন
সেই ট্যাক্সিচালক ফিরিয়ে দিলেন ব্যাগ সাথে পাসপোর্ট। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন প্রবীণ দম্পতি।
আপনারা যারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে কাজের জন্য বা অন্য কোনও কারণে যাতায়াত করেন। তারা জানেন পাসপোর্ট ঠিক কতটা জরুরি। শুধু তা কেন! সেই ব্যাগে থাকতেই পারত অনেক টাকা। কিন্তু কোনও লোভ নয়। এই ট্যাক্সিচালক যেন আবারও প্রমাণ করলেন এখনও মানবতা হারিয়ে যায়নি। মহম্মদ শামশাদ খানের মতো মানুষরা অসহায়ের সহায় যে পৃথিবীতে সত্ মানুষদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই পৃথিবীতেও গুটিকয়েক মানুষ আছেন। যারা এখনও মানুষের পাশে এগিয়ে আসেন। তাই প্রবীণ দম্পতিকে দেখতে পেয়েই ব্যাগ সহ গুরুত্বপূর্ণ নথি তুলে দিলেন সেই ট্যাক্সিচালক।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম