।। প্রথম কলকাতা ।।
New Zealand: অত্যন্ত দক্ষ ভাবে পিনাট বাটারের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে মারাত্মক বিষ। উদ্দেশ্য শিকারিদের মেরে ফেলা। এমনই কর্মযজ্ঞে সামিল হয়েছে গোটা নিউজিল্যান্ড। দেশীয় পাখি বাঁচাতে চলছে শত্রু নিধন। নিউজিল্যান্ডের পরিবেশ থেকে একের পর এক বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় পাখি। হিসাব বলছে প্রতিবছর প্রায় ২৬ মিলিয়ন পাখি হারিয়ে যাচ্ছে, শুধুমাত্র শিকারি প্রাণীদের কারণে। বিশেষ করে যে পাখিরা মাটিতে বাসা করে তাদের নিরাপদ বাসস্থান কমছে। তাদেরকে বাঁচাতে এবার তৎপর সরকার। তাই ইঁদুরের খাবারের মেশানো হচ্ছে মারণ বিষ।
দেশটিতে ২০১৬ সালে আইন করে তিন ধরনের ইঁদুরের প্রজাতি সনাক্ত করা হয়েছিল। যাদের অধিকাংশের দেখা মেলে নিউজিল্যান্ডের মিরামার অঞ্চলে। গোটা কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করা হয় জিপিএস অ্যাপ। যার মাধ্যমে পাতা হচ্ছে ফাঁদ। শিকারি ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্র্য। ইঁদুর নিধন কিন্তু নিউজিল্যান্ডে প্রথম নয়। ১৯৬০ সালে একইভাবে এই কর্মযজ্ঞ হয়েছিল। এই কাজ সামাজিক প্রচেষ্টা রূপে পরিচিতি পেতে থাকে ২০১০ সাল থেকে। মিরামার অঞ্চল থেকে এই উদ্যোগ এখন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো নিউজিল্যান্ড জুড়ে। নিউজিল্যান্ড সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে ইঁদুরসহ অন্যান্য শিকারি প্রাণী নির্মূলের উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই কাজের আগে নৈতিক এবং সামাজিক দিক গুলো বিবেচনা করা হয়।
উদ্দেশ্য পূরণে, ‘প্রিডেটর ফ্রি ২০৫০ লিমিটেড’ নামক একটি সরকারি সংস্থাও তৈরি করা হয়েছে। যার কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম ‘প্রিডেটর ফ্রি ওয়েলিংটন’। ইঁদুরের হটস্পট গুলোতে বসানো থাকে ইনফ্রারেড ক্যামেরা। বিষক্রিয়া মরে যাওয়া ইঁদুর ল্যাবে পাঠানো হয় অটোপসির জন্য। এই কাজে নিউজিল্যান্ড সরকার কিছুটা হলেও সফল। এখন মিরামার অঞ্চলে ইঁদুর প্রায় বিরল প্রাণী। বৃদ্ধি পেয়েছে দেশীয় পাখির সংখ্যা। তবে বিষয়টা যতটা সহজ ভাবছেন, অতটাও সহজ না। শিকারি প্রাণীর হত্যা করা সম্ভব কিন্তু শিকারি প্রাণীর পুনঃপ্রবেশ আটকানো কঠিন। এই টানাপোড়েনে ইতিমধ্যেই বিলুপ্তপ্রায় মাটনবার্ডস পাখি।
এখানেই থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। শিকারি তার শিকার ধরবে, এটাই তো প্রাকৃতিক নিয়ম। সেখানে মানুষ ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে না তো? দেশটির বহু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, পুরো দেশ জুড়ে এমন কর্মকাণ্ড অনৈতিক এবং যুক্তিহীন। কীটপতঙ্গ নির্মূল না করে পাখিদের জন্য আদর্শ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। তাদের মতে, স্তন্যপায়ী শিকারিদের মধ্যে সবথেকে বেশি আক্রমণাত্মক আর পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী কিন্তু মানুষ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অন্যান্য শিকারি প্রাণীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা কতটা যুক্তি সঙ্গত? প্রশ্নটা থেকেই যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম