।। প্রথম কলকাতা ।।
অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণ চিহ্নিত করার জন্য বন্দুক ফাটানো হয়। পূজার নৈবদ্য সাজনো থেকে ফল কাটা সবই করেন বাড়ির ছেলেরা। ২৭৪ বছরের রীতি আজও অটুট। এই পরিবারের মাতৃবন্দনার দৃশ্য দেখতে হাজির হন বহু মানুষ। বাড়ির পরতে পরতে খুঁজে পাবেন পুরনো ঐতিহ্যের ছোঁয়া। সব মিলিয়ে যেন সাজো সাজো রব। এই পরিবারের পুজোর কথা শুনলে একবার ঘুরে আসতে ইচ্ছে করবে আপনারও। এ যেন আলাদাই অনুভূতি! কি এমন বিশেষত্ব রয়েছে এই বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের পুজোয়?
১১৫৭ সাল, পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থেকে জমিদার সহস্ররাম বন্দোপাধ্যায় এসে বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে বংশ পরম্পরায় দুর্গা পুজো হয়ে আসছে, দুর্গা মন্দিরে। তখন ঠিক যেভাবে শুরু হয়েছিল, এখনো ঠিক সেভাবেই হয়ে আসছে বারুইপুরের আদি গঙ্গা সংলগ্ন কল্যানপুরের বন্দোপাধ্যায় বাড়ির পুজো। এখন জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি।বর্তমানে এই বাড়ির সদস্যরা কেউ মুম্বাই কেও ব্যাঙ্গালোর আবার কেও বা আমেরিকায় থাকেন। তবে পুজোর কটা দিন সবাই ফিরে আসেন ঘরে।
রথের দিন থেকে শুরু হয় কাঠামোর পুজোর প্রস্তুতি! প্রতিপদেই বসে ঘট। কুলপুরোহিতের সঙ্গে তন্ত্রধারক মিলে শুরু করেন চণ্ডীপাঠ। মায়ের বোধন শুরু হয় দরমার বেড়া দিয়ে বেলগাছ ঘিরে। পুরানো ঐতিহ্য ধারাকে বজায় রেখে পুজার কয়েকটা দিন ফলকাটা থেকে শুরু করে নৈবদ্য সাজানো সব কাজ বাড়ির ছেলেদের ই করতে হয়। পুজোর ভোগ রান্নার অনুমতি পায় একমাত্র দীক্ষিত মহিলারাই। বংশ পরম্পরায় বাড়ির গৃহবধূরা পালাক্রমে মায়ের বরন সারেন। অন্যান্য জায়গায় পুকুর বা গঙ্গার ঘাটে কলাবৌ স্নান করানো হলেও, এবাড়িড় কলা বউ স্নান হয় মন্দিরের ভিতরেই।
সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পাঠাবলির রীতি ও আছে। পুজোর কয়েকটা দিন মায়ের ভোগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সপ্তমী থেকে নবমী মাকে ভোগে নানাপদ মাছ, মাংস ,ডাল, খিচুড়ি সবই দেওয়া হয়। কিন্তু দশমীর দিন মাকে পান্তা ভাত, কচু শাক দেওয়া হয়। কারণ, দশমীর দিন অরন্ধন হিসেবে পালিত হয়। সবমিলিয়ে এ এক অন্যরকম পুজো।বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয় অন্যতম আকর্ষণ হল সিঁদুর খেলা। যা দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে যায় বাড়িতে। আশেপাশের এলাকার মানুষ ও মেতে ওঠেন বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ির মাতৃ বন্দনায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম