।। প্রথম কলকাতা ।।
ভারতে হবে এবার একটাই ভোট। মানে লোকসভা এক দেশ এক ভোট নীতি আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। এর মানে রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা হবে না আর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বাড়িতে জেপি নাড্ডার রুদ্ধদ্বার বৈঠক। ২০২৪র আগে কী হতে চলেছে। আগামী লোকসভা ভোটের আগেই তাহলে বড়সড় বদল। ভারতের এবার আসতে চলেছে এক দেশ এক ভোট নীতি? কী এই এক দেশ এক ভোট নীতি? এতে সুবিধা কী? বিধানসভা ভোট কী তাহলে কোনও রাজ্যেই হবেনা আর বিরোধীরাই বা কেন এর বিরোধীতা শুরু করেছে? তথ্য বলছে ভারতে শুরুতে সব ভোট তো একসঙ্গেই হত।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কার্যত টানটান মিটিং। কেন সেই মিটিং কারণ আন্দাজ করা যাচ্ছে। ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকরের দিশা খুঁজতে একটি কমিটি গঠন করেছে মোদী সরকার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এক দেশ এক ভোটের মানে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যের বিধানসভা ভোট সেরে ফেলা বর্তমানে যেটা শুধু মাত্র অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিমেই হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে আগেও বহুবার এক দেশ এক ভোট নীতির কথা শোনা গিয়েছে। কেন্দ্রের যুক্তি এর ফলে ভোটের বিপুল খরচ বাঁচানো সম্ভব। জরুরি পরিষেবা প্রদানের সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায়। সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য। বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না।
কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি এই যুক্তি মানতে রাজী নন। তাদের পাল্টা দাবি একসঙ্গে নির্বাচন হলে ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর হলে লোকসভার ঢেউয়ে বিধানসভার ইস্যুগুলো ভেসে যাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্রের সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়বে। সহজ করে বলতে গেলে বিজেপি সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে এতে। একইসঙ্গে তাঁদের এটাও দাবি এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে, কিন্তু তথ্য বলছে ভারতে শুরুতে সব ভোট একসঙ্গেই হত। লোকসভা ও বিধান পরিষদের ভোট ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে হয়েছিল একসঙ্গেই। ৩৫ বছর আগে, ১৯৮৩ সালে নির্বাচন কমিশন একসঙ্গে ভোটের কথা বলেছিল। এমনকি ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধীর কাছে বিষয়টি তোলেন। তবে সেসময় খুব বেশি দূর আলোচনা এগোয়নি।
‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতি করতে সংবিধানের বেশ কিছু অনুচ্ছেদ বদলের প্রয়োজন হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর। আনন্দবাজারের তথ্য বলছে এক্ষেত্রে ৮৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সংসদের দুই কক্ষের মেয়াদের কথা বলা হয়েছে ৮৫ নম্বর অনুচ্ছেদে লোকসভা ভেঙে দেওয়ার নিয়ম নথিবদ্ধ রয়েছে। ১৭২ নম্বরে রয়েছে রাজ্য বিধানসভাগুলির মেয়াদের কথা। ১৭৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার নিয়ম নথিবদ্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ৩৫৬ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি সংক্রান্ত বিধি এবং ১৯৫১ সালের ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব আইনও কিছু সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। এবার দেখার ২০২৪ সালের আগেই এই প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে পৌঁছয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম