।। প্রথম কলকাতা ।।
Pareshnath Jain Temple: ঐতিহ্য সমৃদ্ধ আমাদের তিলোত্তমা। কলকাতায় সমস্ত ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বাস করেন। আধুনিক কলকাতা নতুন মোড়ক পেলেও, আজও স্বগৌরবে রয়েছে নানান মন্দির, মসজিদ, গির্জা। কলকাতা বুকে এমন কিছু মন্দির রয়েছে যেখানে প্রবেশ করলে অবাক হওয়ার পাশাপাশি মনে হবে আপনি রয়েছেন বিদেশের মাটিতে। দূরে কোথাও নয়, খাস কলকাতায় এক বেলার জন্য ঘুরে আসতে পারেন পরেশনাথ জৈন মন্দির(Pareshnath Jain Temple) থেকে। এখানে রয়েছে অদ্ভুত এক প্রশান্তি, যা মুহূর্তে মন ভালো করে দেয়। মার্বেল আর গ্লাস দিয়ে তৈরি এই বিশাল মন্দির পর্যটকদের নজর কাড়ে।
• কীভাবে যাবেন?
বেশি দূর নয়, মেট্রোতে করেই আপনি এই মন্দিরে যেতে পারেন। শোভাবাজার মেট্রো থেকে অটোতে করে হাতিবাগান ক্রস করে যেতে হবে গৌরীবাড়ি। সেখান থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে রয়েছে এই মন্দির। জৈন তীর্থঙ্কর পরেশনাথকে উৎসর্গ করেই এই মন্দির তৈরি করা রয়েছে। মন্দির চত্বরে রয়েছে চারটি মন্দির। চন্দ্রপ্রভুজি মন্দির, মহাবীর স্বামী মন্দির, দাদা ওয়াড়ি মন্দির এবং শীতলনাথ জিউ মন্দির।
• নজর কাড়বে অসামান্য কারুকার্য
এটি জৈন সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় পিঠস্থান। রায় বাহাদুর বদ্রিদাস মুকিম নামক একজন মারোয়াড়ি ১৮৬৭ সালে এই মন্দির নির্মাণ করেন। সেখান থেকে মন্দিরটি দেড় শতাধিক বছর তার ঐতিহ্য গৌরবের সঙ্গে ধরে রেখেছে। এই মন্দিরে জৈনদের ২৩তম তীর্থঙ্কর পরেশনাথের আরাধনা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে যতগুলি জৈন মন্দির রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে পরেশনাথ মন্দির। মন্দিরের গর্ভ গৃহে দেখতে পাবেন ভগবান শীতলনাথের হীরক খচিত কপাল মূর্তি। এখানে স্থাপত্য শিল্প বহু প্রাচীন হলেও, এর নিদর্শন আপনাকে বিস্ময় করবে। মন্দির প্রাঙ্গণের ভিতরে যে অসামান্য কারুকার্য রয়েছে, তা যে কাউকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও মন্দিরের চারিদিকে শোভা বর্ধন করছে রংবেরঙের ফুলের বাগান আর ফোয়ার। মন্দিরের দেয়ালে রয়েছে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী গণেশ মুসকারের নানান পৌরাণিক চিত্রকলা।
• ১৫০ ধরে জ্বলছে প্রদীপ!
এই মন্দির নিয়ে একটি কথিত কাহিনী আছে। বলা হয়, মন্দিরের গর্ভ গৃহে সেই ১৮৬৭ সাল থেকে একটি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বলছে। যা কখনো নিভে যায়নি। এর প্রজ্বলিত শিখা জৈনদের বিশ্বাসঅহিংসা এবং শান্তির প্রতীক, যা চিরদিন একইভাবে প্রজ্জ্বলিত থাকবে। শুধুমাত্র জৈন ধর্ম নয়, নানান ধর্মের মানুষের কাছে পরেশনাথ মন্দির অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পর্যটনের জায়গা। ভারত ছাড়াও দেশ-বিদেশের নানান ধর্মের মানুষ এই মন্দির দর্শন করতে আসেন। এক লহমায় এই মন্দিরে আয়না খচিত স্তম্ভ কিংবা স্টেইন্ড গ্লাস বা রঙিন ঘষা কাঁচ দিয়ে সাজানো জানলা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। সবকিছুর মিলেমিশে মন্দিরের মধ্যে রয়েছে এক অপূর্ব প্রশান্তির আমেজ। এখানে রয়েছে একটি পুকুর যেখানে দেখতে পাবেন রংবেরঙের মাছ। আপনি চাইলে মাছেদের খাবার কিনে পুকুরে ছড়িয়ে দিতে পারেন। মনে করা হয়, এখানে মাছেদের খাবার খাওয়ালে পুণ্য সঞ্চয় করা যায়।
• কখন যাবেন?
প্রতিবছর নানান পার্বণ এবং জৈন মিছিল এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে ভাদ্র মাসে মন্দিরটি বিশেষ আয়োজনে সরগরম হয়ে ওঠে। আপনি সময় করে এই মন্দির থেকে ঘুরে আসতে পারেন। সপ্তাহে ৭ দিনেই মন্দিরের দরজা দর্শকদের জন্য খোলা। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা, তারপর বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আপনি মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম