।। প্রথম কলকাতা ।।
Superbug Infection: নতুন বছরে শুধু করোনা (Corona) নয়, আরেকটি রোগের সঙ্গে লড়তে হবে সাধারণ মানুষকে। এমনটাই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল। যদি প্রথম থেকেই এই রোগকে আটকানো না যায় তাহলে করোনার মতো গোটা বিশ্বে মহামারী ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রাণ যেতে পারে কোটি কোটি মানুষের। গত দু’বছর ধরে গোটা বিশ্ব করোনায় ভুগছে। প্রতি বছর নতুন রূপ নিয়ে এই মহামারী শুধু মানুষকে শারীরিক ভাবে নয় মানসিকভাবেও দুর্বল করে দিয়েছে। সম্প্রতি আমেরিকায় মানুষের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সুপারবাগ (Superbug) আবার গোটা বিশ্বকে চিন্তায় ফেলেছে।
সুপারবাগ কী?
গত কয়েক বছরের চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এই সুপারবাগ ইনফেকশন (Superbug Infection)। মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, যদি সুপারবাগকে এখনই আটকানো না হয়, তাহলে প্রতিবছর প্রায় এক কোটি মানুষের প্রাণ যেতে পারে। বর্তমানে গোটা বিশ্বে প্রতিবছর শুধুমাত্র সুপারবাগের (Superbug) কারণে ১.৩ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ল্যানসেটের গবেষণা অনুযায়ী, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধেও সুপারবাগকে কাবু করা যায় না।
মূলত এটি একটি ব্যাকটেরিয়ার রূপ, যা সাধারণ মানুষের জন্য বেশ বিপজ্জনক। যখন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক বা পরজীবী সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় তখন তাদের উপর ওষুধ প্রভাব ফেলা বন্ধ করে দেয়। এটি তাদের মধ্যে একটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের সৃষ্টি করে। কোন ব্যক্তি যদি এই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল আবির্ভাবের পর সংক্রমিত হন তখন চিকিৎসা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। সাধারণত কোন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার বা অপ্রয়োজনীয় ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহারের কারণে এই সুপারবাগ তৈরি হয়। ফ্লুর মতো ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে যদি ভুল ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা হয়, তাহলে সুপারবাগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ধীরে ধীরে অন্য ব্যক্তিকেও সংক্রমিত করতে পারে।
সুপারবাগ কীভাবে ছড়ায়?
সাধারণত ত্বকের সংস্পর্শ, ক্ষত, লালা এবং যৌন সংযোগের মাধ্যমে সুপারবাগ এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। সুপারবাগ যদি মানব শরীরে প্রবেশ করে তখন ওষুধ রোগীর উপর প্রভাব ফেলাব বন্ধ করে দেয়। এখনো পর্যন্ত সুপারবাগের জন্য নির্দিষ্ট কোন ওষুধ নেই, তবে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। গোটা বিশ্বজুড়ে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার যে হারে বাড়ছে, তা যদি বজায় থাকে তাহলে ভবিষ্যতে বিপদ আসতে পারে। স্কলার অ্যাকাডেমিক জার্নাল অফ ফার্মেসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫ বছরের হিসেবে গোটা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার প্রায় ৬৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা মহামারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে সামান্য সর্দি কাশিত এখন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছেন। ২০২১ সালে আমেরিকায় দশটিরও বেশি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সুপারবাগের কারণে অকাল জন্মের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অপরদিকে পুরুষদের প্রস্রাব সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও এর দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
সুপারবাগ থেকে বাঁচবেন কীভাবে?
শুধুমাত্র সামান্য কয়েকটি কাজে সুপারবাগকে সহজেই প্রতিরোধ করতে পারবেন-
- সর্বদা সাবান এবং জল দিয়ে হাত পরিষ্কার করবেন। হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন।
- খাবার সামগ্রী জায়গা পরিষ্কার রাখবেন এবং খাবার সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে বানাবেন।
- রান্নায় ব্যবহার করতে হবে বিশুদ্ধ জল।
- অর্ধেক সিদ্ধ খাবার রান্না করবেন না। ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করবেন।
- অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শ একটু এড়িয়ে যাবেন।
- যে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম