।। প্রথম কলকাতা ।।
Tollywood: সরকারি চাকরি ছেড়ে অভিনয়, মেনে নেয়নি পরিবার! অব্রাহ্মন মেয়েকে বিয়ে করার জন্য ছাড়তে হয় বাড়িও! খরাজ মুখার্জির জীবনের এই গল্প জানতেন?জানতেন কি, কমেডিয়ান খরাজ মুখার্জির উৎপত্তি কোথায়? যে মানুষটা রোজ লাখ লাখ দর্শককে হাসিয়ে চলেছে তার জীবনেই রয়েছে গোপন কষ্ট। এককথায় খরাজের জীবনকাহিনীকে সিনেমা বললেও অত্যুক্তি হবেনা।
স্বার্থপরতার মোড়কে ঘেরা এই দুনিয়ায় সবচেয়ে কঠিন কোনও কাজ হল মানুষকে হাসানো। তবে দিনের পর দিন এই কাজটিই বড্ড সাবলীলভাবে করে চলেছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। তার অভিনয়ের মুন্সিয়ানায় কত গোমড়ামুখোর ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটেছে তার ইয়ত্তা নেই। তবে এই মানুষটির জীবনে কী চলছে সেই খবর কয়জন রাখে? কয়জন চেনেন ব্যক্তি খরাজকে? আমাদের মধ্যে অধিকাংশই সেই খবর জানিনা।
জেনে অবাক হবেন যে, পর্দায় যে হাবাগোবা খরাজের কর্মকাণ্ড দেখে হাসিতে লুটোপুটি খাচ্ছেন, সেই খরাজ আসলে বেশ ব্রিলিয়ান্ট। আজ্ঞে হ্যাঁ, দস্তুরমত সরকারি চাকরি করতেন তিনি। যে রেলের চাকরির জন্য ছেলেমেয়েরা হা পিত্যেশ করে বসে থাকে, সেই রেলের চাকরি তিনি অবলীলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। এমনকি আজ যে তিনি এত বড় মাপের অভিনেতা সেটা তাকে দেখে বোঝাই দায়। বরাবরই মাটিতে পা রেখে চলাতে বিশ্বাসী তিনি। সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত। ইন্ডাস্ট্রির সকলের চোখে খরাজ মুখোপাধ্যায় নির্ভেজাল ভালো মানুষ। তবে বাঁচার সময় হই হই করেই বাঁচেন।
তবে জানেন কি মাটির সাথে মিশে থাকা এই মানুষটার জীবনের গল্প কিন্তু কোনও সিনেমার চেয়ে কম নয়। জেনে অবাক হবেন যে, একটা সময় তার বাড়ির কেউ চাইতনা যে তিনি অভিনয়ে আসুক। তবে ঐ যে, আত্মার টান আর কোথায় যাবে? মন তো পড়ে থাকত এই অভিনয়েই। শেষমেষ চাকরি আর অভিনয়, এই দুটো দিক সামাল দিয়ে উঠতে পারছিলেন না তিনি। শেষমেষ স্ত্রী প্রতিভার পরামর্শ মত কপাল ঠুকে চাকরিতে ইস্তফা দিয়েই দিলেন।
তবে এই ব্যাপারটাও অতটাও সহজ ছিলনা। প্রতিভাকে বিয়ে করার জন্য ত্যাজ্যপুত্র তাকে আগেই হতে হয়েছিল। ছাড়তে হয়েছিল বাড়িও। কারণ খরাজ ছিলেন রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে, অপরদিকে তাঁর স্ত্রী ছিল অব্রাহ্মণ। এমন একটা পরিস্থিতিতে স্ত্রীর পরামর্শে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত যে বুমেরাং হতনা সেটাই বা বলে কে? তবে ঐ যে কথাতেই আছে, রাখে হরি তো মারে কে! হরির আশীষকে সম্বল করেই এক অজানা দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন খরাজ মুখোপাধ্যায়।
প্রথমটা বেশ চড়াই উৎরাই পার করতে হয়েছিল তাকে। বিশেষ করে তার রোগা চেহারার কারণে কেউ কাজ দিতে চাইতনা। চেহারার কারণে, কাজ চাইতে গেলেও দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হত তাকে। তবে অভিনেতা জানান, একবার মারাত্মক এক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। আর তারপর থেকেই ক্রমশ মোটা হতে থাকেন। চিকিৎসকরা তাকে সাবধান থাকতে বললেও, তিনি মনে করেন এই চেহারাই তার কাছে শাপে বর হয়েছে। দিনদিন ভুঁড়ির সাথে তাল মিলিয়ে ছবির সংখ্যাও বেড়েছে তার।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে খরাজ মুখার্জি একটা ব্র্যান্ড বললেও কম বলা হয়। শুভাশিস মুখার্জির পর কেউ যদি কমেডির আসল রস ধরে রাখতে পেরেছেন তাহলে নিঃসন্দেহে সেই নামটা হবে খরাজ মুখোপাধ্যায়। যদিও এতে খরাজের তেমন যায় আসেনা। লাইট ক্যামেরা বন্ধ হলেই তিনি এক আদ্যোপান্ত বাঙালি। যে বাঙালি হেঁশেলে রান্না করে, স্ত্রীয়ের হাতে হাতে কাজ করে দেয়। এমনকি প্রয়োজনে বাসন মাজতেও সংকোচ বোধ করেননা। এরকম একজন মানুষকে কী কুর্ণিশ না করে পারা যায়?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম