।। প্রথম কলকাতা ।।
Pakistan Economic Crisis: আর্থিক সংকটে (Economic crisis) বিধ্বস্ত পাকিস্তান (Pakistan)। সাহায্যের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে অন্য দেশের উপর! পাকিস্তানের বহু সরকারি কর্মচারী মাস শেষে মাইনে পাচ্ছেন না। গ্যাস সিলিন্ডারের (Gas Cylinder) দাম বেড়ে পৌঁছেছে প্রায় ১০ হাজার টাকায়। গমের দাম আকাশ ছোঁয়া। সেখানে মানুষ খাবে কী? শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) পর হয়ত পাকিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে চলেছে। পাকিস্তানের রিজার্ভ (Reserve) পৌঁছেছে মাত্র ৫৮০ কোটি ডলারে, গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২৪%।
• রিজার্ভে ধস
পাকিস্তান নানান সংকটে জর্জরিত। রাজনৈতিক, হত্যা, অর্থনৈতিক সংকট দেশটিকে ঘিরে ফেলেছে। শাহবাজ শরীফের সরকার কিছুতেই আর পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। ২০২২ এর একদম শেষে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়ে ছিল ৫৮০ কোটি ডলারে, যা গত আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই সামান্য পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে পাকিস্তান শুধুমাত্র এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে। তারপরে কি হবে, তা কেউ জানে না। এত কিছু ঘটার পরেও পাকিস্তান মনে করছে না তারা দেউলিয়া হয়ে যাবে। দেশটির বিশেষজ্ঞরা এই ভয়কে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। তবে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা যে আশঙ্কাজনক তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
• পাকিস্তানের সংকটের ফাঁসে ভারতীয় কোম্পানি!
শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আগে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল, পাকিস্তানেও ধীরে ধীরে সেই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দেশটির রাজনৈতিক সংকট, ঋণ এবং মুদ্রাস্ফীতির হার চরমে। শ্রীলঙ্কা যখন বিপদে পড়েছিল তখন বহু রাষ্ট্র পাশে দাঁড়িয়েছিল। ভারতও সুপারম্যান হয়ে শ্রীলঙ্কাকে নানান জিনিস সাহায্য করেছে। তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এমনটা হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পাকিস্তানের এই সংকটে বিপাকে পড়তে পারে ভারতীয় কিছু কোম্পানির ভবিষ্যৎ। দেশটির মাটিতে রয়েছে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, বিল্ডার্স, টাটা, জিন্দালের মত বড় বড় কোম্পানির ব্যবসা। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট ভারতীয় কোম্পানিগুলিতে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ বাঁচাতে দেশটিতে প্রচুর শপিং মল এবং নানান পাবলিক প্লেস বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের মানুষ বাজারে গিয়ে আটা, চিনি, ঘি আগের মত দামে পাচ্ছেন না। দাম এতটাই বেড়েছে যে খালি হাতে ফিরছেন। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগেই আমেরিকায় পাকিস্তানি দূতাবাসের সম্পত্তি নিলামে তোলা হয়েছে।
• আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি
পাকিস্তানি ১৫ কেজি আটার দাম প্রায় ৩০০ টাকা বেড়েছে। এক বস্তা আটা কিনতে গেলে খরচ করতে হবে আড়াই হাজার টাকা। এক বছর আগে পাকিস্তানে পেঁয়াজের দাম ছিল মাত্র ৩৬ টাকা। আর এক বছর পর সেই দাম থেকে যে ২২০ টাকার ফারাকটা সত্যি অবাক করার মত। ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনতে গেলে খরচ করবে করতে হবে ৩৮২ টাকা। মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ। গত এক বছরে পাকিস্তানি পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪৮ চল্লিশ শতাংশ আর ডিজেলের দাম বেড়েছে ৬১ শতাংশ। গমের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। চিনি আর ঘির দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ থেকে ৬২ শতাংশ। পাকিস্তান যেন ক্রমাগত নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি সাহায্য না পেলে বেশ মুশকিল।
গত বছরের ভয়াবহ বন্যা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে এক্কেবারে ওলটপালট করে দিয়েছে। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৩৩ কোটির বেশি মানুষ। গত বছর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়। পাকিস্তানে বন্যার কারণে ক্ষতি হয় প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পত্তির। ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ ছিল প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যার পরিমাণ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম