।। প্রথম কলকাতা ।।
Ganesh puja: মহেশ্বর এবং দেবী পার্বতীর দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন গণেশ। হিন্দুদের অন্যান্য পুজো গুলির মধ্যে আরেকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হল গণেশ পুজো। হিন্দু ধর্মের প্রচলিত রীতি অনুসারে সমস্ত পুজোর আগে গণেশের পুজো করতে হয়।। কিন্তু অন্যান্য দেবতাদের আরাধনা না করে সর্বাগ্রে কেন গণেশের (Ganesh) পুজো করতে হয়? শুধু তাই নয় বাড়িতে বা কর্মস্থলে কোনো শুভ মুহূর্তে গণেশকেই সর্বাগ্রে স্মরণ করা হয়।
পুরাণে এই বিষয়ে মূলত দুটো কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। এটি হলো পার্বতী চন্দন দিয়ে একটি পুতুল তৈরি করেন। কিন্তু সেই পুতুল এতই সুন্দর হল যে পার্বতী বললেন এতো আমার সন্তান। তারপর পুতুলের জীবন সঞ্চার করলেন পার্বতী। নিজের প্রথম পুত্র গণেশকে পার্বতী বললেন তিনি স্নানে যাবেন। কেউ যেন ঘরে না যায়। এমন সময় স্বয়ং মহাদেব হাজির হয়। শিব দেখলেন একজন কে দাঁড়িয়ে আছে দোরগড়ায়। অত কিছু না ভেবে শিব ঘরে ঢুকতে গেলেন কিন্তু তাকে বাধা দেন গণেশ। গণেশ বলেন মা কাউকে ঘরে ঢুকতে বারণ করেছেন। এই কথা শুনে শিব রেগে যান। শেষ পর্যন্ত ত্রিশূলের আঘাতে মাথা কাটা পরে গণেশের। তার কান্না শুনে বেরিয়ে পার্বতী শোকগ্রস্ত এবং ক্ষুব্ধ হয়ে পরেন। তার ক্রোধে সৃষ্টি লয় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তার ক্রোধ প্রশবনে সেই হস্তি সাবকের মাথা (Head) কেটে এনে বসিয়ে দিলেন গণেশের ঘাড়ে। সে সঙ্গে গণেশকে আশীর্বাদ করে বলেন যে সব দেবতার আগে গনেশ পুজিত হবেন।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে আমাদের অনেক শক্তিশালী দেবতা আছেন। কিন্তু গণেশ পুজো কেন আগে করা হয়। পৌরাণিক কথা অনুযায়ী প্রাচীনকালে একবার দেবতাদের সভা হয়েছিল এবং প্রসঙ্গ উঠেছিল কে শ্রেষ্ঠ? সকল দেবতাই নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করেছিলেন। কিন্তু এভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছিল না। অতএব ঠিক হল যে দেবতা ত্রিলোক পরিক্রমা করে এই স্থানে প্রথমে পৌঁছবেন তিনি শ্রেষ্ঠ এবং তার পুজো প্রথম করা হবে। এ শুনে সকল দেবতা নিজে নিজে বাহনে চড়ে ত্রিলোক পরিক্রমা করতে চলে গেলেন। কিন্তু ভারী শরীরে গণেশ নিজে বাহন মুষিক সহ রয়ে গেলেন অনেক পিছনে। কিন্তু তিনি সাহস হারালেন না। ওখান থেকে মাতা পিতা যেখানে ছিলেন সেখানে গেলেন। পিতা মাতাকে তিনবার পরিক্রমা করে ফিরে এলেন। সবার আগে কার্তিক ময়ূরে চড়ে ত্রিলোক পরিক্রমা করে এসে গণেশকে বসে বসে লাড্ডু খেতে দেখে ভীষণ রেগে গেলেন। তখন গণেশ সকল দেবতাদের সামনে যুক্তি দিলেন ত্রিলোকের সকল সুখ সম্পদ মাতা পিতার চরণে বিরাজমান। মাথা পিতার চরণের সেবাই সর্বোত্তম। যারা এদের চরম ছেড়ে ত্রিলোক ভ্রমণ করেন তাদের সকল পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যায়। ভগবান গণেশের বিশাল মস্তক আমাদের লাভ দায়ী বিচার গ্রহণ করার প্রেরণা দেয়। মোটা পেট পাচন শক্তি এবং সহনশীলতার প্রতিক। এই সকল গুণ অন্য কোনো দেবতার নেই। সে থেকেই গণেশ অগ্রপুজ্য হয়ে উঠলেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম