।। প্রথম কলকাতা ।।
কথায় আছে পড়াশোনা করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে! ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইপিএস, আইএএস নয় বরং পরিচিত একজন ইউটিউবার (YouTube) হতে চাইছে বর্তমানে যুগের তরুণ-তরুণীরা। ক্রিয়েটর হিসাবে নিজের ভবিষ্যত গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েরা। কিন্তু অনেকের মতে, এই সব করে আর ক’ টাকাই আসে মাস শেষে। জানলে অবাক হবেন, ভারতের জিডিপিতে এনাদেরই অবদান ১০ হাজার কোটিরও বেশি।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন, অক্সফোর্ড ইকোনমিক্স দ্বারা প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ভারতের জিডিপিতে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক অবদান এবং ৭ লাখ ৫০ হাজার ফুল টাইম কর্মসংস্থান তৈরি করেছে ইউটিউব ইকোসিস্টেম। গুগল মালিকধীন এই ভিডিও প্লাটফর্মই রোজগারের উপায় হয়ে উঠেছে লাখ লাখ মানুষের।
২০২০ সালে ইউটিউব তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, ভারতের জিডিপিতে ৬,৮০০ কোটি টাকার অবদান রয়েছে ইউটিউবের পাশাপাশি ৬,৮৩,৯০০ ফুল টাইম চাকরি তৈরি করেছিল ইউটিউব। এই পরিসংখ্যানকেও ছাপিয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক রিপোর্ট। অক্সফোর্ড ইকোনোমিক্স এই নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায় সম্প্রতি।
আরও পড়ুন : আপত্তিকর কমেন্ট করার আগে দশবার ভাবতে হবে, জরুরি বৈশিষ্ট্য আনছে YouTube
৫,৬৩৩ ইউটিউব ক্রিয়েটর, ৫২৩ বিজনেস এবং ৪০২২ ইউটিউব ইউজারদের উপর এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। তাদের ভিডিও এবং তারা কতজনের চাকরি তৈরি করেছে সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখে তারা। নিশ্চিত হওয়ার জন্য
ভারতীয় অর্থনীতিতে ইউটিউবের এর সৃজনশীল ইকোসিস্টেমের প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ, প্ররোচিত প্রভাব সমীক্ষা করে তারা।
উক্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ১০ হাজার কোটি টাকার অবদান এসেছে বিজ্ঞাপন, সাবস্ক্রিপশন, চ্যানেল মেম্বারশিপ এবং সুপার চ্যাটের মতো একাধিক রেভেনিউ স্ট্রিমের মাধ্যমে। এ ছাড়াও ইউটিউব থেকে ক্রিয়েটরদের সরাসরি উপার্জনের পাশাপাশি মিউজিক এবং মিডিয়া কোম্পানিগুলির অর্জিত আয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই রিপোর্টে।
এই বিরাট উপার্জনে ভিডিও সম্পাদক, ভিডিও সফ্টওয়্যার নির্মাতা, গ্রাফিক ডিজাইনার, প্রযোজক এবং চলচ্চিত্র সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকদের মতো প্ল্যাটফর্মের জন্য সামগ্রী তৈরি করতে নির্মাতাদের দ্বারা ব্যয় করা অর্থও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড।
আরও পড়ুন : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভর করে এগোবে ভারত! দেশের জন্য গুগল আনছে একগুচ্ছ পরিকল্পনা
এক বিবৃতিতে ইউটিউবের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং APAC উদীয়মান বাজারের পরিচালক অজয় বিদ্যাসাগর জানান, আমরা আনন্দিত যে ইউটিউবের সৃজনশীল ইকোসিস্টেম ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে চলেছে। দেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ জুড়ে নতুন চাকরি এবং সুযোগগুলিকে সমর্থন করে ইউটিউব। আমরা এই যাত্রায় অনেক দূর এগিয়েছি। নির্মাতাদের জন্য তাদের শ্রোতাদের সাথে, বিভিন্ন ভাষায় যুক্ত হওয়ার এবং তাদের আয় বাড়াতে নতুন উপায় প্রবর্তন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি আমরা।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে ইউটিউব তাদের পরিসংখ্যানে জানায়, ভারতে ৪,৫০০ এর বেশি চ্যানেল রয়েছে। ১ মিলিয়নের বেশি সাবস্ক্রাইবারযুক্ত চ্যানেলগুলির অবদান বার্ষিক ৪০ শতাংশ। যেসব ইউটিউবাররা ১ লাখ টাকা বা তার বেশি উপার্জন করে তাদের আয় বার্ষিক ৬০ শতাংশ হরে বেড়েছে। তাদের আশা, ইউটিউব শর্ট ক্রিয়েটর প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই সংখ্যা ভবিষতে আরও বৃদ্ধি পাবে।