।। প্রথম কলকাতা।।
Apiculture: সবজি, ফল- ফুল, শস্য , মাছ চাষ প্রভৃতি সম্পর্কে সকলেরই কম বেশি ধারণা থাকে। তবে মৌমাছি চাষ ( Apiculture / Beekeeping) সম্পর্কে সকলের তেমন স্পষ্ট কোন ধারনা নেই। হয়তো মৌমাছির আতঙ্কের কারনেই এই চাষ সম্পর্কে বিশেষ কৌতুহল সৃষ্টি হয় না মানুষের মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে মৌমাছি চাষ করা বেশি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে উঠে দাঁড়িয়েছে। সারা বছর একই রকম ভাবে মধু আর মোমের চাহিদা থাকে। এছাড়াও বাজার ঘুরলেই খুব ভালোভাবে বোঝা যায় যে আসল মধু (Honey) আর নকল মধুর মধ্যে দামের কতটা ফারাক রয়েছে।
মৌমাছি চাষ করলেই মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। কিন্তু মৌমাছির চাষ করা তো আর মুখের কথা নয়। একবার এই পতঙ্গের হুল ফুটলে তার যন্ত্রণা কত দিন থাকবে কোন নিশ্চয়তা নেই । কাজেই মৌমাছি চাষ করার জন্য সঠিক পদ্ধতি জানা অত্যন্ত প্রয়োজন । কীভাবে এই চাষ করতে হবে? এই চাষ করার জন্য কী কী কাজ করতে হবে, কীরকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, কীভাবে এগোতে হবে এই সব প্রশ্ন প্রথমে ওঠাটাই স্বাভাবিক । আজকের প্রতিবেদনে মৌমাছি চাষ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য ভাগ করে নেওয়া হল।
* প্রথম ধাপ : মৌমাছি চাষ করার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন একটা ফাঁকা জায়গা। সেটা আপনার বাড়ির উঠোন হতে পারে কিংবা বাড়ির কোন একটি ফাঁকা ঘর হতে পারে। অথবা আলাদা কোন ফাঁকা জায়গা হতে পারে। মৌমাছি চাষ করার জন্য প্রথমেই কতগুলি বাক্সের ব্যবস্থা করতে হবে । কারণ ওই বাক্সের মধ্যেই মৌমাছি থাকে আর এক একটি বাক্সের মধ্যে থাকে প্রায় নয় থেকে দশটি ট্রে। রানি মৌমাছির সংখ্যা যদিও একটাই থাকে কিন্তু শ্রমিক অর্থাৎ পুরুষ মৌমাছি থাকে অসংখ্য। সাধারণত পুরুষ মৌমাছিদেরকে আলাদা বাক্সে রাখা হয়। কারণ সেগুলি অনেক সময় রানি মৌমাছি (Queen Bee) ডিম নষ্ট করে ফেলে, আবার মধু খেয়ে ফেলে।
সঠিকভাবে যদি মৌমাছি চাষ করা যায় তাহলে কয়েক মাসের মধ্যেই এদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি চোখে পড়বে । সে ক্ষেত্রে একটি দুটি বাক্স দিয়ে শুরু করলে কয়েক মাসের মধ্যে তা বেড়ে ছয় থেকে সাতটি বাক্সে পরিণত হতে খুব একটা সময় নেবে না। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বছরের বারো মাসের মধ্যে মাত্র ছয় মাস এই ব্যবসা করা হয়। আর সেখান থেকেই আয়ের পরিমাণ যথেষ্ট ভালো হয়। যা সারা বছর পুষিয়ে যায়। প্রথমে মৌমাছি চাষ করার জন্য অভিজ্ঞতা অর্জন প্রয়োজন। তাই অল্প সংখ্যক মৌমাছি দিয়ে শুরু করা উচিত । তাতে অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছি পালন করতেই পারেন যে কোন ব্যক্তি।
* কেমন আবহাওয়া প্রয়োজন ?
মৌমাছি চাষ করার জন্য আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । যদি ভালো আবহাওয়া থাকে তাহলে বছরে দু-তিনবার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব কিন্তু যদি আবহাওয়া সঙ্গ না দেয় সে ক্ষেত্রে মধুর পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। এছাড়াও মৌমাছি প্রতিপালনের সময় বহু রকমের রোগে আক্রান্ত হতে পারে আপনার মৌমাছিরা । তাই তাদের যথাযোগ্য ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। মৌমাছির সুস্থতার ওপরেই কতটা মধু উৎপন্ন হবে তা নির্ভর করে। এই কারণে মৌমাছির সঠিক পরিচর্যা কিন্তু ভীষণ প্রয়োজন।
* মৌমাছি প্রতিপালন জনপ্রিয় হওয়ার কারণ
প্রথমত মৌমাছি পালন করার জন্য কোন কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না। মোটা অঙ্কের কোন টাকা বিনিয়োগ করতে হয় না। প্রয়োজন হয় শুধু অভিজ্ঞতা অর্জনের। আর খুব কম সময়ে আয় করার রাস্তা রয়েছে এক্ষেত্রে । মধু যদি ভালো মানের হয় তাহলে বাজারে এর দাম ভালোই মেলে। সারা বছর বাজারে বিভিন্ন কারণে মধুর চাহিদা থাকে । তাই এই ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই । আর বছরে জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করা মধু খুব সহজেই হোলসেল মার্কেটে বিক্রি করা যায় । এখানে মাঝে কোন তৃতীয় ব্যক্তি না থাকায় লাভের অংশ পুরোটাই ব্যবসায়ীর হাতে আসে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম