।। প্রথম কলকাতা ।।
১০ বছর আগে মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার এক খুদে সমর্থক। সেদিন ব্যস্ত তাঁর খুদে সমর্থকের সঙ্গে ছবিও তুলেছিলেন। আজ সেই স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে দেশের জার্সিতে স্বপ্নপূরণ। তিনি আর কেউ নন আর্জেন্টিনার উঠতি নক্ষত্র জুলিয়ান আলভারেজ। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে দুটি গোলে ম্যাচের নায়ক বনে গিয়েছিলেন এই আলভারেজ। দুটি গোল করেছিলেন স্বপ্নের নায়কের মেসির পাস থেকে। শুধু তাই নয় দেশের জার্সিতে স্বপ্নের নায়কের হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়। এইরকম সুযোগ কয়জনই বা পায়।
আর্জেন্টিনার কর্ডোবা শহরে জন্ম নেওয়া আলভারেজ ছোট থেকেই মেসির ভক্ত। মেসিকে আইডল মেনে, তাঁকে অনুসরণ করেই ফুটবলে আসা আলভারেজের। মেসি তার সুপার হিরো। একবার এক সাক্ষাৎকারে আলভারেজ বলেছিলেন, “তাঁর পরিবারের সবাই মেসির ভক্ত। শৈশব থেকে মেসির খেলা দেখা বড় হয়েছেন। বাড়ির সদস্যরাও চাইতেন আলভারেজ মেসির সঙ্গে ফুটবল খেলুক।” বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যেখানে বিপক্ষের নাম ক্রোয়েশিয়া সেখানে কাজের কাজটা করে দিয়েছেন। ফাইনালেও ডি মারিয়ার গোলে রাখলেন অবদান। স্বপ্নের নায়কের এটাই শেষ বিশ্বকাপ অন্যদিকে আলভারেজের এটাই প্রথম বিশ্বকাপ। স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখলেন জুলিয়ান আলভারেজ।
২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি আর্জেন্টিনার ক্যালচিনের কর্ডোবা শহরে জন্ম জুলিয়ান আলভারেজের। ছোট থেকেই ফুটবলের প্রতি টান। মেসির খেলা দেখতে ভালোবাসতেন। আর্জেন্টিনার প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্লাব আতলেতিকো কালচিনের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন আলভারেজ। ২০১৮-১৯ সালে আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটে যোগদান করেন আর্জেন্টিনার এই তরুণ তারকা। রিভার প্লেটের হয়ে ৯৬ ম্যাচে ৩৬ গোল করেছিলেন। ২০২২ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগদান করেন আলভারেজ। সিটির জার্সিতে ২০ ম্যাচে ৭ গোল করে ফেলেছেন তিনি। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২০ আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পান আলভারেজ। এরপর ২০১৯ সালে সাউথ আমেরিকান অনূর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেন।
২০২১ সালে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে অভিষেক হয় জুলিয়ান আলভারেজের। ওই বছরই চিলির বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ৬২ মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামেন। ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সিতে প্রথম গোল পান ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে। লিওনেল স্কালোনির বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবে ২০২২ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা হয়ে যায় আলভারেজের। স্বপ্নের নায়কের পাশে বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলার সুযোগ চলে আসে জুলিয়ানের সামনে। সুযোগ পেয়ে কাজেও লাগান তিনি। কাতার বিশ্বকাপে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম গোল পান আলভারেজ। এরপর নক-আউটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এবং সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে নায়ক বনে যান আর্জেন্টিনার এই উঠতি নক্ষত্র। আর্জেন্টিনার জার্সিতে কম ম্যাচ খেললেও ভান্ডারে একের পর এক সাফল্য। ২০২১ কোপা আমেরিকার পর, ফিনালিসিমা কাপ, আর এবার বিশ্বকাপ জয়। স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে এমন মধুর অভিযান বোধহয় স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি স্বয়ং জুলিয়ান আলভারেজ।