।। প্রথম কলকাতা ।।
Kedarnath Temple: হিন্দুধর্ম পুরাণ অনুযায়ী দেবাদিদেব জীব প্রজাতির মঙ্গল কামনায় ভারতের বারটি জায়গায় জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে প্রকট হয়েছিলেন। যার প্রত্যেকটি জায়গায় শিবলিঙ্গকে জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আরাধনা করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম একটি জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে কেদারনাথ মন্দিরে (Kedarnath Temple) । কেদারনাথ চারধাম এবং পঞ্চকেদারের মধ্যে অন্যতম। উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) রুদ্রপ্রয়াগে অবস্থিত এই মন্দিরের একবার দর্শন পাওয়ার জন্য প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত দেশ-বিদেশ থেকে এখানে ভিড় জমান। কেদারনাথ ধামের তিন দিকে রয়েছে বরফের চাদরে মোড়া পর্বত। শোনা যায় ভীমের ভয়ে নাকি দেবাদিদেব এই মন্দিরেই লুকিয়ে ছিলেন। চারশ বছর আগে এই মন্দির ছিল বরফে ঢাকা। হিমবাহ গলনের ফলে বরফের স্তূপ থেকে বেরিয়ে এসেছে এই মন্দির। কেদারনাথ মন্দিরকে ঘিরে নানান রহস্যময় কাহিনী আজও মানুষকে অবাক করে।
ভ্রাতৃ হত্যার পাপ মোচনে শিবের খোঁজে পঞ্চপাণ্ডব উপস্থিত হয়েছিলেন এই কেদারনাথে। কিন্তু বিষয়টি একেবারেই মেনে নিতে পারেননি শিব। তিনি পঞ্চপাণ্ডবকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পাণ্ডবগণ দেবাদিদেবকে খুঁজতে খুঁজতে হিমালয় পৌঁছালে, তিনি সেখান থেকে অন্তর্ধান হয়ে কেদারে চলে আসেন। জানলে অবাক হবেন , স্বয়ং শিব ভীমের ভয়ে মাটির তলায় পর্যন্ত লুকিয়ে ছিলেন। ভীম টেনে বার করে আনেন শিবকে। দেবাদিদেবের শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিভিন্ন অংশে। অংশগুলি থেকে তৈরি হয় কেদারনাথ মন্দির।
উত্তরাখণ্ডে বিখ্যাত মন্দির হল কেদারনাথ মন্দির। মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে শীতল মন্দাকিনী নদী। এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানান রহস্যময় কাহিনী । বিজ্ঞানীরা কার্বনের আইসোটোপ ও এখানকার মাটি পরীক্ষা করে প্রমাণ করে দিয়েছেন আট হাজার বছর পূর্বে এই স্থান ছিল গরম জলবায়ুর। এমনকি ছ’হাজার বছর আগে শস্য চাষ পর্যন্ত হত কেদারনাথের মাটিতে। চারটি পর্যায়ে গঠিত এই মন্দিরের কথা গুপ্ত যুগের শিলালিপিতেও উল্লেখিত হয়েছে।
পঞ্চ কেদারনাথের মন্দির সম্পর্কে প্রচলিত রয়েছে অসাধারণ পুরাণকথা। মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী , পঞ্চপান্ডব কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে জয়লাভের পর জ্ঞাতি হত্যার প্রায়শ্চিত্ত করতে বার হন। তীর্থ দর্শনে এসে যখন কাশিতে এসে পৌঁছান তখন বিশ্বনাথ শিব ইচ্ছাকৃত ভাবে পাণ্ডব পুত্রদের দেখা দেবেন না বলে হিমালয়ে আত্মগোপন করেন । যুধিষ্ঠির এই কথা জানতে পেরে হরিদ্বারের পথে এসে খুঁজতে থাকেন। জানতে পারেন বিশ্বনাথ গুপ্ত কাশিতে বিশেষ ছদ্মবেশে লুকিয়ে রয়েছেন। ভীম শিবের সন্ধানে বৃষের পিছনে ধাওয়া করেন। গৌরিকুণ্ডের কাছে এসে দেখেন বৃষ মাটিতে প্রবেশ করছে। সেই অবস্থাতেই ভীম আর বৃষ রূপি শিবের মধ্যে শুরু হয় টানাটানি। ধস্তাধস্তিতে শরীরের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বৃষের কুঁজ রয়ে যায় কেদারনাথে । তাই কেদারনাথ মন্দিরের শিবের মূর্তি কুঁজের মতো। বৃষের নাভি থাকে মদমহেশ্বর মন্দিরে। শিবের দুই হাত থেকে ধুঙ্গনাথ , মুখ থেকে রুদ্রনাথ এবং জটা থেকে কল্পেশ্বর মন্দিরের সৃষ্টি হয়। শিবের দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে সৃষ্টি হয় পঞ্চ কেদারনাথ মন্দির।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম