।। প্রথম কলকাতা ।।
Basil Farming : তুলসী পাতার (Basil Leaves) গুণাগুণ সম্পর্কে একটি বই লিখে ফেলা যায়। এই ছোট তুলসী গাছের রয়েছে একাধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ঔষধি গুণে ভরপুর এই ভেষজ উদ্ভিদ বাড়িতে থাকলে বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যায় খুব সহজেই। করোনার সময় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সকলেই তুলসী পাতা খাওয়ার উপর জোর দিয়েছিলেন। তবে বাণিজ্যিকভাবে তুলসী চাষ করার বিষয়ে পূর্বে কৃষকরা তেমনভাবে চিন্তাভাবনা করেননি। কিন্তু এখন স্বল্প ব্যয় যেহেতু তুলসী চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা তাই অনেকেই এই চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তুলসী গাছ চাষ (Basil Farming) করার জন্য বিরাট প্রস্তুতির কখনও প্রয়োজন হয় না। এই গাছ পতিত জমিতেও কৃষকরা চাষ করতে পারবেন। এছাড়াও অন্তরবর্তী ফসল হিসেবে তুলসী চাষ করা যায় অনায়াসে। তাই এক কাজে দু কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মরশুমি ফসল যেমন চাষ হবে ক্ষেতে একইসঙ্গে সেই ক্ষেতেই চাষ করা হবে তুলসী গাছ। তবে বাণিজ্যিকভাবে তুলসী গাছ চাষ করতে গেলে কৃষকদের বিশেষ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করলেই লাভবান হওয়া নিশ্চিত।
তুলসী চাষ করার জন্য যা করতে হবে
- তুলসী গাছ চাষ করার জন্য প্রথমে উপযুক্ত মাটি প্রয়োজন । জলাবদ্ধ জমি, লবণাক্ত মাটি একেবারে অনুপযুক্ত এই চাষের জন্য । তবে মাটি যদি বেলে দোঁ-আশ হয় তাহলে আর ফিরে তাকাতে হবে না । অবশ্যই খেয়াল রাখবেন জমিতে যেন কোনোভাবেই জল না দাঁড়ায়।
- বাণিজ্যিকভাবে (Business Purpose) তুলসী চাষ করার জন্য বীজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলেই হয় না । তৈরি করতে হয় চারা। ২ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্বে এক একটি বীজ বপন করা হয়। আর তার ছয় থেকে সাত সপ্তাহ পরে সেই চারাগুলিকে এনে জমিতে রোপণ করা হয়।
- তুলসী গাছ চাষ করার জন্য রাসায়নিক সারের ওপর তেমন ভাবে নির্ভর হয়ে থাকতে হয় না। জৈব সার প্রয়োগ করতে পারলেই দারুণ ফলন দেখা যায় তুলসী গাছের।
- সারা বছর ধরে তুলসী গাছ চাষ করা যায় । তাই গরমের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে সেচ দিতে হবে কিন্তু বর্ষায় তুলসীর জমিতে সেই ভাবে সেচের প্রয়োজন হয় না।
- তুলসী গাছে লিফ রোলার নামক একটি পোকার উপদ্রব দেখা যায়। এছাড়াও পাউডারি মিলডিউ ও ছত্রাকের আক্রমণ হয় চারা গাছে। অনেক সময় শিকড় পচে গিয়ে চারা গাছটি নষ্ট হয়ে যায় । তাই এই দিক গুলিতে নজর রেখে প্রয়োজন মত কীটনাশক জলে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে নিয়মিত।
- চারা রোপণ করার মাস তিনেক পরে সেই চারা থেকে শাখা এবং পাতা সংগ্রহ করা যায় । গাছটির পুনর্জন্মের জন্য মাটির উপরে কমপক্ষে ১৫ সেন্টিমিটার থাকলেই যথেষ্ট।
যেহেতু ভেষজ বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করার জন্য তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয় তাই বাজারে এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বাণিজ্যিকভাবে তুলসী চাষ করলে তিন মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয় খুব জোর ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। সারা বছর ধরে চাষ করা যায় তাই তিন মাস অন্তর অন্তর লাভের আশঙ্কা থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন কসমেটিকস তৈরি করতেও তুলসী পাতার ব্যবহার শুরু করা হয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম