।। প্রথম কলকাতা ।।
Christmas Day 2022: বড়দিন আসা মানেই কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে ইউটিউবে নতুন কেকের রেসিপি খোঁজা। বড়দিনে কেকের গন্ধে ভরে ওঠে ঘর। বাঙালির বড়দিন উদযাপনের সেকাল আর একালের মাঝে বিস্তার পার্থক্য। যখন সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অনলাইনের এত রমরমা ছিল না, তখন বাঙালি কেমন ভাবে কাটাতো বড়দিন? একালে বড়দিন আসলে সোশ্যাল মিডিয়া ভরে ওঠে লাল পোশাক পরা ছবি আর পার্টির নানান ভিডিওতে। যে কোন উৎসব মানেই মিলনের মেলা। সেখানে দেওয়া নেওয়া হবে গিফটের। এখনো শিশুরা বড়দিনে অনেক আশা করে মোজা ঝোলায়। যার মধ্যে সান্তা ক্লজ লুকিয়ে গিফট দিয়ে যায়। যদিও এই সান্তা ক্লজ আসলে শিশুদের প্রিয়জনরাই।
খ্রিস্টান ধর্মের শ্রেষ্ঠ উৎসব ক্রিসমাস হলেও, গোটা বিশ্ব এই সময়ে আনন্দে গা ভাসায়। ভিড়ে গমগম করে কলকাতার পার্ক স্ট্রিট। পুরোদস্তুর উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালি। মোমের আলো, ক্যারোলের সুর আর আলোর ঝলকানিতে তৈরি হয় এক অভাবনীয় পরিবেশ। পাশ্চাত্যের ক্রিসমাস বাঙালির কাছে ধরা দেয় বড়দিন হয়ে। শীতের আমেজে হিমশীতল হাওয়া গায়ে মেখে সবাই বাইরে বেরিয়ে পড়েন পার্টি করতে। কেউ বা বাড়িতে আয়োজন করেন বিশাল পার্টির। ব্যস্ততাময় জীবনের ইঁদুর দৌড়ের মাঝে একটু ফুরসত মিলতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উপচে পড়ে শান্তা টুপির সেলফি।
এক সময়ের ডাল-ভাতে বাঙালি আজ মজেছে চাইনিজ আর বিরিয়ানিতে। ক্রিকেট, কাবাডি, ফুটবলের জন্য মাঠে আর আগের মত হুটোপুটি নেই। ঘরকুনো মোবাইল গেমেই ব্যস্ত বর্তমান প্রজন্ম। বড়দিন আসলে মোবাইল ভরে উঠে সান্তা ক্লজ আর পার্টির ছবিতে। দোকানে দোকানে দেদার বিকোয় ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর নানান জিনিস আর রংবেরঙের উপহার।
একটা সময় ছিল যখন গির্জা বা কোন সংস্থা কেকে বিলি করলে মানুষ লম্বা লাইন দিয়ে খেতে কোন সংকোচ বোধ করতেন না। এমনকি কোন কোন সংস্থার বাইরে রীতিমত কেক নেওয়ার জন্য মানুষের ভিড় জমে যেত। এখন মানুষ সেই লাইনে দাঁড়াতে একটু সংকোচ বোধ করেন। তার বদলে বাড়িতে কিনে নিয়ে আসেন তিন চার রকমের বাহারি কেক। আগে যে পাড়ায় টিমটিম করে একটা পুজো হত, এখন সেই পাড়ায় ১২ মাসের ১৩ পার্বণে ১৩ টি উৎসব পালিত হচ্ছে ধুমধাম করে। বর্তমানের জৌলুসে ভরা উৎসবে সবই ঠিকঠাক আছে, কিন্তু কোথাও যেন ছেদ পড়েছে আন্তরিকতায়।
তখন বড়দিন বলতে এত পার্টির রমরমা ছিল না। সবাই জানত, বড়দিন এলে কেক খেতে হয়। সকাল শুরু হত কেক দিয়ে। এইভাবেই পালিত হত বাঙালির বড়দিন। টুজি নেটওয়ার্ক এখন ফাইভ-জি হয়েছে। ভবিষ্যতে হয়ত এই জিয়ের সংখ্যা আরো বাড়বে। খুব দ্রুত মানুষের ফোন ভরে উঠবে ক্রিসমাসের শুভেচ্ছায়। বহু মানুষের ছোটবেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ক্রিসমাস মানেই বাপুজি কেক, এখন তার উত্তরণ ঘটেছে মিও আমোরে-তে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম