।। প্রথম কলকাতা ।।
Mustard cultivation: পশ্চিমবঙ্গ জনপ্রিয় শীতকালীন ফসল হল সরষে। রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই সরষে চাষ হয়।অপেক্ষাকৃত কম খরচে এই চাষ হয়। অর্থকরী হওয়ায় রাজ্যে বাড়ছে সরষে চাষ। নিয়ম মেনে চাষ করলে অনেক বাড়তি ফলন পাওয়া যায়।
আমাদের রাজ্যে মূলত তিন ধরণের সরষে চাষ হয়। এগুলি হল টোরি সরষে, শ্বেত সরষে এবং রাই সরষে। সব জাতের সরষের চাষ পদ্ধতি অনেকটা একই রকম। সরষের চাষ করার জন্য জল নিকাশির সুবিধাযুক্ত জমি প্রয়োজন। এছাড়াও মাটি হতে হবে বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ। আশ্বিনের শেষ থেকে কার্তিকের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সরষে রোপন করা যায়। তার আগে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। মাটিতে যদি রস কম থাকে তাহলে জল সেচ করে চাষের জন্য উপযুক্ত জমি তৈরি করতে হবে। এরপর বীজ শোধন করতে হবে।
জমিতে সেচের সুবিধা থাকলে হালকা সেচ দিতে হবে। ভারী মাটি হলে সেচের আগে চাপান সার দিতে হবে। হালকা মাটির ক্ষেত্রে সেচের পর জল থিতিয়ে গেলে এই সার ছড়িয়ে দিতে হবে। শেষ চাষের আগে একর প্রতি ২ টন জৈবসার ভালোভাবে মাটিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এছাড়া বীজ বপন করার ৩০ থেকে ৪৬ দিন পর নাইট্রোজেন, ফসফেট, পটাশ নির্দিষ্ট অনুপাতে প্রয়োগ করতে হবে।
তবে সরষে চাষের ক্ষেত্রে খরচ সেরকম না থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই গাছে পোকার আক্রমণ বা বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। তাতে উৎপাদন কমে যায়। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা। রোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাদা মরিচা রোগ, শিকড় ফোলা রোগ, ধ্বসা রোগ। ধ্বসা রোগে যার ফলে সরষের ফলন ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। রোগের পাশাপাশি পোকামাকড়ের আক্রমণের ফলেও সরষের ফলন অনেক কমে যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাব পোকা, করাত মাছির লার্ভা, হীরক পিঠ মথ প্রভৃতি ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণের ফলে সরষের ফলন ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ধ্বসা রোগের ক্ষেত্রে আইপ্রোডায়ন প্রতি লিটার জলে ১ গ্রাম বা মেটালাক্সিল ও ম্যানকোজেব এর মিশ্রণ লিটার প্রতি জলে ২.৫ গ্রাম মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া শিকড় ফোলা রোগের ক্ষেত্রে বীজ বোনার ১ মাস আগে জমিতে চুন ছিটাতে হবে। পোকামাকড়ের আক্রমণের ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে ডাইমিথয়েট বা থায়ামেথক্সাম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ডাইমিথয়েট প্রতি লিটার জলে ২ মিলি মেশাতে হবে এবং থায়ামেথক্সামের ক্ষেত্রে ১/৩ গ্রাম হারে মেশাতে হবে। ভালো করে এই মিশ্রণ তৈরি করার পর সরষে গাছের ওপর স্প্রে করতে হবে। তবে কীটনাশক স্প্রে করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে অর্থাৎ যেকোনও সময় স্প্রে করলে চলবেনা কীটনাশক স্প্রে বিকেলের দিকে করা উচিত। না হলে সে ক্ষেত্রে মৌমাছির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম