মাথার চুল ছোট করে কাটা। লগ্নজিতার (Lagnajita Chakraborty) নাম শুনলেই মনে পড়ে বসন্ত এসে গেছে। রয়েছে বেশ কিছু জনপ্রিয় গান। এক কথায় বলতে গেলে যাঁর গান শোনা মাত্রই সকলেই চিনতে পারেন, বুঝতেও পারেন। এক অন্য স্বাদের সুর তাঁর কণ্ঠের পরিচিতি হয়ে গিয়েছে প্রথম দিন থেকেই। হাতে গোনা কয়েকটি গানই যথেষ্ট ছিল তাঁকে জনপ্রিয়তার কেন্দ্রে আনার জন্য। আজ তাঁর পরিচিতি দেশ জুড়ে। তবুও লগ্নজিতা (Lagnajita Chakraborty) বরাবরই খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেই পছন্দ করেন। খুব একটা বিলাসবহুল জীবনে তিনি বিশ্বাসী নন। গানই তাঁর ভালোবাসা। উচ্চাকাঙ্খা না থাকায় বলতে পারেন, আমি যেটা, সেটা নিয়েই খুব কমফর্টেবেল। পর পর আমার দুটো গান বেরিয়েছে। একটা হিট করেছে একটা করেনি।খুবই দুঃখ হয়েছে। কি করবো, কিছু তো করার নেই। আমার বাবা তো প্রডিউসার নয়, যে ওটাকে পুস করাতে পারবো। জোর করে সেরার জায়গা ধরে রাখতেই হবে এমন ইচ্ছে নেই তাঁর। তাই বললেন, যদি এখন এক, দুই, তিনে থাকিও। দশ বছর পর তো মানতেই হবে। ঠিক আছে, একটু আগে নেমে গেলে আগে নেমে গেলাম। অসুবিধা নেই। লগ্নজিতা এমনই। সত্যিটাকে মেনে নিতে পারেন সহজ করে।
সাত্যকি সাহার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন গায়িকা। মুম্বইতে খুব সাধারণভাবেই থাকেন তিনি। তবে রান্নাটা ঠিক আসে না। সকালে উঠে ঘর গোছানো তাঁর প্রথম কাজ। এরপর আর পাঁচজনের মতো বাজার করেন তিনি। সবটাই করেন একা হাতে। কারণ তাঁর স্বামী সাত্যকি তাঁর সঙ্গে থাকেন না সপ্তাহের পাঁচদিন। শনি আর রবিবার সঙ্গে থাকেন তাঁর স্বামী। পছন্দের বেশ কিছু পদ তিনি রান্না করে দিয়ে যান। যা দিয়ে বুধবার অবধি চলে যায় লগ্নজিতার। এরপর কোনও রকমে একটা দিন কাটিয়ে ফেললেই কেল্লা ফতে।আবারও সাত্যকি ফিরে এসে রান্না করেন লগ্নজিতার জন্য। এতো বড় একজন শিল্পী। অথচ জীবন যাপন দেখুন, কতটা সহজ সরল। একেবারেই অবাক করার মতো।
বাবার উৎসাহে কলকাতার রাস্তায় স্কুটি বা গাড়ি চালানো তাঁর ছোটবেলার অভ্যেস। থেকে থেকেই মিষ্টি হাসেন লগ্নজিতা। হাসলে গালে টোল পড়ে সেন্ট জেভিয়ার্সের মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পাশ করা তরুণীর। মোহের পেছনে ছোটেননি কোনও দিনই। বরং জীবনটাকে প্ল্যানমাফিক এগিয়ে নিয়ে চলায় বিশ্বাসী বিসমিল্লা-প্রিয় এই গায়িকার।
একটা গাড়ি কিনতে হবে, বাড়ি কিনতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, এমনটা অবলীলায় বলতে পারেন গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী (Lagnajita Chakraborty)। যেটুকু আছে তা নিয়েই ভালো থাকতে চান লগ্নজিতা। এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর এই কথা মন ছুঁয়ে গেছে অগণিত ভক্তের। সবাই এমন ভাবনার জন্য বাহবা দিচ্ছেন শিল্পীকে। আসলে আমরা অনেকেই বোধহয় শুধুই উচ্চ আকাঙ্খার দিকে ছুটেই চলেছি। কিছুতেই যেন শান্তি নেই। একটা দুটো ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি সব চাই। সেই চাওয়ার যেন শেষ নেই। আর সেই সোনার হরিণ ধরতে গিয়ে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি অনেকেই। অথচ যদি লগ্নজিতার (Lagnajita Chakraborty) মতো ভাবতে পারতেন. তাহলে বোধহয় জীবনটা হতো অনেক শান্তির। অনেক আনন্দের।