।। প্রথম কলকাতা ।।
Groom Sell : ভ্যানে চাপিয়ে বিক্রি হচ্ছে বর। রোগা মোটা, লম্বা বেঁটে, কালো সাদা। যেমন চাইবেন মিলছে তেমন বর। পরনে ধুতি পাঞ্জাবি, মাথায় টোপর ফ্রি। শুধু কিনে নিয়ে গিয়ে ছাদনাতলায় বসানোর অপেক্ষা। একেবারে রেডিমেড বলা যেতেই পারে। বিক্রি করা হচ্ছে ভ্যানে বসিয়ে। দামও নাগালের মধ্যেই। পাঁচশো থেকে পাঁচ হাজার টাকা। তবে পাঁচশো টাকার বরের কোনও গ্যারান্টি নেই। যে কোনও দিন পালাতে পারে। বাকিদের ওপর চোখ বুজে ভরসা করা যায়। শুধু বুক ঠুকে কেনার অপেক্ষা। সস্তার বর, বাসন মাজা, ঘর মোছা সব কাজই করানো যাবে।
আবার সদ্য গোঁফের রেখা ফোটা, ফর্সা হ্যান্ডসাম বরও আছে। দাম দু হাজার টাকা। পাঁচ হাজারে পাবেন গ্রাজুয়েট অভিজ্ঞ বর। তবে একটার বেশি কিনতে পারবেন না কেউই।তা হলে আর অপেক্ষা কিসের? বিদেশ বিভুঁই ঘুরে পাত্র খোঁজার দরকার নেই। যেমন প্রয়োজন তেমন একটা বর কিনে এনে সাতপাকে ঘুরিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে। কিন্তু কোথায় মিলছে এই বর?
এখন আর সময় নষ্ট করে বাজার যেতে হয় না। ভ্যান রিকশয় পসরা সাজিয়ে শাক সবজি-মাছ সবই আসে বাড়ির দরজায়। তেমনই পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে বর! ডেকে হেঁকে চলছে বর ফেরি। অবিশ্বাস্য এই কাণ্ডে হুলুস্থুল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। মাইক করে দাম হাঁকাও চলছে।
৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা, বিভিন্ন দামের বর রয়েছে এই ভ্যানে। দরাদরি করবেন না। তাতে দাম কমও হবে না। বেশিও হবে না। ইনস্টলমেন্টের ব্যাপার নেই। নগদে কিনতে হবে। চাইলে গুগল পে করতে পারেন। শুধু কোনটা নেবেন তা বাছাই করার অপেক্ষা। বেশি দেরি করলে হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। দামে কম, মানে ভালো। প্রত্যেকেই বেশ চটপটে, নেশাভাঙ নেই। সদ্য জামাইষষ্ঠীতে ভাড়া গিয়েছিল তারা। রিপোর্ট ভালো।
খণ্ডঘোষের বোসপাড়া এলাকায় এই বর ফেরিকে ঘিরে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বুড়ো শিবের গাজন উৎসব উপলক্ষে প্রতি বছর রঙ্গ তামাশার আয়োজন হয় এখানে। তিন দিনের এই গাজনকে ঘিরে গোটা গ্রাম মেতে ওঠে উৎসবে। এবছর গাজন উপলক্ষেই এরকম বর বিক্রির আয়োজন করা হয়। মজা করে কেউ কেউ বললেন, এ যেন একেবারে দুয়ারে বর পরিষেবা! খণ্ডঘোষের রায়পাড়া, ভট্টাচার্যপাড়া ও বোসপাড়া মিলিয়ে পুরোনো রীতি মেনে আয়োজন হয়ে আসছে ৩ দিনের বুড়ো শিবের গাজন।
এই এলাকার ১০০-১৫০ জন সন্ন্যাস গ্রহণের পর অংশ নেন বুড়ো শিবের পুজোপাঠে। সন্ন্যাসীরা এই অনুষ্ঠানে সং সেজে বিভিন্ন চরিত্র ও কাহিনী ফুটিয়ে তোলেন। সেই মতোই এবার কয়েকজনকে বর সাজানো হয়েছিল। অনেক দূর থেকে মানুষজন বুড়ো শিবের গাজনে ভিড় করেন। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই বুড়ো শিবের গাজন। নির্বাচনের জন্য এ বার গাজনের তারিখ একটু পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেখানে নজর কাড়লো বর ফেরি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম