।। প্রথম কলকাতা ।।
Panchayat Season 3: ফুটপাতে কাটত রাত, রেলস্টেশনে ঘুম! একটা সময় তো খাবার অবধি জুটতনা পঞ্চায়েতের ‘প্রহ্লাদ চা’র। মাত্র ৭০০ টাকার মাস মাইনাতে উদয়াস্ত পরিশ্রম করতেন ফয়জল মালিক। পঞ্চায়েতের ‘প্রহ্লাদ চা’র জীবনকাহিনী যেন আস্ত একটা সিনেমা। বাস্তবের ফয়জল মালিকের জীবন যন্ত্রণার কথা শুনলে ভিজবে আপনার চোখও। ভাবতেও পারবেন না যে, ঠিক কতটা পরিশ্রম করে এই জায়গায় এসেছেন অভিনেতা। আমাদের আজকের ভিডিওতে শোনাবো আপনাদের প্রিয় ‘প্রহ্লাদ চা’র জীবন সংগ্রামের কাহিনী।
‘পঞ্চায়েত’-এর বাকি সিজনের মত ফুলেরা গ্রাম এবার আরও পরিণত। সচিবজি থেকে প্রধানজি, সকলেই নিজ নিজ জায়গায় দারুণ সাবলীল। তবে তৃতীয় মরশুমে যেন সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন ‘প্রহ্লাদ চা’। এই চরিত্রে ফয়জল মালিককে শো স্টপার বললেও অত্যুক্তি হবেনা। কিন্তু জানেন কি ফয়জল ঠিক কতটা সংগ্রামের পর এই স্থান অর্জন করেছেন। তার জীবনের সংগ্রাম কাহিনী কোনও সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয় কিন্তু।
একটা সময় তো কেউ ভাবতেই পারেননি যে, রাস্তায় ঘুমানো এই ব্যক্তি কখনও এতটা নাম কুড়োতে সক্ষম হবেন। একটা সময় তো টাকার অভাবে পেটে খাবারটাও জোটেনি তার। শোনা যায়, পড়াশোনাতেও তেমন ভালো ছিলেননা। যে কারণে মাঝপথে সেটাও থামিয়ে দেন। আগুপিছু কিছু না ভেবেই পাড়ি দেন মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে।
হাতে একটা পয়সাও নেই। বাড়ি থেকে যে টাকা পেতেন তাতে অর্ধেক মাসও চলতনা। অভাবের সংসারে আরও টাকার জন্য বলবেনই বা কীভাবে? তাই বাধ্য হয়ে রাস্তাকেই করে নিয়েছিলেন ঘর। রাতে ঘুমাতে যেতেন রেল স্টেশনে। ১০ টাকার বিনিময়ে তাকে স্টেশনেই ঘুমাতে দিত রেল কর্তৃপক্ষ। তবে জানেন কি নিজের এইসব সংগ্রামের দিন নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে চাননা ফয়জল।
আসলে কী বলুন তো, এটাই হয়ে থাকে। যারা সত্যিই দুর্দিন পার করে আসেন, তারা আর দুর্দিনের বড়াই করতে চাননা। তবে সত্যিটা তো সত্যিই থেকে যায়। শোনা যায়, তিনি প্রথম কাজ পান ২০০৪ সালে। সাহারা চ্যানেলে প্রোমো এডিটরের কাজে ঢোকেন তিনি। এই কাজটা নাকি তাকে পাইয়ে দিয়েছিলেন কৈলাশ খের। সেই সময় মাস গেলে হাতে পেতেন মাত্র ৭০০ টাকা।
তাহলেই ভাবুন, কিভাবে দিন চালাতেন তিনি। আজ থেকে ২০ বছর আগেও ৭০০ টাকার ভ্যালু কিন্তু খুব বেশি ছিলনা। আর তাও আবার মুম্বাইয়ের মত একটা জায়গায়। তবে ভাগ্য বদলে যায় অনুরাগ কাশ্যপের সাথে দেখা হওয়ার পরপরই। তাকে দেখা মাত্রই গ্যাংস অফ ওয়াসিপুরের ইনস্পেক্টর গোপাল সিং-র চরিত্রে ভেবে ফেলেন অনুরাগ। আর এই একটা কাজেই বদলে যায় ফয়জলের জীবন।
প্রথম সিরিজেই দূর্দান্ত অভিনয়। দর্শক তো বটেই, নজর কাড়েন বলিউড নির্মাতাদেরও। হাতে আসে পঞ্চায়েতের অফার। ব্যস, বাকিটা তো ইতিহাস। ফুলেরা গ্রামের ‘প্রহ্লাদ চা’ এখন সবার মনে। সন্তান হারানো পিতার হাহাকার যেন একেবারে বাস্তব। প্রতিটা ডায়লগ, প্রতিটা ইমোশনের মধ্যে দিয়ে ফয়জল মালিক বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি একজন জাত অভিনেতা। সেই সাথে এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে, প্রতিভা থাকলে তাকে দমানো অসম্ভব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম