।। প্রথম কলকাতা ।।
Cannes Film festival: অনুসূয়া সেনগুপ্ত এই নামটা এখন মুখে মুখে। কেন? কারণ তিনি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে প্রথম ভারতীয় অভিনেতা হওয়ার জন্য শিরোনামে রয়েছেন। জানেন তিনি কখনোই প্রথমে অভিনেত্রী হতে চাননি। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতকে গর্বিত করলেন যাদবপুরের ছাত্রী। অনুসূয়াই প্রথম ভারতীয় যিনি কান উৎসবে আনসারটেন রিগার্ড বিভাগে পুরস্কার পেলেন। কে এই অনুসূয়া সেনগুপ্ত? সবটা জানাবো আপনাদের।
কলকাতার বাসিন্দা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিজেকে আবিষ্কার করতে চেয়েছিলেন। অনুসূয়া অঞ্জন দত্তের ২০০৯ সালের ছবি মেডলি বাঙালি তে একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।২০১৩ সালে মুম্বাইতে চলে যান। তার আগে কিছু সময়ের জন্য থিয়েটারে অভিনয় করেছিলেন।
সেখানে তিনি একটি প্রোডাকশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। অনুসূয়া মাসবা মাসাবার ভিজ্যুয়াল প্যানোরোমাতেও তাঁর দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু এমন একটা সময় ছিল যখন সে মুম্বাইয়ে এত কিছুর মাঝেই হারিয়ে গিয়েছিলেন। নিজেকে খুঁজে পেতেন না। ক্লাসটরোফোবিক হয়ে পড়েছিলেন। দম আটকে রাখত, প্রায় বাক স্বাধীনতাহীন বলে মনে হয়েছিল তাঁর। বাবার পরামর্শে গোয়ায় চলে যান তিনি। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে তার বাবা তার হাত ধরে জিজ্ঞাসা করেছিলেন সবচেয়ে খারাপ কি হতে পারে।
শ্যাম বেনেগাল এর মন্থন মুক্তির প্রায় ৪৮ বছর পর এবার ভারতীয়দের জন্য বেশ সুন্দর মুহূর্ত ছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে। অনুসূয়া সেনগুপ্ত তাঁর জয়ের সাথে পুরস্কার জিতে প্রথম ভারতীয় হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন। গোটা দেশ এই জয়ের খবর মেতে উঠেছে। রাণবীর সিং, আলিয়া ভাট, অর্জুন কাপুরের মতো অভিনেতারা তাকে এবং ছবিটি কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশের সকলের ভালোবাসা দেখে তিনি অবাক। সবাইকে গর্বিত করতে পেরে অনুসূয়া গর্বিত।
২০২০ সালে কার কাছে সুযোগ আসে দ্য শেমলেসের। অভিনেত্রী এটার জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। ছবিটি পরিচালনা করেন কনস্ট্যান্টিন। ছবির প্রেক্ষাপট ভারত। দিল্লির এক গণিকালয় থেকে পালায় অনুসচয়া অভিনীত চরিত্র। সেখান থেকেই শুরু গল্প। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুস্বার বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা কলকাতাতেই। মুম্বাইয়ে ছবির আর ডিপার্টমেন্টে কাজ শুরু করেন তিনি। মুম্বাইয়ে দম বন্ধ লাগত অনুসূয়ার। সেখান থেকে পাড়ি জমান গোয়ায়। তারপর সেখানেই প্রেম ও সংসার। একদিন আচমকায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় হয় বুলগেরিয়ান পরিচালক কনস্ট্যান্টিন বোজানভের সঙ্গে। একটি ভিডিও শুট করে পরিচালক কে পাঠানো মাত্রই সিলেক্ট হয়ে যান তিনি।
বাকিটা ইতিহাস।
অনুষরা তার এই পুরস্কার ডেডিকেট করেছেন বিশ্বের নানান প্রান্তিক সম্প্রদায়কে। সমাজের অন্যান্য আলোকিত সম্প্রদায় অনৈতিকভাবে যে লড়াই প্রান্তিক মানুষদের উপর চাপিয়ে দেয় সেই লড়াই সাহসিকতার সঙ্গে লড়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের কুর্নিশ জানান অনুসূয়া সেনগুপ্ত। দুদিনের বিশ্রাম শেষে ফের কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। কানের মঞ্চে ভারত তথা বাংলার নাম উজ্জ্বল করা অভিনেত্রী। মানতেই হবে অনুসূয়ার এই অসামান্য সাফল্য শুধু অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ারে নয়, বিশ্বমঞ্চে ভারতীয় চলচ্চিত্র এক অন্য মাত্রা দিয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম