।। প্রথম কলকাতা।।
Muhammad Hasan Mahmud: শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে স্টার সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘মোশাররফ ভাই অনুরোধ করেছেন, হিন্দি সিনেমা যেন দেশে আনা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি নেই তাতে। শিল্পীরা যদি একমত হন, আমাদের সরকার কোনও আপত্তি জানাবে না’।
নিজে রাজনৈতিক কর্মীর পাশাপাশি কলেজ জীবন থেকে সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন হাছান মাহমুদ। নাট্যদলের সদস্য ছিলেন তিনি। ‘সময়’ টিভি সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী গতকাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেছেন, ‘আপনারা সবাই জানেন বাংলা সিনেমা অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছে। আমরা অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করে এখানে পৌঁছেছি। ১৮ বছর আগে সিনেপ্লেক্সের প্রথম শাখা যখন হয়, তখন আমাদের বাংলা সিনেমা অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার আমাদের সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে’।
তাঁর কথায়, ‘আমি অবাক হয়েছি। অক্টোবরে কলকাতায় হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানে ‘হাওয়া’ ছবির টিকিটের জন্য মানুষ এক কিলোমিটার লাইন দিয়েছে। দুপুর দু’টোর শো’র জন্য লাইন পড়েছে সকাল ৯টা থেকে। এমন দৃশ্য দেখব আমি ভাবিনি। আমাদের অনেক সিনেমা বিশ্ব অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে’। তিনি বলেছেন, ‘সিনেমা শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে সিনেমা হল নির্মাণ ও বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো হল নতুনভাবে চালু করার জন্য এক হাজার কোটি টাকার স্বল্প সুদে ঋণ তহবিল চালু করেছে হাসিনার সরকার। সিনেমার অনুদানের অর্থ বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে ৪০ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দেওয়া হত, সেটি ৭৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে এবং সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে’।
‘BSS’ সংবাদমাধ্যম সূত্রে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি’র সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বালি আর্কেডের পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ ও আর্কেডের প্রধান নির্বাহী আফতাব আলাম শেঠ। বক্তৃতায় সম্প্রচার মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের বাংলা সিনেমা পৃথিবীর বিভিন্ন নামকরা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কার লাভ করেছে। সেইসঙ্গে আমাদের সিনেমায় যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন, আগের তুলনায় তাঁরা এখন অনেক বেশি ব্যস্ত।
পাশাপাশি স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ। তাঁর বক্তব্য, ‘তিনি শুধু সিনেমা হল বা সিনেপ্লেক্স বানাচ্ছেন না, সিনেমাও বানিয়েছেন। আমি আশা করব রুহেলের হাত ধরে সমগ্র বাংলাদেশে আরও অনেকগুলি সিনেপ্লেক্স নির্মিত হবে, যা মানুষকে নির্মল আনন্দ দেবে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে জীবন গড়তে শেখাবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে প্রত্যয়ী হওয়ার শিক্ষা দেবে সিনেমা। কারণ এটি এমন একটি মাধ্যম যার দরুন মানুষ কাঁদে-হাসে-ভাবে, আবার স্বপ্নও দেখে’।
এই মর্মে নিজের ছোটবেলার কথা সকলকে জানান সম্প্রচার মন্ত্রী। তিনি বলেন, ছোটবেলায় সিনেমা দেখে আমিও কেঁদেছি। এখনও সুচিত্রা সেনের সিনেমা দেখলে আমার কান্না আসে। সিনেমা নির্মল আনন্দ দেওয়ার জন্য। একইসঙ্গে দেশ গঠন করার ক্ষেত্রেও সিনেমা ভূমিকা রাখে। আমাদের স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক সিনেমা ভূমিকা রেখেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের অনেক সিনেমা দেশ গড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। ‘ওরা ১১ জন’, ‘আবার তোরা মানুষ হও’-এর মতো সিনেমাগুলি দেশ গঠন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। সিনেমা শিল্প মানুষকে আনন্দ দেওয়ার সঙ্গে, তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখে বলে আমি মনে করি। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘বাংলাদেশে ভারতীয় সিনেমা বিনিময়ের মাধ্যমে আসে, কিন্তু হিন্দি সিনেমা নয়। সবাই যদি একমত হয়ে বলে, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও বাধা নেই। শিল্পীদের একমত হতে হবে’।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম