।। প্রথম কলকাতা ।।
Afghanistan flash floods: পাহাড় মরুভুমির দেশ আফগানিস্তান। সেখানে হঠাৎ করেই প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চতুর্দিক। আফগানিস্তানে হঠাৎ করেই হড়পা বান। এক দিনের অতিবৃষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন। জলের তোড়ে ভেসে গেছে হাজার হাজার বাড়ি। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন হাজার হাজার আফগান।এককথায় আফগানিস্তানে চলছে মৃত্যু মিছিল। কিন্তু প্রশ্ন হল, পাহাড় মরুভূমির একটা খটখটে দেশে কীভাবে এত বৃষ্টি হচ্ছে? কীভাবে হড়পা বানে ভেসে যাচ্ছে আফগানিস্তান? কেন এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মরুদেশে?
কথায় আছে, আফগানিস্তান জয় করা সম্ভব হলেও তাকে দখলে রাখা অসম্ভব। কেন জানেন? কারণ দেশটির ভূ-প্রকৃতি এমন যে দখলদারদের খুব বেশিদিন এখানে টিকে থাকা মুশকিল। মূলত পাহাড় আর মরুভূমি দিয়ে ঘেরা এই দেশ। দেশটির উত্তর-পশ্চিম, পশ্চিম ও দক্ষিণের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো মূলত মরুভূমি ও পর্বতশ্রেণি। সেই সাথে পানীয় জল এবং খাদ্যের সঙ্কট লেগেই আছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে টিকে থাকা বেশ কষ্টকর।
এই মরুদেশে এক ফোঁটা বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মত অপেক্ষা করে থাকে সেখানকার বাসিন্দারা। আর এবার সেই শুষ্ক মরুদেশ আফগানিস্তানেই নেমেছে হড়পা বান। ধেয়ে এসেছে প্রবল দুর্যোগ। তালিবান সরকার স্বীকার করেছে দুর্যোগের কথা। সরকারি তরফে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত অবধি মৃতের সংখ্যা ছিল ৬২ জন। অবশ্য সংবাদ সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে অন্য কথা। এএফপি দাবি করেছে আফগানিস্তানে এই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের বলি অন্তত ২০০ জন। এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।
সংবাদসংস্থা এএফপি আরও জানাচ্ছে, শুক্রবার সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় উত্তর আফগানিস্তানের বাঘনাল প্রদেশে। সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে বৃষ্টির তেজ। বৃষ্টির পরিমাণ এতটাই ছিল যে, মাত্র একদিনের বৃষ্টিতেই ভেসে গেছে কয়েক হাজার বাড়ি। ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষিক্ষেত্রেও। নেই ইন্টারনেট, দেখা দিয়েছে পানীয় জল এবং খাদ্যের সঙ্কটও। সবে মিলিয়ে রীতিমত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে মরুদেশ আফগানিস্তানে।
খবর আসছে, কেবল বাঘনাল প্রদেশের জাদিদ জেলাতেই দেড় হাজারের বেশি ঘর ভেঙেছে। কেবলমাত্র ঐ প্রদেশেই প্রায় ১০০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জাদিদের পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের তাকহার প্রদেশেও। সেই সাথে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে বাদাকশান প্রদেশ, ঘোর প্রদেশ এবং হেরারের বিস্তীর্ণ এলাকা।
আফগানিস্তান সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। বন্যা কবলিত এলাকায় পোঁছে গেছে উদ্ধারকারীরা। তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এতবড় বিপর্যয়ের মোকাবেলা করার মত ক্ষমতা আফগানিস্তানের কাছে নেই। দেশটির কাছে না আছে এই ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করার মত মেডিক্যাল ব্যবস্থা, না আছে পরিকাঠামো খাতে ব্যয় করার মত অর্থ।
এরমধ্যেও মজার বিষয় হল, দেশে এতবড় বিপর্যয় আসা সত্ত্বেও তালিবান সরকার ব্যস্ত গৃহযুদ্ধ নিয়ে। কারণ মসনদ দখলের পর এখনও এখনও গৃহযুদ্ধ লেগেই রয়েছে দেশটিতে। এমন আবহে এই ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাথে কীভাবে লড়াই করবে আফগানরা? সেটা ভেবেই দিশাহারা মরুদেশের সাধারণ মানুষ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম