।। প্রথম কলকাতা ।।
Ambubachi: জানেন অম্বুবাচীতে মহামায়ার যোনিপূজা ঘিরে আর কী রহস্য রয়েছে? কামাখ্যা মন্দিরের এই রহস্য শুধু আপনিই নন, গোটা বিশ্বের কাছেই অজানা। জানেন অম্বুবাচীতে কামাখ্যায় ঠিক কোন রীতি পালন হয়? কোন বিশেষ প্রসাদকে ঘিরে ভিড় জমায় ভক্তরা? সতীপীঠ কামাখ্যা মন্দিরের এই ইতিহাস জানলে গায়ে কাঁটা দেবে।
তন্ত্রপীঠ কামরূপ কামাখ্যা। পূর্বভারতের এই মন্দিরের আনাচে কানাচে রহস্য। কথিত আছে, এই মন্দিরে গুপ্ত সাধনা করে থাকেন তান্ত্রিকরা। অনেকেই বলেন, এই মন্দির জাদুবিদ্যা, মোহিনীবিদ্যা, ডাকিনীবিদ্যা সহ একাধিক গুপ্তসাধনার পীঠস্থান। জেনে অবাক হবেন যে, এখানে কোনও দেবী মূর্তি বা বিগ্রহের পুজো হয়না। বরং মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে এক যোনি-আকৃতিবিশিষ্ট পাথর। যে পাথর সারা বছরই ফুল দিয়ে ঢাকা থাকে। সেই পাথরকেই নিষ্ঠাভরে পুজো করে থাকে ভক্তরা। এর এক পৌরাণিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। এই কাহিনী হয়ত আপনারা মা ঠাকুমাদের থেকে অনেকেই শুনেছেন।
কথিত আছে, বড়োই স্বামী সোহাগী ছিলেন সতী। স্বামীর নিন্দা একেবারেই সহ্য করতে পারতেন না তিনি। পিতার মুখে স্বামীর অপমান শুনে পিতৃগৃহেই প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন দেবী। ওদিকে খবর কানে যেতেই ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন মহেশ্বর।
দক্ষযজ্ঞ লণ্ডভন্ড করার পর শুরু হয় দেবাদিদেবের প্রলয় নৃত্য। এমন পরিস্থিতিতে কে থামাবে তাঁকে। প্রিয়াকে হারানোর শোকে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এমন আবহে মহাদেবের তাণ্ডব থামাতে বাধ্য হয়েই হাতে সুদর্শন চক্র তুলে নেন ভগবান বিষ্ণু। সুদর্শন চক্র ৫১ খন্ডে ভাগ করে সতীর দেহ। আর সেই সময়ই নাকি দেবীর যোনিখন্ড গিয়ে পড়ে কামাখ্যায়। যে কারণে আজও এখানে কোনও দেবী মূর্তির পুজো হয়না। পুজো হয় যোনী আকৃতির পাথরের।
তবে কেবল এই কাহিনীই নয়। এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য। যার কিছু কথা হয়ত আপনিও শুনে থাকবেন। কথিত ইতিহাস, অসমের গুয়াহাটি শহরের পশ্চিমাংশে নীলাচল পর্বতে অবস্থিত কামাখ্যার এই মন্দিরটি ৫১ পীঠের অন্যতম। যোনিপীঠ কামাখ্যাকে ঘিরে সাধুসন্ত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেরই আগ্রহ বিস্তর। তবে অম্বুবাচীর সময় এই মন্দিরকে ঘিরে বিশেষ কৌতুহলী হয়ে ওঠে সবাই।
শোনা যায়, বছরের এই সময়টা তিনদিন ঋতুমতী অবস্থায় কাটান দেবী মহামায়া। যে কারণে এই সময়ে নাকি আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের দরজা। নিষিদ্ধ হয় দেবীর দর্শন। বন্ধ থাকে দেশের অধিকাংশ মাতৃমন্দির। হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন, বাড়ির মহিলারাও এই সময় পালন করেন অম্বুবাচী ব্রত। সেই সাথে এই সময়টায় এমনকিছু রহস্যময় ঘটনা ঘটে, যার কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেন না কেউই। জানেন কী সেই ঘটনা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথিত আছে, বছরের এই বিশেষ সময়টাতেই রক্তের মত লাল হয়ে ওঠে ব্রহ্মপুত্রের জল। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী ঋতুকালের প্রভাবেই এই বিশেষ পরিবর্তন হয়। শোনা যায়, অম্বুবাচীর আগে ভক্তরা যে সাদা কাপড় দিয়ে পুজো করে আসেন, তিনদিন পর তা সম্পূর্ণ লাল হয়ে যায়। ভক্তদের বিশ্বাস, ঐ কাপড় বাড়িতে রাখলে কেটে যায় সমস্ত বাধা বিপত্তি। ভক্তরা তো এটাও বিশ্বাস করেন যে, এই সময় দেবীর কাছে মনপ্রাণ দিয়ে কিছু চাইলে দেবী কাউকেই ফেরান না। পূরণ করেন ভক্তদের মনস্কামনা। তাই সম্ভব হলে আগামী আষাঢ়ে অম্বুবাচীর সময় দেবী কামাখ্যার দর্শন করে আসতেই পারেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম