।। প্রথম কলকাতা ।।
Old Name of Tarapith: পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান তারাপীঠ। আমরা তো অনেকেই সেখানে যাই।কিন্তু ভেবে দেখেছেন কী এইসব এইস্হানের নাম কেন তারাপীঠ হলো? আগে কি নাম ছিল এই এলাকার?তারাপীঠ নামের পেছনে রয়েছে কোন কাহিনী? তারাপীঠের মন্দির প্রায় দুশো বছরের প্রাচীন।।তবে এখানের ইতিহাস দেড়হাজার বছরেরও বেশি। ।হিন্দু পুরাণ অনুসারে, শিবের রুদ্র তাণ্ডবে সতীর দেহের নানা অংশ বহু স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার থেকে ভারত জুড়ে বিভিন্ন সতীপীঠের জন্ম হয়েছে।
তারাপীঠকেও ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম বলে মনে করা হয়। সতীর চোখের ঊর্ধ্বনেত্রের মণি অর্থাৎ তারা পড়ে এখানে।সেজন্যই দ্বারকা নদীর পুব পাড়ের চণ্ডীপুর আজ তারাপীঠ। তবে তারাপীঠের আরও বেশি মাহাত্ম্য শক্তিপীঠ বা মহাপীঠ হিসাবে।
কথিত আছে, সাধক বশিষ্ঠ দ্বারকার কুলে মহাশ্মশানের থাকতেন। তিনি এখানে শ্বেত শিমূলের তলে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে তারামায়ের সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। ।ব্রহ্মার মানসপুত্র বশিষ্ঠর সিদ্ধপীঠ এই তারাপীঠ। আরও অনেকেরই সাধনপীঠ।।তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাধক বামাক্ষ্যাপা।।মহাপীঠ বলে পরিচিত এই মন্দির।
হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মস্থান। একদিকে ইতিহাস, দলিল-দস্তাবেজ আর অন্যদিকে পুরাণ ও লোককথা। সব মিলেই তারাপীঠের মন্দির এবং তারামায়ের কাহিনি এক অন্য স্থান দখল করেছে। তারাপীঠের বর্তমান মন্দির মল্লারপুরের জমিদার স্থাপন করেছিল। তবে গল্পের শুরু জয়দত্ত সদাগরের কথা থেকে। আজ থেকে প্রায় আটশো বছর আগের ঘটনা। তিনি ছিলেন বীরভূমের রত্নাগড় নিবাসী।একবার তিনি বাণিজ্যে প্রভূত সম্পদ, অর্থ লাভ করে বাড়ি ফিরছিলেন। চলার পথে অসুস্থতায় মৃত্যু হয় তাঁর প্রাণাধিক পুত্রের। সন্ধের পর থামলেন জঙ্গলে ভরা চণ্ডীপুরে।।মৃত ছেলের দেহ আঁকড়ে রাত জাগছেন তিনি। সেই সময় তারামা এক কুমারী মেয়ের রূপ ধরে নৌকার কাছে এসে দাঁড়ালেন। জয়দত্তকে জিজ্ঞাসা করলেন,‘ও বাছা, এত নৌকা ভরে কী নিয়ে চলেছো গো?’ পুত্রশোকে জয়দত্তের মন ভারাক্রান্ত ছিল। তাই তিনি রাগে মেয়েটিকে বললেন, ‘ছাই আছে’। সে কথা শুনে মেয়েটি ‘আচ্ছা’ বলে চলে গেলেন।
কিছুক্ষণ পরে জয়দত্ত দেখলেন তাঁর নৌকার সব বাণিজ্যসামগ্রী, অর্থ ছাইতে পরিণত হয়েছে। পরদিন সকালে মাঝিরা রান্নায় বসল। কাটা শোল মাছ কাছেই এক কুণ্ডের জলে ধুতে গেল তারা। কী আশ্চর্য!জলের স্পর্শ পেয়ে মাছটি জ্যান্ত হয়ে সাঁতরে চলে গেল। মাঝিরা দৌড়ে এসে জয়দত্তকে সব কথা জানাল।তখন পুত্রশোকে কাতর হয়ে বারবার তিনি বলতে লাগলেন, ’মাগো দেখা দে। আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে দে।’
সেদিন রাতেই স্বপ্নের মধ্যে ফিরে এলেন তারা মা। তাঁকে বললেন, কুণ্ডের জল ছেলের গায়ে ছড়ালেই সে বেঁচে উঠবে। সকালে জয়দত্ত তাঁর হারানো সম্পদ ফিরে পেলেন। বশিষ্ঠকুণ্ডের জল ছেলের গায়ে ছেটাতেই ছেলে ‘তারা তারা’ বলে বেঁচে উঠল। দেবীর আদেশে উগ্রতারার শিলামূর্তি ও চন্দ্রচূড় শিবের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করলেন তিনি।
https://www.facebook.com/100082942485331/posts/408489721925774/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
কেন এখানকার দেবী নাম তারা হল, তাই নিয়েও আছে পুরাণের এক কাহিনি। সমুদ্রমন্থনে ওঠা বিষ পান করে শিব হয়ে উঠলেন নীলকণ্ঠ। বিষে জর্জরিত তিনি। সেই যন্ত্রণা থেকে কীভাবে শিব মুক্তি পাবেন। সব দেবতা ‘দেবী তারার’ কাছে গিয়ে বললেন, শিবকে গরলমুক্ত করতে। ‘দেবী তারা’ তখন শিবকে আপন সন্তানের মতো কোলে নিয়ে আপন স্তন্য থেকে অমৃত পান করাতে লাগলেন। সেই অমৃত পান করে শিবের বিষজ্বালা দূর হল। সেই থেকে দেবীর নাম হল তারিণী। তিনি শিবকে তারণ করেছেন। এই বিশ্বকেও তিনি তারণ করেন। সেই তারিণী থেকেই তারা নামের সৃষ্টি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম