।। প্রথম কলকাতা ।।
Euphrates River: শুকিয়ে যাচ্ছে ফোরাত নদী! জলের নিচে গোপন সুড়ঙ্গ পৌঁছে গিয়েছে রহস্যময় দেশে। আগামীতে কোন বিপদ ঘনিয়ে আসছে? যার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই নদী? ফোরাত নদীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র বলে মনে করা হয়। আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে ঐতিহ্যবাহী মেসোপটেমিয়া সভ্যতা গড়ে উঠেছিল এই নদীর তীরে। আঞ্চলিক রাজনীতির কারণে ফোরাত যেমন আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে, তেমনি ধর্মীয় কারণে মুসলিম বিশ্বের ছড়িয়ে পড়েছে ফোরাতের নাম।
এই নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস। আজও একই ভাবে ইরাকে বয়ে চলেছে প্রাচীন ইউফ্রেটিস অর্থাৎ এই ফোরাত নদী। কিন্তু চিন্তার বিষয়, নদীটির সমৃদ্ধি আগের মত চোখে পড়ে না। জল অনেকটা কমে গিয়েছে। নদীর বুক ফুঁড়ে উঠে এসেছে এক সুরঙ্গ। ইরাকের প্রাচীনকাহিনীতেও কিন্তু এই নদীর নিচে এক সুরঙ্গের কথা বলা রয়েছে। যা নিয়ে রয়েছে প্রচুর লোককথা থেকে শুরু করে জনশ্রুতি। স্বাভাবিকভাবেই, এখন অনেকে মনে করছেন, ফোরাত নদীর গর্ভে যে সুরঙ্গের হদিশ মিলেছে এটাই প্রাচীন কাহিনীতে বর্ণিত সুরঙ্গ। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটা ধাপ। অনেকটা সিঁড়ির মত। যা দিয়ে নিচে নামা যায়। শোনা যায়, ব্যাবিলনের রানী নাকি এই গোপন সুরঙ্গ তৈরি করেছিলেন। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই সুরঙ্গর ঠিক ওপারে রয়েছে এক অন্যরকম দুনিয়া।
সত্যি বলতে, ইউফ্রেটিস বা ফোরাত শুধুমাত্র একটা নদীর নাম নয়। ইতিহাস, পুরান আর স্বপ্নে ঘেরা এক সত্তা। বহু কাল আর ইতিহাসের সাক্ষী এই নদী। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার। নদীটির ১০০০ কিলোমিটার বয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র তুরস্কের মধ্যে দিয়ে। তারপর প্রবেশ করেছে সিরিয়ায়। শেষমেষ গিয়েছে ইরাকে। তারপর দজলা নদীর সঙ্গে মিলে মিশেছে পারস্য উপসাগরে। একসময় এই নদী পারস্য সাম্রাজ্যকে ভাগ করেছিল পূর্ব আর পশ্চিমে। শুধু তাই নয়, এই নদী পরিচিত ছিল রোমান সাম্রাজ্যের পূর্ব সীমান্ত হিসেবে। পারস্যের মানুষ একে বলতো উফরাতু। আজকে যে ফোরাতের জল শুকিয়ে যাচ্ছে, প্রাচীনকালে কিন্তু এমনটা ছিল না। স্রোত ছিল অত্যন্ত প্রবল। নৌ পরিবহনের জন্য দুর্দান্ত। তাই তো মধ্যযুগে এখানে তৈরি হয়েছিল দুর্গনগরী থেকে শুরু করে বন্দর। বাগদাদের মধ্যে ছিল নিয়মিত পরিবহন জলপথ। প্রাচীনকালে বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও অন্যতম পথ ছিল এই নদী। এখন জল কমে যাওয়ায় ছোট না নৌকা ছাড়া সেভাবে অন্যান্য যান চলাচল করতে পারে না। তবে জল সরবরাহের জন্য নদীটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুরস্ক, সিরিয়া এবং ইরাক সেচ আর জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ফোরাতের জল ব্যবহার করে। জল ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। অববাহিকার আয়তন প্রায় পাঁচ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি প্রাচীন সেই ভবিষ্যৎবাণী আজ সত্যি হতে চলেছে? গত কয়েক বছর ধরে বহু পরীক্ষা চালিয়েছেন ইতিহাসবিদ থেকে শুরু করে প্রত্নতত্ত্ববিদরা। সত্যিই ফোরাত নদীর জল স্তর কমেছে অনেকটাই। আপনার কী মনে হয়? কতটা বিপদের আশঙ্কায় পৃথিবী?