।। প্রথম কলকাতা ।।
বার বার প্রকৃতির রোষের শিকার হতে হয় কৃষকদের।অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা আবহাওয়ার সঠিক খবর পান না।এই তো দেখলেন, নিম্নচাপের বৃষ্টিতে কিভাবে নষ্ট হল পাকা ধান। জলে ধুয়ে গেল কৃষকদের সব স্বপ্ন। আচ্ছা, এমন কোনও প্রযুক্তি যদি থাকে যেখানে আবহাওয়ার আগাম খবর সঠিকভাবে পাবেন চাষিরা। কিংবা, যদি জানা যায় কোন ফসল কখন কিভাবে চাষ করলে মিলবে প্রচুর ফলন। তাহলে? সেক্ষেত্রে তো কৃষিতে বিপ্লব আসবে তাই না! সেই কাজ করেই বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বর্ধমানের যুবক অয়ন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে কৃষকদের জন্য এনেছেন বিপ্লব! সেইসঙ্গে জিতে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সেরার পুরস্কার। কোন ক্ষেত্রে ঠিক কিভাবে কাজ করবে অয়নের প্রযুক্তি?
এখন চারদিকে আলোচনা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআইকে ঘিরে। এআই নিঁখুতভাবে করে দিতে পারে সব কাজ। এআই প্রযুক্তি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ তা নিয়েও চলছে নানান বিতর্ক। এবার সেই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কৃষকদের সমস্যা দূর করার পথ দেখালেন বর্ধমানের যুবক অয়ন ঘোষ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষি সংক্রান্ত সফটওয়্যার তৈরি করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন তিনি। তাঁর তৈরি এই সফটওয়্যার সহজেই কৃষকদের চাষাবাদ সংক্রান্ত বিষয়ে নানান তথ্য দেবে। প্রশ্ন করলেই চটজলদি একদম সঠিক উত্তর দেবে এআই। আন্তর্জাতিকস্তরে সারা বিশ্বের প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে অয়নের এই সফটওয়্যার বেছে নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান শহরের কাঁটাপুকুর এলাকার বাসিন্দা অয়ন ঘোষ। বর্ধমান ইউআইটির ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশন নিয়ে স্নাতক তিনি। অয়ন বর্তমানে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। ছোট থেকেই নানান বিষয়ে বিজ্ঞানের প্রযুক্তি প্রয়োগের শখ রয়েছে অয়নের। এর আগেও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করেছেন তিনি। এসেছে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পুরস্কার। নভেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তিকে ব্যবহারের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে অন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন অয়ন। সারা বিশ্বের ১৮০টি দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার প্রতিযোগী অনলাইনে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সেখানেই সমস্ত দেশের প্রতিযোগিদের সঙ্গে লড়াই করে প্রথম স্থান ছিনিয়ে এনেছেন বাংলার এই যুবক।
এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্ব উষ্ণায়ন, খাদ্য সংকটের মতো বিষয়গুলির স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। অয়ন বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কৃষির ওপর প্রভাব নিয়ে কাজ করেন। তিনি ভারতীয় আবহাওয়ায় চাষের সুবিধার্থে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছেন। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে কৃষকরা নিজেদের এলাকায় আবহওয়ার বিষয়ে আগাম জানতে পারবেন।ফলে ফসল রক্ষায় অনেকাংশেই সাহায্য হবে তাঁদের।এছাড়াও কোন মাটিতে কী ধরনের ফসল হবে, ফলনের ক্ষেত্রে কী কী করণীয় সেই বিষয়েও জানা সম্ভব হবে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে।
শুধু তাই নয়, উৎপাদিত ফসল অনলাইনে বিক্রিও করতে পারবেন কৃষকরা। বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্য থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহারের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার সঠিক তথ্য প্রদানে সক্ষম। বিশ্বের ২০ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে অয়নের সফটওয়্যারকে সেরার সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই কাজের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী সংস্থার পক্ষ থেকে অয়নকে ইতিমধ্যেই পুরস্কৃত করা হয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম