।। প্রথম কলকাতা ।।
Dakshineswar Temple: পৌষ মাসে দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীকে কীভাবে পুজো করা হয়? ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন, মা-কে ডাকার জন্য আলাদা করে কোনও দিনক্ষণ লাগে না।তবুও কেন দক্ষিণেশ্বরে বিশেষ বিশেষ দিনে রাজকীয় পুজোর আয়োজন? এই মন্দির নিয়ে কিছু অজানা কথা আজ জানাবো আপনাদের। এই মন্দির ঘিরে এতো রহস্য জানলে সত্যিই অবাক হবেন। এসময়টা মুলো দিয়ে মা কালীর পুজো দেওয়া হয়? অন্য কিছু নয়! কেন পৌষে মূলোতেই মা খুশি হন? এই মাসটায় কেমন সাজে সেজে উঠেন ভবতারিণী? মূলো দিয়ে পুজো দেওয়ার পিছনে রয়েছে বিশেষ এককারণ যা এখনও আপনার অজানা।
পৌষ মাস পরলেই দক্ষিণেশ্বের মায়ের পুজোর ডালিতে মূলো থাকবেই। মিষ্টি, শাখা পলার সাথে একটা মূলো থাকবেই। সারাবছর পুজো দিতে না গেলেও এই মাসে মায়ের পায়ে ছুটে যান অনেকেই। কিন্তু কোন কারণে মূলো দিয়েই পুজো দেওয়া হয়? এই মন্দিরেই প্রায় ৩০ টা বছর কাটিয়েছেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব। তিনি বলেছিলেন মা-কে ডাকার জন্য আলাদা করে কোনও দিন লাগে না!
অর্থাৎ মন থেকে ডাকলে মা আপনার প্রতি সহায় হবেনই। বাংলা মাসের হিসাবে কিছু বিশেষ সামগ্রীও রয়েছে পুজো দেওয়ার জন্য। তেমনই একটি উপকরণ হল মুলো দক্ষিণেশ্বরেও এই পুজোর চল রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস পৌষ মাসে মুলো দিয়ে মা ভবতারিণীর। পুজো দিলে নাকি বিশেষ ফল মেলে! পৌষ মাস পড়লেই দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেওয়ার লাইন। মাকে প্রত্যেকদিনের মতই বেনারসীর সাজে সাজানো হয়। এর নেপথ্যে শাস্ত্রমতে কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি নেই বললেই চলে বরং এই নিয়মের জন্ম কিছুটা হলেও লৌকিক আচারের হাত ধরেই।
মুলো দিয়েই কীভাবে মায়ের পুজো দেবেন? কাী নিয়ম রয়েছে পৌষমাসে? মায়ের পায়ে মূলো দিয়ে তবে তা খাওয়া শুরু করেন অনেক বাড়িতেই। বিশেষ কিছু গ্রামীণ ব্রত, যেমন ইতুপুজো, নবান্ন মুলো-ষষ্ঠী- এই সবেতেই প্রসাদ হিসেবে মুলো খেতে হয়। এর পিছনে আলাদা এক বিশেষ কারণ রয়েছে। বছরের এই সময়টায় নতুন ফলন
হওয়া মুলো শীতকালের বহু রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। সেক্ষেত্রে যাদের এই শীতকালীন সবজিটি বিশেষ পছন্দের নয়। তাঁরাও এক কুচি মুখে দেন আসলে লৌকিক আচারের বেড়াজালের মধ্যে এভাবেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের খুঁটিনাটি লুকিয়ে রয়েছে বলেন অনেকেই। মা কালী জগতের সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করেন ও শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন।
রানি রাসমনি ১৮৪৭ সালে কাশীতে তীর্থযাত্রার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যাত্রার আগের রাতে তিনি স্বপ্নে মা কালীর দেখা পান। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। রামকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত।তাঁর ভাই গদাধরকে তিনি তাঁর সঙ্গে নিয়ে আসেন পুজোর কাজে সাহায্য করার জন্য। এই গদাধরই পরবর্তীকালে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব হিসেবে পরিচিত হন। মূলত তাঁর আকর্ষণেই দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির মহাতীর্থে পরিণত হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম