।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশের মানুষের ভারতের প্রতি বিদ্বেষ বাড়ছে? কিন্তু কেন? বাংলাদেশের মানুষের এই বিদ্বেষ শুধু কি ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ? কারা ছড়াচ্ছে বিদ্বেষ? সোশ্যাল মিডিয়াই ঘি-তে আগুন ঢালছে ভারত কি সত্যিই ‘বয়কট বাংলাদেশের’ দিকে এগোচ্ছে? বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের হার আর তা ঘিরে বাংলাদেশীদের ব্যাপক রকম উচ্ছ্বাস। সমস্ত বাংলাদেশি বলা যায় কি? নাকি বাংলাদেশের নাগরিকগের বিশেষ কোনও অংশ? ভারতের থেকে বয়কট বাংলাদেশ ডাক উঠছে। সম্পর্ক বিগড়ে যেতে পারে দুটো দেশের মধ্যে? বৈরিতা টানতে দুদেশের ধর্মই কি দায়ী? আপনি এই ভিডিও কোথা থেকে দেখছেন জানান?
ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরের ওপর কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কতটা নির্ভরশীল বা বলা ভালো বাংলাদেশ স্পেশালি ভারতের ওপর চিকিৎসাক্ষেত্রে, খাদ্যসামগ্রী সহ অনান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্ষেত্রে কতটা নির্ভর করে সেটা বোধহয় সব ভারতীয়রা না জানলেও কম বেশি সকল বাংলাদেশিই জানেন।
ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য তারা আমদানি করেন। ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা তারা ব্যবহার করেন। কলকাতায় এসে মার্কেটিং করেন। আবার সেই ভারতকেই সবসময়ে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা। তাহলে বিদ্বেষ, ঘৃণা বা ভারতের হারে আনন্দ উচ্ছাস আসছে কোথা থেকে? বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের হার নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে উচ্ছ্বাস এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের প্রতিবাদ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শৈল শহর দার্জিলিংয়ের একটি হোটেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের হোটেলে বাংলাদেশের পর্যটকদের এমূহুর্তে আর থাকার অনুমতি দিচ্ছেন না। শুধু তাই নয় ভারতীয় বাঙালীদের একাংশ এই বিদ্বেষের পাল্টা বাংলাদেশকে নানা ক্ষেত্রে বয়কট করার ডাক দিচ্ছেন। কেউ বাংলাদেশিদের ভিসা না দেওয়ার কথা বলছেন। যাতে বাংলাদেশিরা এদেশে চিকিৎসা করাতে না আসতে পারেন। কেউ বলছেন কলকাতা বই মেলায় বাংলাদেশী প্রকাশকদের যেন স্টল দিতে না দেওয়া হয়। আসল সত্যিটা কি? কারা ছড়াচ্ছে বৈরিতা? কী বলছেন দুদেশের সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা?
বাংলাদেশেরও আশা ছিল যে বাংলাদেশ সেমি ফাইনাল বা ফাইনালে খেলবে কিন্তু তারা চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। তাই বলে ভারতের হারে উল্লাস! বিবিসিকে একটি সাক্ষাতকারে বাংলা সংবাদ পোর্টাল ‘দ্য নিউজ বাংলা’র প্রধান মানব গুহ বলছেন “এই বৈরিতাটা কিন্তু পুরো ভারত আর বাংলাদেশের সমর্থকদের মধ্যে তৈরি হয় নি শুধুমাত্র ভারতীয় বাঙালি আর বাংলাদেশের তরুণ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে চলছে এটা”। অনেকের দাবি এটা কিন্তু শুধু বিশ্বকাপ ফাইনাল নয় ২০১৯ সালেও বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের হারের পর বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছিল বাংলাদেশের সমর্থকদের। প্রশ্ন তখনও উঠেছিল আজও উঠছে। এই বিদ্বেষ কি শুধু ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবায়েদা নাসরিন বেশ কয়েকবছর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন ভারত বাংলাদেশের সমস্ত ইমারজেন্সিতে প্রয়োজন হওয়া সত্ত্বেও দ্বিজাতিতত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হওয়ার কারণে এখনও উপমহাদেশের দেশগুলোতে ধর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার কারণে বাংলাদেশের মানুষের এই জাতীয়তাবাদী চেতনার বহি:প্রকাশটা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক তীব্র
বাংলাদেশ এবং ভারতের ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যে এই বৈরিতা অবশ্য একদিনে তৈরি হয়নি। বিভিন্ন টুর্নামেন্ট ঘিরে মূলধারার গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যমে তৈরি মিম এই আগুনে ঘি ঢেলেছে নানা সময়। এদের একটা অংশ রাজনৈতিক ভাবে ভারত-বিরোধী। যারা বাংলাদেশের যে কোনও সমস্যায় ভারতের দোষ খোঁজেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসাবে ভারত বাড়তি সুবিধা আদায় করে ম্যাচগুলোতে জিতেছে। বহু ক্রিড়াবিদদের এটাও দাবি তারা বিশ্বাস করেন না বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ভারতের পরাজয়ে এভাবে উল্লসিত হচ্ছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আছেন যারা ভারতীয় ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের ভক্ত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম