।। প্রথম কলকাতা ।।
ধেয়ে আসছে এ কোন মহাপ্রলয়? ভারত বাংলাদেশ কী করবে? ২০২৪ এই ঘটে যাবে এতো বড় সর্বনাশ? কোটি কোটি টন বরফ হারাচ্ছে আন্টার্কটিকা। এত এত পেঙ্গুইন মরছে। হু হু করে বাড়ছে জলস্তর, সমুদ্রে ডুবে যাবে নাকি এতোগুলো দেশ? হিমবাহের নীচে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। তাহলে কি ভেঙে দু টুকরো হবে পৃথিবী? কেদারনাথ এর সেই ভয়ংকর রাতের কথা মনে আছে তো? রুখতে পারবে না কোনো বিজ্ঞান-প্রযুক্তি। কিভাবে কুমেরুর গায়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়াছে পৃথিবীর অভিশাপ। বাংলাদেশের ১০ গুণ বেশি আয়তনের বরফ গলে গেছে অ্যান্টার্কটিকায়।বিশাল উঁচু বরফের দেওয়াল এক ঝটকায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে। বিস্তৃীর্ণ এলাকা জুড়ে হিমবাহে ফাটল। নেমে আসছে বরফের প্রকাণ্ড চাঁই। হিমবাহের সাম্রাজ্যে ঘোর বিপদ। প্রতিনিয়ত সমুদ্রে ভেসে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে বলছেন বিজ্ঞানীরা।
হাড়হিম করা স্যাটেলাইট ইমেজ বাংলাদেশের টেনশন বাড়াচ্ছে। বিশ্বজুড়ে যেভাবে একের পর এক হিমবাহ অস্বাভাবিক হারে গলতে শুরু করেছে তাতে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত, চীন সহ একগুচ্ছ দেশ রিস্কে আছে। কোথা থেকে কি ঘটছে আপনি টের পাচ্ছেন না।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। গত ৪০ বছর ধরে গবেষণার পর পরিবে শবিজ্ঞানীরা বলছেন, আন্টার্কটিকায় ঘোর দুর্দিন আসছে। বরফের রাজ্যের প্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে, সমুদ্রে ভাসমান বরফের চাঁই উধাও হয়ে যাচ্ছে।ম্যাজেস্টিক প্রজাতির পেঙ্গুইনরা বিলুপ্তপ্রায়। পেঙ্গুইনদের এক একটা কলোনি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর এবার পৃথিবীর কুমেরুর বাস্তুতন্ত্রই বদলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন আন্টার্কটিকা থেকে ২৫০ ট্রিলিয়ান টনের মতো ঠান্ডা, অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলের প্রবাহ বা Ocean Current ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। আন্টার্কটিকার তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এই অক্সিজেন সমৃদ্ধ জলের স্রোতের পরিমাণ কমছে। ওই জলের প্রবাহ অন্য সাগর-মহাসাগর অবধি পৌঁছতেই পারছে না। এরকম চলতে থাকলে, একটা সময় আসবে যখন পৃথিবীর সমস্ত সাগর-মহাসাগরের ব্যালান্সটাই বদলে যাবে।
তখনই কি ঘটবে সেই ভয়ংকর বিপর্যয়? পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে মহাপ্রলয়? দেখুন কিভাবে আন্টার্কটিকার ‘নর্থ রিফ্ট বিজ্ঞানীদের টেনশনের পরিমাণকে কয়েকগুন বাড়াচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর তাপ বাড়ছে, মেরুপ্রদেশে বরফ গলছে, সমুদ্রের জল বাড়ছে, জলবায়ুর বদল সর্বনাশের খাঁড়া ঝুলিয়েই রেখেছে। তার মধ্যেই নর্থ রিফ্টের ওই পাহাড়প্রমাণ বিশাল বরফের চাঁই ভেঙে পড়াকে মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। অলরেডি চিড় ধরতে শুরু করেছে আন্টার্কটিকার বিশাল বিশাল গ্লেসিয়ারগুলিতেও। পরিবেশবিদরা বলছেন সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়টা এই মুহূর্তে ঘটছে আন্টার্কটিকায়। পরিণতি ভয়ানক। হিমবাহ যেহারে গলছে তাতে অন্তত ১০ ফুট উঠে আসতে পারে সমুদ্রের জল-স্তর। বহু দেশের বহু শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তাহলে কি ঠান্ডার দেশে গরম হওয়া বইছে? এর আগে আলাস্কা ও গ্রিনল্যান্ডে এত দ্রুত বরফ গলে গেলেও, আন্টার্কটিকা সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। আর সবটাই ঘটছে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে পৃথিবীর জলবায়ু ধ্বংস হয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যা ঘটছে সেটা নজিরবিহীন।
আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০২৪ সালেই নানান ধরনের দুর্যোগের মুখোমুখি হবে গোটা বিশ্ব। এটা ঠিক বিরাট রিস্কে আছে গোটা পৃথিবী। তবে, বিজ্ঞানীদের আরেকাংশের মতে পৃথিবীকে মানুষের বেঁচে থাকার উপযোগী করে তোলার সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। তার জন্য অবিলম্বে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেটা করতে হলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাস কমানোর লক্ষ্যে সকলকে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। হাতে সময় খুব বেশি নেই। সতর্ক হতে হবে, সচেতন হতে হবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম