।। প্রথম কলকাতা ।।
পুতিনের গোপন টেকনিক, কোন ওষুধে এবার পাথড় হয়ে যাবে ইউক্রেনের সেনারা? মাটির তলায় কাটবে শীত? দেখুন জেলেনেস্কির গোপন ডেরা। শীত যুদ্ধের জন্য কী খেয়ে বাঁচছেন ইউক্রেনীয় সেনারা? ক্যাম্পের গায়ে কী জড়াচ্ছে ইউক্রেন? এতো এতো ব্যাটারি মজুত হচ্ছে কোন গুহায়? ধক আছে কিয়েভের, দেখুন লাখ লাখ টাকা খরচ করে পুতিনের জন্য কি বানাচ্ছে। বড় খবর ফাঁস, ইউক্রেনের মাটিতে থরে থরে সাজানো হিটার? কোন পাওয়ার বুস্টারের জোরে এতো তাকাত ভলোদিমির জেলেনেস্কির? জাল বিছানোর সুযোগ দেবেনা পুতিনকে। ইউক্রেনের এই ছক ভাঙা খেলার ধাঁচ বোঝা কিন্তু খুব কঠিন। পুতিন কিন্তু স্ট্রেট কিয়েভের মেরুদন্ডে আঘাত করার প্ল্যান সাজাচ্ছেন। আর ইউক্রেন সেনারা শীতের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে।
পাতলা আবরণের আড়ালে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাদের এই রহস্যময় শেল্টারের আয়তন ২০ বর্গ মিটার। সেখানের ক্যাম্পগুলোতে বিছানা, রান্নাঘর, ডিজেল চালিত গাড়ির হিটার বসানো হয়েছে। বিদ্যুতের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে গাড়ির ব্যাটারি। আহত সেনাদের চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সামরিক চিকিৎসকরাও। জানিয়ে রাখি, যুদ্ধের প্রথম শীত কিন্তু ইউক্রেনের জন্য ভীষণ কঠিন ছিল। এবার দ্বিতীয় দফার শীতে ঢুকতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সেক্ষেত্রে রাশিয়ার ২২ মাসের আক্রমণে এই লড়াই কতটা তীব্র হবে, কতটা ভয়াবহ হবে সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। মস্কো তাদের সাঁজোয়া যান উৎপাদন ৭ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।চলতি বছরের মধ্যে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে ২১০০ টির মতো ট্যাংক সরবরাহ করা হবে, এর মধ্যে অলরেডি ১৯০০ টি ট্যাংক হস্তান্তর করা হয়ে গেছে। ইউক্রেনের বুকে যে বড় কোন অপারেশনের প্ল্যান রয়েছে পুতিনের, এটা স্পষ্ট।
মনে করিয়ে দিই, গত বছরের শীতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডের উপরে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ফলে প্রবল শীতে বিদ্যুৎ ও হিটিং ব্যবস্থা ছাড়াই থাকতে হয়েছিল কয়েক হাজার ইউক্রেনবাসীকে। এই শীতেও তেমন কিছু ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি সরকারের। তাই, বাইরের তাপমাত্রা হিম শীতল হলেও, আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে এমন টেকনিকে যে ভেতরে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলেনেস্কির সেনারা এখন অনেক বেশি অভিজ্ঞ। সেনারা বলছেন, তারা মানিয়ে নেওয়া শিখে গেছেন। জেনে গেছেন কীভাবে উষ্ণ থাকতে হয়। এমনকি রাশিয়ার বিমান ও ড্রোন হামলা থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকেন তারা কিন্তু তারপরেও রিস্ক থাকছেই। শীতে ঠান্ডা ও ইঁদুরের উপদ্রবের পাশাপাশি গাছের পাতাও ঝরে যায়। ফলে রুশ ড্রোনের ক্যামেরায় ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থান ধরা পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।কাদার কারণে রাস্তাগুলো দিয়ে অস্ত্র আনা-নেওয়া কঠিন হয় ওঠে, আটকে যায় যানবাহন। এই পরিবেশে যুদ্ধক্ষেত্র অনেক বেশি রিস্কি হয়ে ওঠে, সুবিধা পায় প্রতিপক্ষ। এবার সামরিক চিকিৎসকরাও ভেবে পা ফেলেছেন। গত বছরের শীত থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েছেন তাঁরাও।
সামরিক চিকিৎসকরাও শীতের জন্য এবার ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন। সেনাদের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে কর্মীরা দরজার ও জানালা লাগিয়েছেন কাঠ ও বোর্ড দিয়ে। কিছু ঘরে কাঠ পোড়ানোর জন্য আগুনের বন্দোবস্ত এবং গাড়ির হিটার বসানো হয়েছে! চিকিৎসকরাও বলছেন, গত শীতে কাজ করা অনেক কঠিন ছিল তাদের কাছে। সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার মতো সময় ছিল না। ফলে আহত সেনারা অনেক সময় খোলা জায়গায় শুয়ে থাকার পর রক্তক্ষরণ এবং হাইপোথার্মিয়ায় ভুগেছেন। আর এবার? এবারেও তাপমাত্রা শূন্যের নীচে নেমে যাওয়ায় তুষারপাত খুব হতে পারে। তাই ইউক্রেন সেনারা এখন হাত উষ্ণ রাখতে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করছে। শীতের মধ্যে যুদ্ধ করার কৌশল বহু বছর ধরে রপ্ত করা আছে রুশ সেনাদের। তাই তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ করা ইউক্রেনের জন্য অবশ্যই চাপের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝলে রাশিয়ার তেল গ্যাস পরিকাঠামোর উপরে পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউক্রেন। একটা কথা বলতেই হচ্ছে, রাশিয়াকে পাল্টা দিতে ইউক্রেন জোরদার জমজমাট প্ল্যান সাজালেও জেলেনেস্কির সামনের দিনগুলো যে চাপ বাড়াবে সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম