।। প্রথম কলকাতা।।
Tiffin Service Business: ২০২০ এবং ২০২১ সালে বহু মানুষ নিজের চাকরি হারিয়ে ফেলেছেন। যা স্বাভাবিকভাবেই তাদেরকে আর্থিক দিক থেকে দুর্বল করে তুলেছে। তাই বর্তমানে অনেকে অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। ছোট ব্যবসা শুরু করতে গেলে প্রথমে নিজেকেই সব থেকে বেশি খাটতে হবে । আর তার সাথে চাই একটা দুর্দান্ত ব্যবসার আইডিয়া । এমন একটা ব্যবসা যা মাত্র ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতে নিয়ে নামলেই শুরু করা যায় । তার হদিশ রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
টিফিন সার্ভিসের ব্যবসা। এটা অনেকেই শুনে থাকবেন আবার অনেকে হয়তো শোনেননি । এই ব্যবসা করতে গেলে আপনাকে বাড়ির বাইরে কোথাও যেতে হবে না। বরং কাজটাই হবে বাড়িতে। আর রান্নাবান্না করতে যদি পছন্দ করেন তবে এটাই আপনার জন্য আদর্শ ব্যবসা। আপনার খাবারের কোয়ালিটি ভালো হলে কাস্টমার ধরে রাখতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। মেট্রোপলিটন শহর গুলিতে এই টিফিন সার্ভিসের ব্যবসার ভীষণ চাহিদা রয়েছে । এমনও অনেকে রয়েছেন যারা ওয়ার্ক ফ্রম হোম করেন কিন্তু বাড়িতে মানুষের অভাবে বাইরে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করতে হয়।
সেক্ষেত্রে তাঁরা এই টিফিন সার্ভিসের ব্যাপারটা ভীষণভাবে গ্রহণ করেন। ঠিক কী ভাবে শুরু করবেন টিফিন সার্ভিস ব্যবসা ? কত টাকা পুঁজি প্রয়োজন? কতটা লাভ হবে এই ব্যবসায় ? সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পাবেন এখানেই।
* কত টাকা পুঁজির প্রয়োজন ?
এই টিফিন সার্ভিসের ব্যবসায় আপনাকে মূলত রান্নাবান্না করে খাবার ডেলিভারি দিতে হবে গ্রাহকদের। সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার মূল উপকরণ হবে রান্নার গ্যাস সহ রান্নার বিভিন্ন সামগ্রী। প্রথমে ছোটখাটোভাবে এই ব্যবসা শুরু করতে গেলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতে থাকলেই যথেষ্ট। পরবর্তীতে যদি আপনার ব্যবসা বিস্তার লাভ করে তখন কর্মী নিয়োগ করে আরও বিনিয়োগ করতেই পারেন।
* কী ভাবে শুরু করবেন ?
১. সর্বপ্রথম আপনাকে একটা ভালো জায়গা খুঁজতে হবে রান্নাঘরের জন্যে। যদি আপনার বাড়িতে বড় জায়গা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আলাদা করে জায়গা ভাড়া নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
২. আপনার টিফিন সার্ভিস ব্যবসায় খাবার তৈরি করতে হবে মূলত চাকুরীজীবী, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া সহ কর্মব্যস্ত মানুষদের জন্য । সেই কারণে একদম সেফ অপশন থাকবে বাড়ির খাবারের মেনু রাখা । হোমলি ফুড বলে যাকে। এছাড়াও পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে রাখতেই পারেন কিছু ফাস্টফুড এবং চাইনিজ ফুড।
৩. গ্রাহকদের কাছ থেকে খাবার অর্ডার নেওয়ার ব্যবস্থা টা ঠিক কেমন হবে তা আগেই পরিকল্পনা করে রাখতে হবে। আপনি চাইলে কোন কর্পোরেট কোম্পানি ,কোন শপিংমল কিংবা স্কুল-কলেজের ক্যান্টিনের সঙ্গে টাই আপ করে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা একেবারে নিশ্চিন্তে চালানো যাবে । এছাড়াও অনলাইনে এবং অফলাইনে খাবার অর্ডার নিতে পারেন তবে ডাইরেক্ট কাস্টমারদের কাছ থেকে খাবার নেওয়ার বদলে ব্যবসার শুরুর দিকে কোন ফুড ডেলিভারি কোম্পানির অধীনে ব্যবসা শুরু করাটাই ভালো বলে মনে করা হয়।
৪. কম দামে আপনি ফ্রেশ কাঁচামাল কোথায় পাবেন সেটা নিজেকেই খুঁজে বার করতে হবে প্রতিটা পাইকারি মার্কেটে অবশ্যই গিয়ে সবজির বাজার দর পরখ করে তবে সবজি কিনবেন।
৫. খাবারের প্যাকেজিং কিন্তু ভালো হওয়া চাই । খুব সুন্দর খাবার তৈরি করলেন অথচ সেই খাবারের প্যাকেজিং ভালো না হওয়ার কারণে তা দেখতেও ভালো লাগছে না এবং গ্রাহকদের কাছে যেতে যেতে তা নষ্ট যদি হয়ে যায় তবে সমস্ত পরিশ্রম বৃথা যাবে । তাই প্যাকেজিং করার ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বাটি, প্লাস্টিকের চামচ, প্লাস্টিকের প্লেট ব্যবহার করতে পারেন।
৬. সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল আপনার খাবারের কোয়ালিটি । যারা সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকবেন তাঁরা মাঝে মাঝে বাইরের খাবারের দিকে ঝুঁকলেও বাড়ির খাবারের জন্য কিন্তু আলাদাই টান থাকবে। তাই আপনার টিফিন সার্ভিসের খাবার যদি সুস্বাদু হয় তবে কাস্টমার ধরে রাখার ক্ষেত্রে বেশ সুবিধা হয়।
৭. নিজের ব্যবসার বিজ্ঞাপন করতে হবে নিজেকে। এখন যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া একটা দারুন প্ল্যাটফর্ম তাই সেখানে নিজের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। একটা ইউটিউব কিংবা ফেসবুক চ্যানেল খুলে সেখানে নিয়মিত নিজের ব্যবসা সম্পর্কে আপডেট দিতে পারেন কাস্টমারদের।
৮. এছাড়াও ব্যবসার পোস্টারিং করার জন্য আপনাকে মূলত বেছে নিতে হবে জনবহুল এলাকা। যেখানে রয়েছে বেশ কিছু অফিস কিংবা স্কুল কলেজ কিংবা এমন কোন এলাকা যেখানে সবসময়ই মানুষের আনাগোনা লেগে থাকছে। তাতে গ্রাহকদের নজরে আসতে সুবিধা হয়।
৯. নিজের ছোট ব্যবসাকে যদি ভবিষ্যতে বড় করে তুলতে চান তবে গ্রাহকদেরকে প্রথম প্রাধান্য দিতে হবে। ব্যবসা শুরুর দিকে কাস্টমারদের কাছ থেকে রিভিউ নিতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনি নিজের ব্যবসার ভুলত্রুটিও বুঝতে পারবেন এবং গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো তৈরি হবে।
* এই ব্যবসা কতটা লাভজনক ?
টিফিন সার্ভিস ব্যবসায় যেহেতু খুব বেশি পুঁজি বিনিয়োগের ব্যাপার নেই, সেক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ী প্রতিদিন ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন। আর যদি আপনার ব্যবসা বাড়তে শুরু করে তবে সেই ব্যবসায়ীর মাসিক আয় এক লাখের ঘরেও চলে যেতে পারে। যে কোন নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রেই ধৈর্য ধরে রাখতে হবে। তবেই উন্নতি করা সম্ভব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম