।। প্রথম কলকাতা ।।
ভয়ানক বিপদ! ভারত-বাংলাদেশের কী হবে? পৃথিবীর বুকে এ কোন মহাপ্রলয়? দুরন্ত গতিতে কোটি কোটি টন বরফ হারাচ্ছে গ্রীনল্যান্ড। হু হু করে বাড়ছে জলস্তর, সমুদ্রে ডুবে যাবে এতোগুলো দেশ? বরফহীন যুগের প্রথম ধাপে পা রাখছে পৃথিবী? ডেডলাইন টা জানেন? ১ লক্ষ ২৫ হাজার বছরেও যা ঘটেনি সেটাই ঘটবে ২০২৩ এ। প্যানিক না করে পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্টটা জানেনিন। গত ২০ বছরের তুলনায় ৫ গুণ গতিতে গলছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ-হিমবাহ। আপনার মনে হতে পারে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলার সঙ্গে আমাদের বিপদের সম্পর্ক কোথায়? শুধু কী বাংলাদেশ?২০১৯ সালের প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, রিস্কে আছে মায়ামি, সাংহাই সহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা। মার্কিন জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার বদ্বীপ অঞ্চলে এভাবে জলস্তর বাড়লে বিপদ দেখা দেবে পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অংশে।
উদ্বেগ বাড়ছে ভারতের ১২টি শহর গুজরাতের কচ্ছ উপকূল, ভাবনগর, তুতিকোরিন, পারাদ্বীপ, চেন্নাই, ম্যাঙ্গালোর, ভাইজাগ, কাণ্ডলা, ওখা, মরমুগাঁও, কোচি, বিশাখাপত্তনমে! রিপোর্ট বলছে, সুরক্ষিত নয় কলকাতাও। কোথা থেকে কি ঘটছে আপনি টের পাচ্ছেন না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ অস্বাভাবিক হারে গলছে। এখানেই টেনশন বিজ্ঞানীদের। তাঁরা বলছেন হাজার বছর ধরে জমাট বেঁধে থাকা এই হিমবাহ গলে যাচ্ছে। সাগরের জলস্তর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বড় আকারের বরফের চাঁই জলের সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে, নদীর মাধ্যমে সাগরে প্রবাহিত হচ্ছে। এই হারে বরফ গলছে গ্রীনল্যান্ডে।
গ্রিনল্যান্ডের বরফ নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। ২০১১ থেকে ২০২০ সালের সময়-পর্বে গ্রিনল্যান্ডে যে পরিমাণ বরফ গলেছে সেই বরফ গলা জল গোটা নিউ ইয়র্ক শহরকে তলায় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। বলছে রিপোর্ট। তাহলে কি ঠান্ডার দেশে গরম হওয়া বইছে? পরিবেশবিদরা বলছেন সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়টা এই মুহূর্তে ঘটছে গ্রিনল্যান্ডে। আর, এই হিমবাহ পুরোপুরি গলে গেলে সুমদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অন্তত ২০ ফুট বেড়ে যাবে। সবটাই ঘটছে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ডের এক হাজার হিমবাহের সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত দুই দশকে বরফ গলনের হার একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। হিমবাহগুলোতে প্রতি বছর গড়ে ২৫ মিটার করে বরফ গলে যাচ্ছে। অথচ, মাত্র দুই দশক আগেও এ গলন ৫-৬ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এখানেই তফাতটা বুঝতে হবে।
চলতি মাসের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছিলেন, প্রাকশিল্প যুগের তুলনায় বর্তমানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রায় ১.২ সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গত ১ লাখ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উষ্ণতম হতে যাচ্ছে ২০২৩ সাল। বিরাট রিস্কে আছে গোটা পৃথিবী। সেই ইঙ্গিত মিলেছে আগেই। চলতি বছরের শুরুতেও নতুন এক গবেষণায় বলা হয়, গ্রীনল্যান্ডের তাপমাত্রা ১০০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ হয়ে পড়েছে। একটা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, যে হারে উষ্ণতা বাড়ছে তা চলতে থাকলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ হিমবাহ অদৃশ্য হয়ে যাবে। তাই, অবিলম্বে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেটা করতে হলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাস কমানোর লক্ষ্যে সকলকে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। হাতে সময় খুব বেশি নেই। সতর্ক হতে হবে, সচেতন হতে হবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম