।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশে এতো দামী সম্পদ গচ্ছিত? হাজার হাজার পাহাড়াদার ঘিরে থাকে কেন? কী আছে বগুড়ায়? না দেখলে নিজের চোখকে বিশ্বাস হবেনা! বিহার হাটখোলার সারি সারি পাকুড় গাছেই লুকিয়ে বড় রহস্য। পাখি মানুষ এক হয়ে যায় যে দেশে। শিকারিদের ছেড়ে কথা বলে না ওপার বাংলা। গোটা গ্রাম জান লড়িয়ে দেয় কাদের জন্য জানেন? পাখির স্বর্গরাজ্যে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়াচ্ছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। প্রকৃতির এই মূল্যবান সম্পদে ভরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বগুড়া দিনে দিনে বদলে যাচ্ছে। একসময় ওই অঞ্চলের পাকুড়গাছের ডালপালা কেটে উজাড় করত প্রভাবশালীরা। আশ্রয় হারাত পাখিরা। এখন সেসব দৃশ্য পাল্টে গেছে। এখন কেউ পাখি শিকার করতে এলে ছুটে আসে ভলেন্টিয়াররা। প্রতিবাদ জানায় এলাকার মানুষ। প্রশাসনের কাছে খবর চলে যায়। শাস্তি-জরিমানার ঘটনা ঘটে।
একদিনে বদলায়নি বগুড়া। একটু একটু করে গোড়া থেকে বদলেছে গোটা অঞ্চল। তাই এখন প্রতিবছর চৈত্র-বৈশাখে ঝাঁকে ঝাঁকে শামুকখোল পাখি উড়ে এসে হাটখোলায় ১০০ বছরের পুরনো পাকুড়গাছের ডালে বাসা বাঁধে। ফসলের মাঠ, খাল, বিল থেকে খাবার সংগ্রহ করে। কার্তিক মাসের শেষের দিকে শীতের আগেই আবার অতিথি পাখিরা উড়ে যায়। বৈশাখ থেকে কার্তিক—এই সাত মাস হাজারো শামুকখোল পাখি বিহার হাটখোলা ও আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে। এখানেই মানুষের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় নানান রকম পাখি। বয়স্ক পাকুড় গাছগুলোতে ঝোলে এতো এতো পাখির বাসা। ঝাঁক ঝাঁক শামুকখোল। এখানে গ্রামবাসীদের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক পাখিদের। হবে নাই বা কেন? বিহার হাট ও আশপাশের প্রায় ২০ হাজার মানুষের সঙ্গে অন্য রকম বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে পাখিগুলোর। শিকারিদের ঠেকিয়ে পাখিদের আগলে রাখে স্থানীয় মানুষ।
না এখানেই শেষ নয়। বিহার গ্রামে পাখি, প্রাণী, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে সংগঠন। ‘তীর’, পুরো নাম টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ। এতোটাই বদলে গেছে ছবিটা যে এক যুগ আগে ওই সংগঠন বিহার গ্রামকে ‘নিরাপদ পাখির রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এতে বিহার গ্রামবাসীর মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে অন্য রকম মমতা। এখন সেই বিহার হাটেই আজকাল পাখি দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসে মানুষ। এখানে পাখি শিকারিদের রাজত্ব চলেনা। পাখি শিকারির তৎপরতা দেখলেই আটকের জন্য পুলিশকে নির্দেশ ও দেওয়া আছে। বিহার অনেক কারণে চেনা পরিচিত মানুষের কাছে। কিন্তু, এখন সব ছাপিয়ে বিহারের পরিচিতি একটাই ‘পাখির নিরাপদ রাজ্য’। প্রথমে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা ছিল ৩০। এখন গ্রামের ২০ হাজার মানুষই পাখি রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা ্পালন করছেন। বগুড়া আরও বদলাবে। কারণ, শিকারিদের উৎপাত বন্ধ করতে, পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে তীরের সদস্যরা এখন আরও সক্রিয়। পাখি রক্ষায় সচেতনতামূলক সভা, সমাবেশ, প্রচারপত্র বিলি, ডিজিটাল ব্যানার সহ একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আর তাতেই, বিহার হাটখোলার সকালগুলো আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠছে, উঠবে। এটাই বগুড়া। এটাই বাংলাদেশ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম