।। প্রথম কলকাতা ।।
ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে কেন হয়ে গেল দিল্লিতে? এসময় কলকাতাকে চরম ভয় পাচ্ছিলেন ব্রিটিশরা কেন? ব্রিটিশদের এই কাজে কত ট্যাকের কড়ি খরচ হয়েছিল জানেন? ওপরতলায় চরম চাপে পড়েছিল ব্রিটিশবাহিনী উপর। দিল্লির বিশেষ অংশের নাম কেন হয় নয়াদিল্লি ? অনেকেই জানেন কলকাতা একসময় ছিল ভারতের রাজধানী কিন্তু হঠাৎ তাকে তুলে নিয়ে দিল্লিতে কেন বসানো হল সেই ইতিহাসটা কিন্তু অনেকেরই জানা নেই। চলুন গল্পের মতো করেই আজকে জানব। ব্রিটিশরা বাংলার মানুষদের নিয়ে সেসময় এতটা টেনশনে ছিল কেন? ১৯১১ সাল পর্যন্ত ভারতের পূর্বাঞ্চলের শহর কলকাতাই ছিল ভারতের রাজধানী। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের আঁচ কলকাতায় বসে আর সহ্য করার মতো অবস্থা ছিল না ব্রিটিশদের। অনেকেই বলেন প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে বাংলাকে ভেঙে দুটুকরো করেছিল ব্রিটিশরা। একদিকে মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ ও অন্যদিকে হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু এই বাংলা ভাগের জেরে তখন উত্তাল ছিল সমস্ত বাংলা। বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে তখন কলকাতা সহ গোটা বঙ্গ জুড়ে একের পর এক আন্দোলন রীতিমত মাথাচারা দিচ্ছে।
সেসময় লর্ড হার্ডিঞ্জ বুঝতে পারেন এই উত্তপ্ত অবস্থায় কলকাতায় বসে প্রশাসনিক কাজকর্ম করা বেশ মুশকিলের। তাই কলকাতা থেকে রাজধানী সরানো হোক ভারতের অন্য কোনও রাজ্যে। ঠিক এমন প্রস্তাব দিয়েই চিঠি লিখে। লন্ডনে প্রথম তা পাঠানো হয়। ১৯১১ সালের ২৫ অগাস্ট প্রাপকের নাম লেখা ছিল তৎকালীন সেক্রেটারি অফ স্টেট ফর ইন্ডিয়া, আর্ল অফ ক্রুইর। এই প্রস্তাব কয়েকদিনের মধ্যে অনুমোদনও পেয়ে যায় রাজা পঞ্চম জর্জের থেকে। তারপরই কী সোজা দিল্লি হল রাজধানী? না একেবারেই নয় এরপরই ছিল ইংরেজদের আসল চ্যালেঞ্জ। তথ্য বলছে অবিভক্ত ভারতের নতুন রাজধানী হিসেবে ১৯৩১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লি যাত্রা শুরু করে। ২০ বছরের গ্যাপ? কেন এত সময় লেগে গেল রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যেতে এবার জানুন আসল গল্প।
ভারতের উত্তরাঞ্চলে থাকা দিল্লিকে রাজধানী করার কারণ ছিল মূলত বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রসহ দিল্লির অবস্থান নতুন রাজধানীটিকে বের করে নিয়ে আসা হয় তৎকালীন পঞ্জাব প্রদেশ থেকে। ১৯২৭ সালে এর নামকরণ করা হয় নয়া দিল্লি। দিল্লিকে রাজধানী হিসেবে সাজাতে মাত্র ৪ বছরের টার্গেট নিয়েছিল ব্রিটিশরা কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ভেসতে দেয় তাদের সব পরিকল্পনা। নিঃসন্দেহে শাহজাহানবাদ অর্থাত পুরোনো দিল্লি ছিল মোঘলদের রাজধানী। তবে গোটা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে ধারণ করার মতো ক্ষমতাও ছিল না পুরোনো দিল্লির। তাই বিশেষ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স ও স্যার হারবার্ট বেকারের ওপর ছিল এই শহরকে ঢেলে সাজানোর দায়িত্ব।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায় কার্যত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ অর্থনীতি। সোজা কথা নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলার মতো টাকা ছিল না ব্রিটিশদের হাতে।১৯১২ সালে সরকারী কর্মকর্তাদের থাকা জন্য সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং তৈরি হয়ে যায়। এছাড়াও রাইসিনা হিলসের উত্তর ও দক্ষিণ ব্লক তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত টানা ২০ বছর কাজ করার পর ১৯৩১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নয়া দিল্লিকে ভারতের রাজধানী দিল্লি ঘোষণা করা হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম