।। প্রথম কলকাতা ।।
বড় ধাঁধা! রহস্যময় জাহাজ বহর শি জিংপিং এর! গোপনে গভীর সমুদ্রে চীন কোন খতরনাক স্পাইং নামাচ্ছে? আসলে এদের কাজ কি? কেন চীনের মৎসজীবীরা লুকিয়ে চুরিয়ে আর্মি ট্রেনিং নিচ্ছে? মাছ ধরার নামে মাঝ সমুদ্রে কী ঘটাচ্ছে ওই জাহাজগুলো? চীনা জাহাজের নেটওয়ার্ক কত দূর ছড়িয়ে পড়েছে জানেন? কোনো অন্ধকার দুনিয়ার সাথে কানেকশন বাড়াচ্ছে বেজিং? ভারত থেকে আরব মহাসাগরের বুকে, কিভাবে ভয়ঙ্কর জাল বিছাচ্ছে চীন? চীনের ফাঁদ সাঙ্ঘাতিক। গভীর জলে চালাচ্ছে ভয়ানক খেলা। মাছকে হাতিয়ার করেই নতুন ফন্দি আঁটছে শি জিনপিংয়ের দেশ। মাছ উৎপাদনে বিশ্বে এক নম্বরে রয়েছে চীন। কিন্তু হাজার হাজার চীনা জাহাজ স্রেফ মাছ ধরার জন্যই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সাগরের বুকে? তথ্য বলছে, বর্তমানে ডিপ ওয়াটার ফিশিংয়ে বেশ নজর দিয়েছে চীনারা। গভীর জলে মাছ ধরার পেছনে শি এর কোন মোটিভ কাজ করছে?
মার্কিন স্যাটেলাইট ইমেজ বলছে, চীনের অত্যাধুনিক মাছ ধরার জাহাজগুলো ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, প্রশান্ত মহাসাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নিজেদের জলসীমা থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরছে। তাদের মাছ ধরার ২ হাজার ৫০০ বড় নৌযান রয়েছে। অনিবন্ধিত ও অবৈধ জাহাজগুলো ধরা হলে এই মুহূর্তে গভীর সাগরে প্রায় ১৭ হাজার মাছ ধরার চীনা ভেসেল রয়েছে। যা অবশ্যই টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চীনের যে ভূমিকায় দক্ষিণ চীন সাগরে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বিপর্যয়। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, মাছ ধরার নেপথ্যে স্পাইং করছে না তো চীন? সাগরের বুকে এতগুলো জাহাজ গিজগিজ করছে। সন্দেহ বাড়াচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, চীনা জাহাজগুলো প্রায়ই অন্য দেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ছে। ভাঙছে আন্তর্জাতিক আইন। সঙ্গে ওই সব দেশের মৎসজীবীদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আদপে এটা বেজিংয়ের আগ্রাসনের একটা নয়া কৌশল। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্যাটেজিক ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের রিপোর্ট বলছে, চীনের এই মাছ ধরার জাহাজগুলো আসলে লালফৌজের নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ডকে সাপোর্ট দিচ্ছে। চীন তাঁদের মৎসজীবীদের তলে তলে রীতিমতো আর্মি ট্রেনিং দিচ্ছে।
চীনের এই মতলবের পুরোটা কিন্তু এখনও সব দেশের কাছে স্পষ্ট নয়। আর তাতেই বাড়ছে ধোঁয়াশা। অতিরিক্ত মাছ আহরণ এখন বিশ্বের ক্রমবর্ধমান একটা সমস্যা। যাতে চীনের ভূমিকা অনেক বেশি। ভারতীয় নৌবাহিনীর দেওয়া তথ্যমতে, ২০২১ সালে ভারত সাগরের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৪০০ অবৈধ মাছ শিকারের ঘটনা ঘটেছে। আর এগুলো ঘটিয়েছে চীনের জাহাজ। ওই অঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলোর জলসীমাও লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে। ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান, ওমানের অবস্থান ভারত সাগরের তীরে। চীনের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে ব্যাপক সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয় দেশগুলোকে। কারণ একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে চীনের এই মাছ ধরার জাহাজগুলো চলে যাচ্ছে সমুদ্রের এমন বিতর্কিত এলাকায়, যেখানে জলের দখল নিয়ে আশেপাশের দেশগুলির মধ্য সমস্যা রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে যে বিবাদের অংশীদার চীন নিজে। ফলে একাধিক দেশ এখন চীন মৎসজীবীদের “বেজিং মদতপুষ্ট মেরিটাইম মিলিশিয়া” বলে ডাকতে শুরু করেছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভিন্ন সময় দাবি করেছে, অনেক সময় অন্য দেশের পতাকা ব্যবহার করেও মাছ শিকার করে চীনের জাহাজ। ২০১৬ সালের পর ওই হার বেড়েছে। এমনকি মাছ ধরার জাহাজের আড়ালে জাহাজ ব্যবহার করে গোয়েন্দাগিরিও করে যাচ্ছে চীন। চীনের প্রতিবেশী হওয়ায় সবচেয়ে ভুক্তভোগী দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। দেশগুলোর জলসীমার কোন তোয়াক্কাই করে না চীন। আন্তর্জাতিক কোনো আইন না মেনে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে চলেছে দেশটি। একাধিকবার দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে ঢুকে মাছ শিকার করেছে চীন।একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে দেশটা। এর শেষ কোথায় কেউ জানে না। তবে এই সব কিছু দেখে শুনে ভারত যে চুপচাপ বসে থাকবে না সেটা কিন্তু স্পষ্ট। চিনা জাহাজ ভারত মহাসাগরে ঢুকে দাদাগিরির চেষ্টা করলে প্রয়োজন মত সবক শেখাতে দ্বিধা করবেনা নয়া দিল্লি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম