।। প্রথম কলকাতা ।।
পাকিস্তানের রাজধানী করাচী থেকে কেন চলে গেল ইসলামাবাদে? ইসলামাবাদে এমন কী আছে যা দিল্লিতেও নেই? পাকিস্তান হওয়ার সময় অস্তিত্বই ছিল না এই শহরের। জিন্নার করাচীকে কেন পছন্দ করেননি ততৎকালীন প্রেসিডেন্ট আয়ূব খান ইসলামাবাদে রাজধানী হওয়ার ক্ষতি নাকি লাভ হয়েছিল পাকিস্তানের? পাকিস্তান তৈরি হওয়ার আগে কেমন ছিল ইসলামাবাদ? ৫৭ বছরে আদৌ কি কোনও বদল হয়েছে এর। পাকিস্তানের মানুষের ইসলামাবাদ নিয়ে গর্ব করেন কিন্তু কেন? এখানে এমন কী আছে যা ভারতের দিল্লিতেও নেই? খতরনাক এলাকা নাকি অবাক করার মতো জায়গা ইসলামাবাদ?
১৯৪৮ সালে পাকিস্তান গঠন হওয়ার পর করাচী ছিল পাকিস্তানের ইমিডিয়েট রাজধানী। মুহম্মদ আলির জিন্নার পছন্দ ছিল করাচী। তাহলে এমন কি ঘটে গেল যে রাজধানীকে রাতারাতি বদলে দিতে হল? জানা যায় ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের ততৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খান মনে করেছিলেন দেশের রাজধানী এমন একটা জায়গায় হওয়া উচিত যেখানে রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যাবে। করাচী সেক্ষেত্রে ছিল পাকিস্তানের এক প্রান্তে অবস্থিত। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। একটি কমিশন গঠন করে বেছে নেওয়া হল রাওয়ালপিন্ডির উত্তর-পূর্বে জঙ্গলে ভরা একটি ফাঁকা এলাকা। ১৯৬০ সালে শহর নির্মাণ শুরু হয় সেই জায়গাতেই। যা ছিল করাচীর বাণিজ্যিক এলাকা ও ভারতের কাশ্মীর থেকে বেশ দূরে। ইউরোপীয় নগর পরিকল্পনাবিদরা এসে এর প্ল্যান বানান। সেই শহর তৈরি করতে ৬ বছর লেগে যায়। ১৯৬৬ সালে পুরোদস্তুর তৈরি হয়ে যায় ইসলামাবাদ। ইসালামাবাদ মানে ইসলামের শহর। সেজন্যই তো ইসলামাবাদের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশই মুসলিম। এখানে মাত্র ১.৬০ শতাংশ হিন্দু পাবেন আপনি।
২০১৭ আদম সুমারির হিসেব বলছে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নিরাপত্তায় কতটা উন্নত কিন্তু জানেন কি ভারতের গোয়েন্দা বিভাগ, সেনাবিভাগ, পালার্মেন্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস যেমন নয়াদিল্লিতেই রয়েছে পাকিস্তানের আর্মির অফিস কিন্তু এখনও রাওয়ালপিন্ডিতে। ইসলামাবাদ তৈরির কিছু আগে রাওয়ালপিন্ডি থেকেই হত পাকিস্তানের প্রশাসনিক কাজ। তবে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ও আইএসআইয়ের অফিসিয়াল হেডকোর্য়াটার রয়েছে ইসলামাবাদেই। ৯০৬ বর্গ কিমি ইসলামাবাদে ১২ লক্ষ মানুষের বসবাস। তবে পাহাড়ের ঠিক পাশেই হওয়ায় ইসলামাবাদের আবহাওয়া বেশ মনোরম। রাজধানী যেহেতু পুরোনো শহর নয় তাই এর রাস্তাঘাট, জল নিকাশি ব্যবস্থা সমস্তটাই ওয়েলপ্ল্যানড। পাকিস্তানের সব রাজ্যের মধ্যে শিক্ষার হার সবথেকে বেশি ইসলামাবাদেই। এখানেই রয়েছে জনপ্রিয় শাহ ফয়সান মসজিদ। বলা হয় করাচী এমন একটা শহর ছিল যা মুম্বই থেকে বেশি দূর ছিল না। তাই পাকিস্তান চাইলে অ্যাটাক করতে পারত মুম্বইয়ের ওপর।
করাচী ও লাহোরের পর পাকিস্তানের ৩য় বড় স্টক এক্সচেঞ্জ হল ইসলামাবাদে। ইসলামাবাদ ইনফরমেশন টেকনলজি সহ বহু আইটি কোম্পানিও রয়েছে এই শহরে। পাকিস্তানের একের পর এক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে তারা নিজেরাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চোখে ছোট হয়ে গিয়েছে। সেসঙ্গে দেশটার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জেরে ভারতের দিল্লির তুলনায় ইসলামাবাদের যতটা উন্নতি প্রাপ্ত সেটা থমকে গিয়েছে এমনটাই দাবি পাক থিঙ্ক ট্যাঙ্কদের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম