।। প্রথম কলকাতা ।।
Surya Arghya: প্রতিদিন সকালে সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ নিবেদনকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। হিন্দু সংস্কৃতিতে সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মনে করা হয়, সঠিক পদ্ধতি এবং মন্ত্রের দ্বারা অর্ঘ্য নিবেদন করলে সেই ব্যক্তি সৌভাগ্য লাভ করেন। পাশাপশি তার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং পেশাগত জীবনে উন্নতি লাভ করা যায়। সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদনকে কেন্দ্র করেই রয়েছে নানান প্রচলিত বিশ্বাস এবং ধ্যান-ধারণা, যা বহু মানুষ মনে-প্রাণে বিশ্বাস সহকারে মেনে চলেন। বৈদিক ধারণা অনুযায়ী, সূর্যের মানুষের স্বাস্থ্য এবং চোখকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি সূর্যের উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র জলের অর্ঘ্য নিবেদন করেন, তাহলে তার উপর থেকে নেতিবাচক প্রভাব দূর হয় এবং ইতিবাচক প্রভাব বৃদ্ধি পায়। তিনি পরিশ্রমের দ্বারা প্রভূত সম্মানের অধিকারী হয়ে থাকেন। এছাড়াও প্রতিদিন সকালের সূর্যের আলো স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এর ফলে শরীরের শক্তি, তেজ, পরাক্রম এবং উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। তবে সূর্যের উদ্দেশ্যে জলের অর্ঘ্য নিবেদনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে, যা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মানা উচিত।
সূর্যকে জলের অর্ঘ্য নিবেদনের নিয়ম
•সূর্যোদয়ের অন্তত এক ঘন্টার মধ্যে অর্ঘ্য নিবেদন করা উচিত। বস্ত্র পুরনো হোক অসুবিধা নেই, কিন্তু সেটি যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়।
•স্নানের আগে কখনোই জল অর্পণ করবেন না। স্নানের পর তবেই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হবে। শাস্ত্র অনুযায়ী প্রতিদিন এই কাজ করা উচিত।
•অর্ঘ্য নিবেদন করতে হবে সূর্যের দিকে মুখ করে অর্থাৎ পূর্ব দিকে মুখ করে জলের অর্ঘ্য দেওয়া শুরু করবেন। এক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন তামার বাসন। সেখানে জল ভরে তাতে সামান্য চিনি কিংবা মধু মিশিয়ে নেবেন।
•যখন জলের অর্ঘ্য নিবেদন করবেন তখন অবশ্যই সূর্য মন্ত্র পাঠ করবেন। মন্ত্রটি অন্তত ১১ বার উচ্চারণ করা উচিত। মন্ত্র উচ্চারণের পর জল নিবেদন করবেন। মন্ত্র জপ শেষ হওয়ার আগেই জলের পাত্র খালি হতে দেবেন না।
•অর্ঘ্য দেওয়া সম্পন্ন হলে যেখানে জল নিবেদন করেছেন সেখানে স্পর্শ করে প্রণাম করবেন। সূর্যের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদনের ক্ষেত্রে এই মন্ত্রটি জপ করতে পারেন –
ওম গৃহিণী সূর্যে আদিত্য ওম অথবা ওম গৃহিণী সুরমা নমঃ।
সূর্যকে জল নিবেদনের সুফল
•হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, সূর্যকে দেবতা রূপে পুজো করা হয়। ভগবান রাম কিংবা মহাভারতের যুগে মাতা কুন্তীও সূর্যের ভক্ত ছিলেন। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি যদি প্রতিনিয়ত সূর্যকে জল নিবেদন করেন তাহলে আত্মশুদ্ধি ঘটে।
•এই কাজে ব্যক্তির জন্ম কুন্ডলীতে থাকা সূর্যের অবস্থান শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং সেই ব্যক্তি সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে হারিয়ে সর্ব ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করেন।
•মনে করা হয়, সূর্যের সঙ্গে হৃদপিন্ডের সম্পর্ক রয়েছে। সূর্যের রশ্মি থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা শরীর সুস্থ রাখে।
•সূর্য দেবতার উপাসনা করলে শত্রু এবং রোগ আপনার থেকে দূরে থাকবে। যে কোনো ভয় থেকে মুক্তি পাবেন। কথিত আছে, এর ফলে মানুষের পাপ বিনষ্ট হয়, চাকরি ক্ষেত্রে থাকা বাধা দূর হয় এবং ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম