।। প্রথম কলকাতা ।।
ব্লাউজ থেকে চুড়িদার বা কুর্তি বানানোর পর বেঁচে যাওয়া কাপড়ের ছাঁট কোথায় যায়? প্রত্যেকদিন টেলারিংয়ের দোকানে কত পোশাক তৈরি হচ্ছে তৈরি হচ্ছে প্যান্ট, সালোয়ার অনেক সময়ই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাপড় দিচ্ছেন। দর্জিদের কাছ থেকে জোগাড় করে সেসব কাপড়ের টুকরো দিয়ে আসলে কী হয় জানেন? আপনি একটা ব্লাউজ তৈরি করতে দিয়েছেন যেটুকু কাপড় বেঁচেছে কখনও ফেরত দিয়েছে দর্জি? ভেবে দেখবেন তো একবার! বেশিরভাগ টেলারিংয়ের দোকানেই অতিরিক্ত কাপড় ফেরত দেয় না। মনে প্রশ্ন আসেনি সেই ছাঁট কাপড় কোথায় যাচ্ছে? কী করা হচ্ছে? দোকানে থাকা কয়েক কেজি কেজি কাপড় জমিয়ে কী করা হয় জানেন? সত্যি নিজের চোখে দেখলে ভিরমি খাবেন আপনি। কোনও টেলারিংয়ের দোকানে ঢুকলেই দেখতে পাবেন নানা আকারের টুকরো টুকরো কাপড় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন সেগুলো কিন্তু ফেলে দেননি দর্জিরা। কাপড়ের স্তূপ রয়েছে দোকানে। এই কাপড়ের ছাঁট দিয়ে কী করা হয় জানেন?
টেলারিংয়ের দোকানে কাপড়ের টুকরো বা অন্যান্য রেডিমেড পোশাক কারখানার বাতিল কাপড়ের ছোট টুকরো দিয়ে তৈরি হচ্ছে তুলো। শিমুল বা কাপাস তুলোর অনেক দাম। অনেকেই লেপ-তোষক, সোফাতে ব্যবহার করতে পারেন না কিন্তু এ ধরনের ছাঁট কাপড় থেকে উৎপাদিত তুলো কম দাম হওয়ার জন্য তা লেপ তোষকে ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে। এমনকী জানেন? কাপড়ের ছাঁট থেকে তৈরি তুলো দিয়েই টেডি বিয়ার তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন জীবজন্তুর আকারের পুতুলেও ব্যবহার হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে। সংবাদমাধ্যম থেকে এমন তথি্য পাওয়া গিয়েছে। ৬০-৭০ হাজার টাকার বিশেষ এক রকমের কাঠের ও লোহার তৈরি মেশিনে রোজ তিন-চারশো কেজি পর্যন্ত তুলো উৎপাদন সম্ভব।
আর কী কী কাজে লাগে কাপড়ের ছাঁট?
শুধু তুলো নয় বেঁচে যাওয়া ছিট কাপড়ের আকার যদি একটু বেশি হয় তা দিয়ে তৈরি হয় বাচ্চাদের পোশাক। ছোট ছোট ফ্রক, স্কার্ট, ব্লাউজ এভাবেই অতিরিক্ত কাপড় কাজে লাগানো হয়। তা আবার ব্রিক্রি হয় ৫০০-রও বেশি দামে। এছাড়াও চকচকে কাপড় বা চুমকি, জড়ি বসানো কাপড় দিয়ে তৈরি হয় ঠাকুরের পোশাক। এভাবেই কাপড়ের ছাঁট দিয়ে ব্যবসা চলছে। একটা শ্রেণীর মানুষ যথেষ্ট লাভের মুখও দেখছেন। আগে কাপড়ের টুকরো অথবা অন্যান্য রেডিমেড পোশাক কারখানার বাতিল কাপড়ের ছোট টুকরো পুড়িয়ে নষ্ট করে দেওয়া হত যা পরিবেশের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। এখন তা আর হচ্ছে না। আসলে কিছুই যায় না ফেলা। রি সাইকেল শব্দটি এখন বেশ জনপ্রিয়। তাই কোনও কিছুই নষ্ট হয় না। তাই একটা সময় যা নষ্ট হতো আজ তা দিয়ে বহু মানুষ রোজগার করছেন। একটু বুদ্ধি দিয়ে ভাবছে উপায় বার হবেই। তা সত্যিই প্রমাণিত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম