।। প্রথম কলকাতা ।।
মা ভবতারিণীর জন্যে শাড়ির পাহাড়! দক্ষিণেশ্বরে চাইলেই মায়ের অঙ্গে শোভা পাবে না আপনার দেওয়া উপহার। সেখানেই তো ভবতারিণী ধৈর্যের পরীক্ষা নেন। কালীপুজোর আগে বিখ্যাত কালীক্ষেত্র দক্ষিণেশ্বর নিয়ে কিছু লুকোনো সত্য জানুন। দীপাবলির রাতে মায়ের রাজরাজেশ্বরী রূপ! দেবীবরণে কেমন সাজে সাজানো হয়? কলকাতা নয়! কালীপুজোয় মায়ের সাজ আসে ভারতের এক প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র থেকে। সাক্ষী থাকে পবিত্র গঙ্গা। মা ভবতারিণীর পছন্দের শাড়ি কী জানেন? মায়ের আসল মূর্তি দক্ষিণেশ্বরে নয় রয়েছে কলকাতার আরেক মন্দিরে। মাকে একটিবার দর্শন সেরে আসুন। নবীন ভাস্করের ভুল চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং রানি রাসমণি। হিসেবে কোন বড় গরমিল হয়েছিল?
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, বিদেশ থেকেও আসে মায়ের জন্য উপহার। আপনিও তো চান মাকে আপনার দেওয়া উপহারের শাড়িতে সাজাতে। একটিবার যেন মা ভবতারিণী সেই শাড়ি পরেন। কিন্তু সেই ইচ্ছেপূরণ হতে সময় লেগে যেতে পারে কম করে ১০ টা বছর। হ্যাঁ প্রতিমাসে কয়েক হাজার শাড়ি আসছে মন্দিরে। মায়ের প্রিয় বেনারসী। তাই ভক্তরা সাধ্যমতো নানা রঙের নানা নকশার বেনারসী ভবতারিণীর পায়ে নিবেদন করেন। শাড়ির হিসেব অনুযায়ী কমপক্ষে ১০ বছর অপেক্ষা করতেই হবে! ২০২২ সালের শেষের দিকে ২০১০ সালের উপহারের শাড়ি মাকে পরানো হয়েছে। ২০২৩ এ তাই মনে করা হচ্ছে ২০১১-২০১২ সালে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ১০ বছর বাদে আপনি খবর পাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে মন্দির কমিটির সুন্দর নিয়ম রয়েছে কোন ভক্তের শাড়ি কবে পরবেন মা তা চিঠি দিয়ে বা ফোন করে, বা মেসেজ পাঠিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন।
বাড়ির মেয়ের মতোই বেনারসী ও নানা গয়নায় কালীপুজোর রাতে সেজে ওঠেন মা ভবতারিণী। শাড়িতেই যে আসল বিশেষত্ব। কখনও লাল সাদা কখনও আবার লাল টুকটুকে বেনারসী মাকে পরানো হয়। কালীপুজোর জন্য বেনারস থেকে বিশেষভাবে নকশা করে শাড়ি আসে। সাথে সোনার সাত নলি হার, সীতাহার পরানো হয় মাকে। কানে কানপাশা, নাকে নতুন নথ। এছাড়াও টায়রা, টিকলি, কোমরবন্ধ, পায়ের নতুন নুপুর থাকে। নানা রত্নে সাজানো মুকুট পরানো হয়। মায়ের নাকে তিলক কারণ এখানে মা ভৈরবী পুজোর আগেই মাকে প্রস্তুত করা হয় এটিই দেবীর রাজবেশ কিন্তু দক্ষিণেশ্বেরের আসল মূর্তি বাংলার অন্য এক মন্দিরে। মায়ের মূর্তি নিয়ে কোন কেলেঙ্কারি হয়েছিল?
মন্দির নির্মাণে যখন মন দিলেন রানিমা মায়ের মূর্তি বরাত পেয়েছিলেন দাইহাঁটের নবীন ভাস্কর। মা ভবতারিণীর মূর্তি নির্মাণের পরই যিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেন। মূর্তি নির্মাণ হলে রানি রাসমণি এলেন। মা-কে দেখতে মূর্তি যেন একটু যেন ছোট হয়েছে দ্বিতীয়বার দেখা দিল আর-এক সমস্যা। এবারের মূর্তি হল গর্ভগৃহের মাপের থেকে বড়। পুনরায় মূর্তি তৈরি শুরু করলেন নবীন। এবার যে মূর্তি নির্মিত হল, আমরা আজও সেই রূপেই মায়ের দর্শন পাই দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে। নবীন ভাস্কর নির্মিত সবচেয়ে বড়ো মূর্তিটি হেদুয়ার গুহ বাড়িতে নিস্তারিণী কালী নামে পূজিতা হচ্ছেন। যে মন্দির দেখতে অনেকটা দক্ষিণেশ্বরের মতই। শুধু তাই নয় শান্তিনাথ নামের কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ পুজো হয়ে আসছে। কালীপুজোর রাতে ভবতারিণী মায়ের জাঁকজমক পুজো হয়। পুজোয় আছে নানা ভোগ-উপাচার। এই বিশেষ দিনটিতে সারাদিন মন্দির খোলা থাকে।দক্ষিণেশ্বরে তো কতবারই গিয়েছেন কিন্তু কালীপুজোয় মায়ের দর্শন আপনার ভাগ্য বদলে দিতে পারে। এমনটাই বিশ্বাস।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম