।। প্রথম কলকাতা ।।
আরব সাগরের তলা দিয়ে হু হু করে ছুটবে ট্রেন। রহস্যময় রেল ট্র্যাকে জুড়ে যাচ্ছে ভারত-দুবাই। হাঁ করে তাকিয়ে দেখছে গোটা বিশ্ব। মুম্বাইয়ের হাতে এলো আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। মানুষ নয়, তাহলে কী মণি-মানিক্যে ঠাসা থাকবে ওই ট্রেন? সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বার্থ আছে।২ ঘন্টাতেই ভারত টু দুবাই? তাবড় তাবড় দেশকেও টেক্কা?আরও একবার প্রমাণিত মোদী জমানায় সব অসম্ভবই সম্ভব ভারতে। অ্যাকুয়ারেল। হ্যাঁ সাগরের ভেতর দিয়ে ছুটছে ট্রেন। পুরো জার্নিতে আপনার সফর সঙ্গী কী হাঙ্গর, ডলফিন, তিমিরা?
মুম্বাই টু দুবাই, ২০০০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক রীতিমতো রহস্যের আধার। জলের তলায় রেল লাইন বিছিয়ে দিচ্ছে ভারত। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে ভারত, থুড়ি মুম্বাই এবার আরও কাছে। জলের তলায় আলট্রাস্পিড ট্রেন চলার টেকনোলজি টা কিন্তু মারাত্মক। বিরাট আকারের দুটো পাইপ লাইন কে আরব সাগরের নীচে স্থাপন করা হবে। যা জলে পুরোপুরি ডুবে থাকবে। সমুদ্রের নোনতা জল এই পাইপ লাইনে কোনভাবেই এফেক্ট করতে পারবে না এমন ভাবে তৈরি করা হবে দুটো টিউব। এই পাইপ লাইনের অবস্থানের যাতে কোনভাবেই পরিবর্তন না হয় তার জন্য জলের ওপরে ভাসমান সারিবদ্ধ কতগুলো ভেসেলের মাধ্যমে কংক্রিটের পাইপ লাইন দুটোকে সম্পূর্ণভাবে জলের নীচে আটকে দেওয়া হবে। জলের উপরে ভাসমান ভেসেলগুলির একটির সাথে আরেকটির দূরত্ব এমন ভাবে বজায় রাখা হবে যাতে দুটি ভেসেলের মাঝ বরাবর যে কোনও জাহাজ অতি অনায়াসেই যাতায়াত করতে পারে।
কংক্রিটের পাইপলাইন গুলোর প্রত্যেকটির মধ্যে থাকবে শুধু একটিমাত্র রেলপথ যে ট্র্যাকে রেল গাড়ি উভয় দিকেই যাতায়াত করতে পারবে। তবে এই আন্ডারওয়াটার রেল শুধুমাত্র মানুষ পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হবে না। জলের নীচে স্থাপিত ওই টিউব দুটোর ভেতরে থাকবে আরো কিছু পাইপলাইন। যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজ তেল এবং নদীর বিশুদ্ধ পানীয় জল মুম্বাই থেকে দুবাই শহরের মধ্যে আদান প্রদান করা হবে। মুম্বাই শহর থেকে দুবাই শহর পর্যন্ত যাত্রা করতে ট্রেনটা সময় নেবে মাত্র ২ ঘন্টা। আন্দাজ করতে পারছেন কোন স্পিডে ছুটবে জলের তলার এই ট্রেন? যেহেতু, মুম্বাই এবং দুবাই এর মধ্যে দূরত্ব ২০০০ কিলোমিটার তাই স্বাভাবিকভাবেই এই দূরত্বটিকে দু’ঘণ্টার মধ্যে অতিক্রম করতে গেলে ট্রেনটিকে প্রতি ঘন্টায় এক হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটতে হবে। সাধারণত, একটি বিমান ঘন্টায় প্রায় ৬০০ থেকে হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় আকাশে ওড়ে। মানে এই ট্রেনটার গতিবেগ একটা বিমানের গতিবেগের থেকেও বেশি হতে হচ্ছে। কিন্তু এটা সম্ভব হবে কিভাবে?
জানা যাচ্ছে সম্পূর্ণ ভাবে বাতাস হীন ফাঁপা দুটো পাইপলাইন এক্ষেত্রে বেনিফিট দেবে যাতে হাওয়া ট্রেনের গতিবেগে কোনোভাবেই ব্যারিকেড তৈরি না করতে পারে সঙ্গে ব্যবহার করা হবে, পৃথিবীর পরিবহন ব্যবস্থার সবথেকে উন্নত ম্যাগলেভ টেকনোলজি। মানে, ম্যাগনেটিক লেভিটেশন। মাইনাস ৪৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ঠান্ডা করা কতগুলো ইলেকট্রো ম্যাগনেট কে গোটা রেলপথ জুড়ে দুপাশে সারিবদ্ধ ভাবে ব্যবহার করা হয়। এতে ট্রেনকে রীতিমতো শূন্যে ভাসায় অর্থাৎ ভারত টু দুবাই আন্ডার ওয়াটার রেললাইনে মডার্ন টেকনোলজির ব্যবহার দেবে এক্সট্রা মাইলেজ। ২০১৮ র ব্রেন চাইল্ড, ২০২৩ এ এসে জলের তলায় একটু একটু করে বাস্তবায়নের পথে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী অলরেডি একটি সম্ভাব্য ব্লুপ্রিন্টের উপর কাজ করছে। এমনি তো নয়, স্বার্থ আছে বৈকি। ভারতের সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক সংযুক্ত আরব আমিরাতের।
আন্ডারওয়াটার রেল লাইন তৈরি করতে চাওয়ার মোটো আলাদা। এত বছর ধরে, মধ্যপ্রাচ্যে প্রযুক্তি, নির্মাণ এবং অবকাঠামোর জন্য ইউএই ছিল একমাত্র যাওয়ার জায়গা। কিন্তু, সৌদি আরব প্রচুর পরিমাণ টাকা ইনভেস্ট করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সেই আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী আন্ডারওয়াটার ট্রেনের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে চাইছে। হুবহু এই ধরণেরই আন্ডারওয়াটার রেলওয়ে টানেল রয়েছে অন্য দেশেও। তবে, মুম্বাই টু দুবাই আন্ডারওয়াটার রেল লাইন তৈরি হলে তা কোন কোন দেশকে টেক্কা দেয় এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম