।। প্রথম কলকাতা ।।
৪১৮ বছরে শ্রীরামপুর রাজবাড়ির পুজো। বিরাট অট্টালিকার ঠাকুর দালান আলো করে থাকেন বুড়িমা। যেখানে গান গেয়েছেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গিও। এসেছিলেন উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী। দশমীতে মাছ ও পান খেয়ে দেবী বরণ করেন মহিলারা। শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর অজানা ইতিহাস জানুন আজকের প্রতিবেদনে। রামগোবিন্দ গোস্বামী শ্রীরামপুর গোস্বামী পরিবারের আদিপুরুষ।তাঁর নাতি হরিনারায়ণ গোস্বামীর আমলে দুর্গাপুজোর সূচনা। সেই সময় বাংলার মসনদে নবাব আলিবর্দি খা। যে পুজো এ বছর ৪১৮-এ পড়ল।
এ বাড়ির দুর্গাপুজোয় আসর জমিয়ে গিয়েছেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, ভোলা ময়রা থেকে রূপচাঁদ পক্ষী সেই রাজবাড়ির দেওয়ালে ঘুণ ধরেছে আজ। আর আসর বসে না কিন্তু নিয়ম নিষ্ঠাভরে মায়ের পুজোর আয়োজন হয়ে চলেছে প্রতিবছর। এই দুর্গা পুজোকে সকলে চেনেন বুড়িমার দুর্গা নামে। মহালয়ার পরের দিন থেকেই পুজো। শুরু হয়ে যায়। এখানে ঠাকুর হয় খোপ বাংলা চালায়। বৈষ্ণব রীতিতে দেবী দশভুজার পুজোপাঠ হয়। রীতি মেনেই দূর্গা পূজার ঠাকুর দালানে এক চালার ঠাকুর পুজো হয়ে আসছে। এক সময় এই পুজোতেই চারদিন পাত পরত সবার জন্য। কুমারি পুজো থেকে সন্ধি পুজো নিয়ম নিষ্ঠার খামতি থাকে না। এখানে দেবী দুর্গা পূজিত হন বাড়ির মেয়ে রুপে।
অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় এখনও পুরনো আমলের। পিতলের ১৩৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। আর এই প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা রাজবাড়ির ঠাকুরদালান। নবমীতে কুমারী পুজো হয়। মায়ের ডাকের সাজ আজও বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে নিয়ে আসা হয়। পুজো শুরুর দিন থেকে নবমী পর্যন্ত পরিবারের সকলে নিরামিষ খাবার খান। দশমীর দিন বাড়ির মহিলারা ঠাকুর দালানের বাইরে মাছ ও পান খেয়ে মাকে বরণ করার পর শুরু হয় বিসর্জনের প্রস্তুতি। শ্রীরামপুর রাজবাড়ি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন হলেও কাঠামো থেকে যায় বছর বছর।
এই রাজবাড়িতে অনেক শ্যুটিং হয়। ভুতের ভবিষ্যত ছবির শ্যুটিং হয়েছিল এই রাজবাড়িতেই। উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী, সত্যজিৎ রায় সহ চলচ্চিত্র জগতের বহু বিখ্যাত ব্যক্তি পা রেখেছিলেন। শোনা যায় এক স্থানীয় বৃদ্ধা শ্রীরামপুরের রাজবাড়ির দেবী দুর্গাকে বুড়ি মা নামে সম্বোধন করেছিলেন। নামটি পরিবারের সকলের ভালো লেগে যায়। সেই থেকে পুজোটি বুড়ি মা নামে লোকমুখে প্রচারিত।আজও এই রাজবাড়ির পুজোর আকর্ষণে ছুটে আসেন বহু মানুষ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম