।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করবে রাশিয়া। রপ্তানি করবে প্রচুর পণ্য। কিন্তু স্বার্থটা ঠিক কি? বাংলাদেশ এই প্রস্তাব অ্যাকসেপ্ট করবে তো? তাহলে ভারতের উপর কি বাংলাদেশের নির্ভরতা কমতে চলেছে? যুক্তরাষ্ট্রের আনাগোনায় চাপে পুতিনের দেশ, হাতে রাখতে চাইছে বাংলাদেশকে। কার লাভ বেশি? নির্বাচনের আগেই বদলে যেতে পারে সব চাল।
যদি বলা হয়, রাশিয়া আর বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন? এক কথায় খুবই ভালো। দুই দেশের সম্পর্কে ঐতিহাসিক ভিত্তি বেশ মজবুত। কিন্তু দুই দেশই রয়েছে আন্তর্জাতিক চাপে। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জেরে রাশিয়ার মাথায় হাজারো নিষেধাজ্ঞা। অপরদিকে মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। গোটা বিশ্ব জানে, রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো নয়। এমত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে এসেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বদলে যেতে পারে বহু কূটনৈতিক চাল। এটা কিন্তু ভীষণ ভাইটাল একটা সফর। সের্গেই ল্যাভরভ ভারতে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ থেকে ঘুরে যেতে চাইছেন, কিন্তু কেন? রাশিয়া চাইছে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক দামে খাদ্যপণ্য রপ্তানি করতে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে গুরুত্ব পাচ্ছে বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামরিক সহযোগিতা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, প্রতিরক্ষা, গম সহ বিভিন্ন জিনিসের আমদানি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারকের বিষয়গুলো।
বিশ্ব ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশের গুরুত্ব কতটা সেটা নিশ্চয়ই এতদিনে শুনেছেন। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ আর রাশিয়া আরো বেশি করে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে চাইছে। বাংলাদেশ রাশিয়ার উপর খাদ্যশস্য, জ্বালানি, সার আমদানিতে বিশেষভাবে নির্ভরশীল। দেশটার আমদানি খাদ্যশস্যের অধিকাংশটা যায় ভারত আর রাশিয়া থেকে। কিন্তু গত জুলাই মাসে রাশিয়া হঠাৎ করে কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এমত পরিস্থিতিতে রাশিয়ার এই নতুন প্রস্তাব ভীষণ পজিটিভলি দেখছে বাংলাদেশ। রাশিয়া নিজে থেকেই চাইছে, জিটুজি ভিত্তিতে লাল মসুর, সবুজ মসুর ডাল, সূর্যমুখী তেল, ছোলা, মটর প্রভৃতি রপ্তানি করতে।
একটু খেয়াল করুন, রাশিয়া কিন্তু কখনোই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব একটা মুখ খোলে না। কিন্তু গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে। স্পষ্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র চালাচ্ছে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ। ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া দুটো ভাগে ভাগ হয়ে গেলেও, বাংলাদেশ রয়েছে নিরপেক্ষ অবস্থানে।
আসলে দুই দেশই রয়েছে আন্তর্জাতিক চাপে। এই মুহূর্তে একে অপরের সমর্থন দরকার। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তৈরি করতে চাইছে নতুন বন্ধুত্ব। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি যে রাশিয়ার বন্ধুত্ব এখনো অটুট রয়েছে এবং বাংলাদেশকে রাজনৈতিক আর কূটনৈতিকভাবে সমর্থন করে সেই বার্তাই দিতে চাইছেন পুতিন। বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করলেও ভারতের পণ্যে কোন প্রভাব পড়বেন না। ভারতের সঙ্গে রাশিয়া এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব ভালো। দিল্লিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখানে উপস্থিত থাকবেন সের্গেই ল্যাভরভও।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম