।। প্রথম কলকাতা ।।
Belur Math: জন্মাষ্টমীর দিন বেলুড়মঠে শুরু হল দুর্গাপুজো। দেবী আরাধনার সূচনা করেছিলেন স্বয়ং বিবেকানন্দ। জন্মাষ্টমীতে ঢাকে কাঠি পড়ল বেলুড় মঠে। আগে নয় কন্যার পুজোর প্রচলন ছিল গায়ে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে পুজো করেছিলেন স্বামীজি। বেলুড়মঠের দুর্গাপুজোর ফলের বলি কেন হয় জানেন? স্বামীজি ভাবচক্ষে দেখেছিলেন মঠে দুর্গাপুজো হচ্ছে। সেবছর দুর্গাপুজোর তথি কার্তিক মাসে। অক্টোবরে পুজো। মা সারদাকে বেলুড়ে আনলেন।
ষষ্ঠীর বিকেলে নৌকোয় করে প্রতিমা পৌঁছয়ে মঠে।
প্রথম দিকে কুমোরটুলি থেকে আনা হত প্রতিমা। পরে মঠে রেখে দেওয়া কাঠামোতেই প্রতিমা গড়া হয়। জন্মাষ্টমীর দিন প্রথা মেনে বেলুড়মঠে সেই কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয় দেবী দুর্গার আবাহন। এবারেও সেই রীতি মেনেই হল সব আয়োজন। শুভ দিনেই ঢাকে কাঠি পড়ল বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর। ভোর সাড়ে ৪টেয় মূল মন্দিরে মঙ্গলারতি হয় প্রথমে তার পর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মূর্তির পাশে শুরু হয় কাঠামো পুজো। ফুল দিয়ে কাঠামো সাজিয়ে পুজো করেন সন্ন্যাসীরা। প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় প্রতিমা বিসর্জনের পর এই কাঠামো তুলে রাখা হয়। পরের বছর পুজো শুরু আগে সেই কাঠামোই পুজো করা হয়।এদিন থেকেই মঠে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। আর সেই সময় থেকেই মঠ প্রাঙ্গণে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়।
পুজোর সব আয়োজন করতে বলেছিলেন স্বামীজি নিজেই। কিন্তু মহাষ্টমীর আগের দিন থেকেই প্রবল জ্বর।মণ্ডপে যেতে পারছেন না। শেষে অসুস্থ শরীরেই পুজো করেন। এদিকে সন্নাসীদের কোনও পুজা করা বা বৈদিক কাজের কোনও অধিকার নেই। তাই শ্রীশ্রীমার নামেই হল পুজোর সংকল্প। যা আজও হয়ে আসছে বেলুড়মঠে। স্বামীজির প্রবল ইচ্ছে ছিল পশুবলি করার কিন্তু মা সারদার আপত্তিতে তা বাদ দিতে হয়। সে জায়গায় চিনি ও মিষ্টান্নের নৈবেদ্যের ব্যবস্থা হয়। নিয়ম রক্ষা করতে সেই থেকে ফল বলি হয়ে আসছে।
মহাষ্টমীর কুমারীপুজোর নিয়ম আজও মানা হয়ে আসছে। অষ্টমীর সকালে কুমারীকে গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করিয়ে শুদ্ধ করে লাল বেনারসী শাড়ি পরানো হয়। ফুলের গয়না দিয়ে সাজানো হয়। পায়ে পরানো হয় আলতা। পুজো না হওয়া পর্যন্ত কুমারীকে উপোস করতে হয়। এরপর দেবী দুর্গার মূর্তির সামনে কুমারীকে বসিয়ে দেবীর হাতের একটি পদ্মফুল তার হাতে দিয়ে পুজো আরম্ভ করা হয়। আগে নয় কুমারীর প্রচলন থাকলেও এখন একজনকেই পুজো করা হয়। নবমীতে মা সারদা নিজে হাতে যজ্ঞ করেছিলেন এরপর ধীরে ধীরে মঠে লক্ষ্মীপূজা, শ্যামাপূজা সবকিছুই চালু করেন স্বামীজি।
একশো বছরের বেশি সময় ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে হয়ে আসছে বেলুড়মঠের দুর্গাপুজো। বেলুড় মঠের ভোগের আয়োজনে থাকে আলাদা আড়ম্বর। সারা পৃথিবী থেকে ভক্তেরা আসেন এই মহোৎসবে সামিল হতে। স্বামীজি বিশ্বকে জ্যান্ত দুর্গার পূজা দেখাতে চেয়েছিলেন তা তিনি করে দেখিয়েও ছিলেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম