।। প্রথম কলকাতা ।।
রাশিয়ার স্বপ্ন ভেঙে তছনছ, গোটা বিশ্বের ভরসা ভারতের চন্দ্রযান ৩। কক্ষপথ বদল থেকে সফট ল্যান্ডিং, বড় রিস্ক নিয়ে ফেলল ইসরো। চন্দ্রযান ২ যেখানে বিপদে পড়ে গেছিল, কেন সেখানেই চন্দ্রযান ৩ কে সফট ল্যান্ডিং করানোর ডিসিশন? কী আছে চাঁদের আন্টার্কটিকায়? চাঁদে মণিমুক্তো খুঁজে পাবে চন্দ্রযান ৩? লুনা ২৫ ভারতের জন্য শিক্ষা, তারপরই সিদ্ধান্ত বদল ইসরোর। গতিবেগ কন্ট্রোল করাই বড় চ্যালেঞ্জ। ল্যান্ডারের ঘাড়ে বিশাল দায়িত্ব। হ্যাজার্ডসের জন্য ঝুঁকিহীন জায়গা বাছাই কঠিন হবে। কনফিডেন্সের উপর ভর করে ২৩-এ ইতিহাস গড়বে ভারতবর্ষ।
রাশিয়া যা পারেনি ভারত তা করে দেখাতে জান প্রাণ লড়িয়ে দিচ্ছে। যখন রাশিয়ার স্বপ্ন ভেঙে খান খান, তখন ভারত স্বপ্নপূরণের পথে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল। ৪ বছর আগের ভুল করবে না ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফট ল্যান্ডিং কতটা রিস্কের, সেটা কিন্তু ইসরো জানে। তারপরেও ওই নিকষ কালো অন্ধকারেই চন্দ্রযান ৩ কে সফট ল্যান্ডিং করানোর ডিসিশন। হ্যাঁ এখানে আলো কম, ছায়া বেশি, খনিজ পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। তাছাড়া আগের তুলনায় চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডিং জোনকে আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অবতরণ-এর সিদ্ধান্ত নেবে ল্যান্ডার বিক্রম। যদি কোনও বাধা বিপত্তি আসে, সেক্ষেত্রে তখনই চন্দ্রযান ৩ কে ল্যান্ড করতে হবে। অলরেডি লুনা ২৫ এর আছড়ে পড়া থেকে শিক্ষা নিয়েছে ভারত। তাই শেষ মূহুর্তে “স্লো বাট স্টেডি উইনস দ্য রেস” নীতিতে চলছে ইসরো।
শেষ ল্যাপে চাঁদের কক্ষপথে ডি-বুস্টিং করা হয়েছে চন্দ্রযান ৩ এর। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ঝুঁকি এড়াতেই ১৯ মিনিট পিছোনো হয়েছে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডিং। ২৩ অগাস্ট পৌনে ৬টা নয়, আরও ১৯ মিনিট পিছিয়ে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে শিডিউল করা হয়েছে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডিংয়ের সময়। আসলে, গতিবেগ কমানোই এখন ইসরোর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবতরণের সময় চন্দ্রযানের গতিবেগ হতে হবে সেকেন্ডে ২ মিটারের কম। সমান্তরাল গতিবেগ হবে সেকেন্ডে হাফ মিটারের কম। অলরেডি অবতরণের জায়গার একাধিক ছবি আগেই পাঠিয়েছে চন্দ্রযান। সেই সব ছবি বিশ্লেষণ করেই বাছা হবে ল্যান্ডিং এর জন্য ঝুঁকিহীন জায়গা। নামার জায়গাটা কতটা ঝুঁকিহীন সেটা দেখবে হ্যাজার্ডস ক্যামেরা। চন্দ্রযান ২ এর ফেইলিয়ার ভুলে চন্দ্রযান-৩ পা রাখবে চাঁদের মাটিতে।
রবিবার রুশ ল্যান্ডার লুনা-২৫ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করেছে ইসরো। প্রতিটি পদক্ষেপ অতি সন্তর্পণে ফেলতে চাইছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ভারত। ২৩ তারিখ সন্ধ্যায় যে মূহুর্তে চাঁদে নামবে চন্দ্রযান-৩ সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত লাইভে দেখার সুযোগ থাকছে ১৪০ কোটি নাগরিকের কাছে। চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণের লাইভ স্ট্রিমিং হবে একাধিক প্ল্যাটফর্মে। ওইদিন বিকেল ৫টা বেজে ২৭ মিনিট থেকে শুরু হবে লাইভ সম্প্রচার। ইসরোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট isro.gov.in, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ এবং ডিডি ন্যাশনাল চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হবে চন্দ্রযান ৩-এর সফট ল্যান্ডিং। ব্যর্থতার জায়গা থেকেই সফল হতে চাইছে ইসরো। এবার শুধু চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখার অপেক্ষা। আর, ২০১৯ এর রিপিটেশন না ঘটুক, মনে মনে এটাই প্রার্থনা ভারত বাসির।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম